বড়বাজারের বহুতল জতুগৃহের মতো জ্বলছে, ভেঙে পড়েছে ছাদ-সিঁড়ি
পুরো রাত গড়িয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে এল না বড়বাজারের বহুতলে। শতাব্দী প্রাচীন বিল্ডিং দাউ দাউ করে জ্বলছে। দমকলের ৩৫টি ইঞ্জিন কাজ করে চলেছে নিরন্তর।
কলকাতা, ২৮ ফেব্রুয়ারি : পুরো রাত গড়িয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে এল না বড়বাজারের বহুতলে। শতাব্দী প্রাচীন বিল্ডিং দাউ দাউ করে জ্বলছে। দমকলের ৩৫টি ইঞ্জিন আটটি পয়েন্ট থেকে অনবরত জল থ্রো করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ। তবে আগুন অ্যারেস্ট করা সম্ভব হয়েছে। আগুন পার্শ্ববর্তী এলাকায় আর ছড়াতে পারছে না।[বড়বাজারে বহুতলে আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন]
এদিকে আগুনের লেলিহান শিখায় ভেঙে পড়েছে বহুতলের একাংশ। কড়িকাঠের ছাদ হওয়ায় ছাদ পুরোপুরি ধসে পড়েছে। শুধু দাঁড়িয়ে রয়েছে দেওয়াল। এই বাড়িতে সিঁড়িও ছিল কাঠের। তাও পুড়ে ছাই। দমকলের পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে পুরো বাড়িই ভেঙে পড়তে পারে। সেইমতো সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে আগুনের উৎস খুঁজে না পাওয়ায় আগুন নেভানো সম্ভব হচ্ছে না। এতটাই বিধ্বংসী আগুন যে, বাড়ির ভিতরে ঢুকতে পারছেন না দমকলকর্মীরা। আগুন নেভাতে গিয়ে দমকলের কয়েকজন কর্মী অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। আগুন বিধ্বংসী রূপ নিয়েও হতাহতের কোনও খবর নেই। সকলকেই নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে।
এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ফলে রবীন্দ্র সরণী, মহাত্মা গান্ধী রোড, ক্যানিং স্ট্রিটে যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ফলে মঙ্গলবার অফিস টাইমে ভোগান্তির সম্ভাবনা প্রবল। পুলিশ কীভাবে এই যানজট সামলায়, তা একটা মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। ওই রাস্তাগুলি এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয় বলে বার্তা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
দমকল সূত্র জানানো হয়েছে, এই শতাব্দী প্রাচীন বিল্ডিংয়ে কোনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। ফলে আগুন নেভাতে খুব সমস্যা হয়। তার উপর ঘিঞ্জি এলাকা। গলি রাস্তায় কোনও দমকল ইঞ্জিন ঢুকতে পারেনি। বহুদূর থেকে পাইপ নিয়ে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে দমকল কর্মীদের।
গভীর রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থলে ছিলেন দমকলমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি দমকলের কাজে তদারকি করেন। তাঁর কথায়, জতুগৃহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার সময় এসেছে পদক্ষেপ নেওয়ার। তবে সবার আগে আগুন নেভাতে হবে। সেই লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন দমকল কর্মীরা।
মোট আটটি পয়েন্ট থেকে দল থ্রো করা হচ্ছে। কিন্তু এত দাহ্য বস্তু, গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করা ছিল যে আগুন বিধ্বংসী রূপে জ্বলছে। ভিতরে ঢুকতে পারছেন না দমকল কর্মীরা। বিভিন্ন পাম্প খুলে দেওয়া হয়েছে। সেইখান থেকেই জলের জোগান আসছে বলে জানান দমকল মন্ত্রী।