দুর্ঘটনার তত্ত্ব না মেনে আবেশের পরিবার সোজা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে
কলকাতা, ২৯ জুলাই : আবেশ দাশগুপ্তর মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রথম থেকেই টানাপোড়েন চলছিল পরিবারের সঙ্গে পুলিশের। পরিবারের প্রথম থেকেই দাবি ছিল, দুর্ঘটনা নয়, খুনই করা হয়েছে আবেশকে। অন্যদিকে, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের মনে হয়েছিল সম্ভবত দুর্ঘটনার জেরেই মৃত্যু হয়েছে আবেশের। [আবেশের মৃত্যু নিয়ে ধন্ধ রয়েই যাচ্ছে, ৩টি প্রশ্নের উত্তর চায় পরিবার!]
পরিবারের চাপে হোক অথবা সংবাদমাধ্যমের কড়া নজর থাকায়, কলকাতা পুলিশ বেশ কয়েকদিন তদন্ত চালিয়েছে। বালিগঞ্জের সানি পার্কের বাড়ির পার্কিং এলাকা, সিসিটিভি ফুটেজ ইত্যাদি খতিয়ে দেখে, বন্ধুদের জেরা করে, মোবাইল খতিয়ে দেখে পুলিশের মনে হচ্ছে দুর্ঘটনাই সম্ভবত আবেশের মৃত্যুর কারণ। [খুনের তত্ত্ব উড়িয়ে আবেশের রহস্যমৃত্যুকে দুর্ঘটনাই বলছে পুলিশ]
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান বিশাল গর্গ জানিয়েছেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বগলে মদের বোতল নিয়ে হাঁটতে গিয়ে একটি পাঁচিল টপকাতে যায় আবেশ। তখনই ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
তবে আবেশের মা তথা পরিবার এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। আবেশকে খুন করা হয়েছে, এই তত্ত্বেই তারা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এজন্য এদিন তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে এসেছেন। তাদের দাবি গোটা ঘটনায় মিসিং লিঙ্ক রয়েছে। আর তার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে আবেশের মৃত্যুর আসল কারণ।
পরিবারের দাবি, আবেশ মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরের ২০ সেকেন্ড সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেল না কেন? এবিষয়ে কেন পুলিশ উদ্যোগ নিল না। পুলিশের দাবি, পড়ে গিয়ে কাঁচের বোতল আবেশের বগলে ঢুকে ধমনী কেটে দেয়। যার জেরে প্রচণ্ড রক্তপাত শুরু হয়। এবং কিছুটা দূরে গিয়ে আবেশ রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে। এবং কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যায়।
এক্ষেত্রে পরিবারের দাবি, যদি তাই হবে, তাহলে উপস্থিত বন্ধুরা আবেশকে বাঁচানোর চেষ্টা করল না কেন? কেন সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি ডেকে আবেশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল না? তা না করে এক বন্ধু আর দুজনকে সঙ্গে নিয়ে কেন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে চলে গেল? এমন হাজারো প্রশ্ন আবেশের পরিবারের রয়েছে। এবং সেসব জানাতেই এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
এদিন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী কাছে বিষয়টি তুলে ধরে আবেশের মা, দিদা ও পরিবারের অন্যান্যরা। সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী তাদের সঠিক সত্য উদ্ঘাটন করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উপরে তাদের ভরসা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবেশের পরিবারের লোকজন।