এসএসকেএমে বেড প্রস্তুত, পুরো বিল না মেটানোয় রোগীকে ছাড়ল না অ্যাপোলো, রাতে মৃত্যু
সিটি স্ক্যানের নাম করে রোগীকে ঢুকিয়ে দেওয়া হল ভেন্টিলেশনে। বিলের অঙ্ক বাড়ানোর সেই চেনা কৌশল। এখানেই শেষ নয়, বিল না মোটানোয় রোগীকেও আটকে রাখা হল।
কলকাতা, ২৪ ফেব্রুয়ারি : সিটি স্ক্যানের নাম করে রোগীকে ঢুকিয়ে দেওয়া হল ভেন্টিলেশনে। বিলের অঙ্ক বাড়ানোর সেই চেনা কৌশল। এখানেই শেষ নয়, বিল না মোটানোয় রোগীকেও আটকে রাখা হল। তার জেরে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হল রোগীর। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও নেই নির্দয় বেসরকারি হাসপাতাল। ফের কলকাতার বুকে অমানবিকতার নিদর্শন রাখল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেকায়দায় পড়ে এখন মুখে কুলুপ এঁটেছে কর্তৃপক্ষ। বলছেন, যা বলার মিডিয়া সেল বলবে।[রাজ্য সরকারের তরফে যে অভিযোগগুলি তোলা হয় নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে]
গত ৬ ফেব্রুয়ারি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে কলকাতার 'অ্যাপোলো' হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ডানকুনির সঞ্জয় রায়। অভিযোগ, প্রথমেই সিটি স্ক্যানের নাম করে তাঁকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে। তারপর পেটে জল জমার জন্য অপারেশন, ফুসফুসে জল জমা, এরকম ননা বাহানায় ছ'দিনে বিল বাড়িয়ে নেওয়া হয় ৭ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা। এত টাকার বিল দেখেই মাথায় হাত পরিবারের। ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা নগদে মিটিয়ে দেয় রোগীর পরিবার।[মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করা যাবে না, নার্সিংহোম কর্তাদের কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর]
কিন্তু তা সত্ত্বেও রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার জন্য ছাড়া হয়নি। বলাস হয় পুরো টাকা না মেটালে ছাড়া যাবে না। শেষপর্যন্ত অন্তত অর্ধেক টাকা মেটাতে বলা হয়। রোগীর বাড়ির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল, রোগীকে অন্তত ছেড়ে দিন, টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসএসকেএমে বেড পাওয়া যায়। কিন্তু বেড ফাঁকা, রোগী নেই। হাসপাতাল থেকে বারবার তদ্বর করা হয় রোগী আনার জন্য।[হাসপাতালে ব্যবসা বরদাস্ত নয়, পরিষেবাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে]
শেষপর্যন্ত চেক ও ফিক্সড ডিপোজিটের সার্টিফিকেট জমা দিয়ে রোগীকে ডিসচার্জ করিয়ে এনে ভর্তি করা হয় এসএসকেএমে। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। দাবি, আগে ছাড়লে হয়তো সঠিক চিকিৎসার সময় মিলত, তা হল না বেসরকারি হাসপাতালের বিল-দৌরাত্ম্যে আবার একটা প্রাণ চলে গেল।[২২ বছর পর শরীরে বিঁধে থাকা ছুঁচ বেরল কেরলের যুবকের!]
মাত্র দু'দিন আগে রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। মুখ্যমন্ত্রীর এক একটা প্রশ্নবাণের কোনও জবাব ছিল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। তবু ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেই একই ধারা বলবৎ বেসরকারি হাসপাতালে। মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছিলেন, সব থেকে বেশি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন অ্যাপেলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে। আবারও সেই অ্যাপেলো হাসপাতালের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পুরো টাকা না মেটানোর রোগীকে আটকে রাখার। অহেতুক বিল বাড়ানোরও অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।