টোলপ্লাজায়া সেনা মোতায়েন বিতর্ক : ‘ব্যথিত’ পার্রিকরের চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে
রাজ্যের তরফে যেভাবে এই সমীক্ষার বিরোধিতা ও সেনাদের সমালোচনা করা হয়েছে, তাতে সেনাদের মানসিক দৃঢ়তা নষ্ট হতে পারে। সেনারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন। বললেন মনোহর পার্রিকর।
কলকাতা, ৯ ডিসেম্বর : রাজ্যে সেনা মোতায়েন নিয়ে বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অযথা সমালোচনায় ব্যথিত প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পার্রিকর। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সেই কথা ব্যক্ত করলেন। পাশাপাশি তাঁর অভিমত, রাজ্যের তরফে যেভাবে এই সমীক্ষার বিরোধিতা ও সেনাদের সমালোচনা করা হয়েছে, তাতে সেনাদের মানসিক দৃঢ়তা নষ্ট হতে পারে। সেনারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন। এই চিঠির জবাব চিঠিতেই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পার্রিকর চিঠিতে উল্লেখ করেন, টোলপ্লাজায় সেনারা রুটিন সমীক্ষা চালান। এটা প্রতিবছরই করা হয়। এবারও তা হয়েছে। কিন্তু সেই সাধারণ বিষয়কে নিয়ে অযথা জলঘোলা করা হয়েছে। টোলপ্লাজায় সেনাদের তল্লাশি চালানোর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।
উল্লেখ্য, রাজ্যে সেনা নামানোর প্রতিবাদে কেন্দ্রের কঠোর সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী নবান্নে রাত পাহার দেন তিনি নিজে। পরদিন রাজ্যসভা ও লোকসভায় এই সেনা ইস্যুতে ঝড় ওঠে। রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করে পেনড্রাইভে ছবি তুলে পাঠানো হয়। টোলপ্লাজায় সেনা গাড়ি থেকে টাকা তুলছে বলে এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগও করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ছবিই তিনি পাঠান রাষ্ট্রপতিকে। এদিকে রাজ্যপালের কাছেও দরবার করেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা।
রাজভবনের সামনে ধরনায় বসেন তাঁরা। তারপরই রাজ্যপালের মন্তব্যে ঘৃতাহুতি পড়ে এই সেনা মোতায়েনের বিষয়ে। সেনাদের বিরুদ্ধে গাড়ি থেকে টাকা তোলার অভিযোগ ওঠায় সেনাদের পাশে দাঁড়ান রাজ্যপাল। নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, কোনও দায়িত্বশীল সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তোলার আগে কোনও দায়িত্বশীল নাগিরেক ভালো করে খতিয়ে দেখা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী তার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, রাজ্যপালেরও উচিত সব দিক খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করা। রাজ্যপাল কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন বলেও অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর বিষয়টি সাময়িকভাবে থিতিয়ে গেলেও, এদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর চিঠিতে তা আবার জেগে উঠল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পরিক্কর খুব শালীনভাষায় মুখ্যমন্ত্রীর সেনা বিতর্ক উত্থাপনের সমালোচনা করেন। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মনোভাবও স্পষ্ট করে দেন তিনি। এখন চিঠি দিয়েই এই সেনা বিতর্কের জবাব দেবে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী কী যুক্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের মনোভাবের উত্তর দেন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।