রাজ্যের ন’টি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে ছ’দিনে জমা ৪০০ কোটি টাকা, নজরে ৬-৭ হাজার অ্যাকাউন্ট
রাজ্যের ন’টি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে মাত্র ছ’দিনে ৪০০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। ৯ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এই টাকা রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়ে। আর তাতেই চক্ষু চরকগাছ তদন্তকারীদের
কলকাতা, ২১ ডিসেম্বর : রাজ্যের ন'টি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে মাত্র ছ'দিনে ৪০০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। ৯ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এই টাকা রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়ে। আর তাতেই চক্ষু চরকগাছ তদন্তকারীদের। প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এখন আতস কাচের নীচে। কেওয়াইসি ছাড়াই ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে ওই টাআক জমা পড়ে বলে তদন্তকারী সংস্থা নাবার্ডের অভিযোগ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ওইসব অ্যাকাউন্টগুলি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশে নাবার্ড সমবায় ব্যাঙ্কে বিপুল অঙ্কের টাকা জমা পড়ার ঘটনায় তদন্তে নামে। গত ৮ নভেম্বর টাকা বাতিলের পর ৯ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সমবায় বাঙ্কে বিপুল অঙ্কের টাকা জমা পড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ পাওয়ার পরও রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্ক গুলিতে পুরনো নোট জমা নেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সেই থেকে আর পুরনো নোট জমা নেওয়া হত না সমবায় ব্যাঙ্কে।
কিন্তু মাত্র ছ'দিনে রাজ্যের ন'টি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে ওই পরিমাণ টাকা জমা পড়ল কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে পড়ে। সেই তদন্তেই ব্রতী হয় নাবার্ড। নাবার্ড তথ্য ঘেঁটে ওই বিপুল পরিমাণ টাকার হদিশ পায়। সেইসঙ্গে ৬-৭ হাজার সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টেরও হদিশ পান তদন্তকারী অফিসাররা। তদন্তকারীদের দাবি, ওইগুলি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। কালো টাকা সাদা করতেই ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে নাবার্ড।
সিপিএমের পক্ষ থেকে শমীক লাহিড়ী জানিয়েছেন, আমরা আগেই তদন্ত দাবি করেছিলাম। সমবায় ব্যাঙ্কে টাকা জমা পড়ের ব্যাপারে কোনও দুর্নীতি রয়েছে বলে তাঁর দাবি। বিজেপি নেতা শমীক ঘোষ বলেন, রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলি দুর্নীতির আখড়া। তাই নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়াই কাম্য। তবে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ওই ৪০০ কোটি কালো টাকা নাকি জেনুইন টাকা তা খতিয়ে দেখা উচিত সর্বাগ্রে। কেননা সমবায় ব্যাঙ্কের অধীনে গ্রামাঞ্চলে বহু সমবায় সমিতি রয়েছে। সাধারণ মানুষ দূরের ব্যাঙ্কে না গিয়ে ওই সমবায়ের মাধ্যমে লেনদেন করে।
এক্ষেত্রে গ্রামের মানুষ তাঁদের অর্জিত টাকা সমবায়ে জমা করতেই পারে। সেক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ বড় অঙ্কের হওয়াটা অন্যায় নয়। তাই সবার আগে খতিয়ে দেখা হোক ওটা আসলে কালো টাকা কি না। অবশ্যই তদন্ত জরুরি। তৃণমূলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, অহেতুক সাধারণ মানুষের টাকা জমা দেওয়ার অধিকার হরণ করা হয়েছে সমবায়গুলি থেকে।