পাথুরিয়াঘাটায় ভেঙে পড়ল 'বিপজ্জনক' তিনতলা বাড়ি, মৃত ২
কলকাতা, ১৪ সেপ্টেম্বর : 'বিপজ্জনক' আর্জি জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বহু পুরনো তিনতলা বাড়ি। বাড়ি চাপা পড়ে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটায় এই ঘটনা ঘটে।
বাড়ি চাপা পড়ার পর ফোন করে আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষা পান কয়েকজন। খোদ কলকাতায় বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে মৃত্যুর পরই আইন বদলের ভাবনা শুরু করে দিয়েছে পুরসভা।
ওই 'বিপজ্জনক' বাড়ির বাসিন্দারা আশঙ্কাতেই ছিলেন, যে কোনওদিন ভেঙে পড়তে পারে বাড়িটি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি নামতেই তাঁরা ছুটেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের কাছে। চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছিলেন, বাড়িটি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। যে কোনও সময় কিছু ঘটে যেতে পারে। রাতেই পুরকর্মীদের নিয়ে বাড়িটিতে পর্যবেক্ষণে আসেন কাউন্সিলর। আর তার খানিক পরেই হগুমুড়িয়ে ভেঙে পড়ে পুরনো বাড়িটি।
জানা গিয়েছে, সেইসময়ে ২০-২২ জন লোক বাড়িটির মধ্যে আটকে পড়েন। দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ও পুর কর্মীরা গিয়ে শুরু করেন উদ্ধারকাজ। আগে থেকেই বাড়ির সামনের অংশে যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের কেউ কেউ বাড়ির পিছনের দিকে চলে গিয়েছিলেন বলে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। অনেকেই আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন আগেই। তবে ধবংসস্তূপ সরানোর সময় দু'জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
এদিন বাড়িটি ভেঙে পড়ার পর পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্যারিকেড তৈরি করে পে লোডার দিয়ে চালানো হয় উদ্ধারকাজ। বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেয়র শোভন চট্টেপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমাকে চিঠি লেখার কিছুক্ষণের মধ্যে ভেঙে পড়ে বাড়িটি। দুর্ভাগ্যজনক যে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে দুর্ঘটনা ঘটে গেল। গোটা বাড়িটা ভেঙে ফেলা হবে। এমনকী আইনে বদল আনার ভাবনাও শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন মেয়র। কলকাতায় এমন পুরনো বাড়ি অনেক রয়েছে। পুরসভা বিপজ্জনক বাড়ি বলে সতর্ক করে, বাড়ি ভেঙে দিতে বলেই ক্ষান্ত হয়। কিন্তু, বিপদ মাথায় নিয়েই সে সব বাড়িতে অনেকে বসবাস করে চলেছেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে এবার পদক্ষেপ নিতে চলেছে পুরসভা।
মেয়র আরও বলেন, বিপজ্জনক বাড়ি বলে বোর্ড লাগানো হয়। বাড়িওয়ালা বাড়ির মেরামতি করে না। ভাড়াটিয়া কম ভাড়ায় থাকতে পারে বলে বাড়ি ছাড়তেও চায় না। এই ব্যবস্থায় পরিবর্তন দরকার। শীঘ্রই এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবারই এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে।