For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

কোন গান বা সুর মাথায় গেঁথে যায় কেন?

প্রায় সময় কোন গান শুনলে সেটা আর মগজ থেকে বেরোতে চায় না। সারাদিন নিজের অজান্তেই আপনি গুনগুন করতেই থাকেন। এমনটা কেন হয়? এ থেকে পরিত্রাণের সবচেয়ে ভাল উপায় কি?

  • By Bbc Bengali

একটি চীনা শিশু ট্রাম্পেট বাজাচ্ছে।
Getty Images
একটি চীনা শিশু ট্রাম্পেট বাজাচ্ছে।

প্রত্যেকের জীবনে প্রায়শই এমনটা হয় যে, তারা হয়তো কোন গান শুনেছেন, আর সারাদিন সেটা তাদের কানে বাজছে। সারাদিন নিজের অজান্তেই আপনি সেই গানটা গুনগুন করে গাইতেই থাকেন। সেটা আর মগজ থেকে বেরোতে চায় না।

এমন ঘটনা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রেই হয়। কোন একটি গান হয়তো শোনার সাথে সাথেই সেটা স্মৃতিতে গেঁথে যায়।

এই গানের ধুন বা সুর এতোটাই আকর্ষণীয় যে কখন ওই গানটা মুখে ফুটে বেরিয়ে আসে সেটা আপনি খেয়ালও করেন না।

কয়েক-ঘণ্টা অবধি, আবার অনেকের ক্ষেত্রে সারাদিন জুড়ে ওই গানটি মাথায় বাজতেই থাকে। বারবার ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেও যেন লাভ হয় না।

এর মানে, আপনি কানের পোকার শিকার হয়েছেন। এই পোকা বলতে কোন পরজীবীকে বোঝায়-নি, বরং ইঙ্গিত করেছে সেইসব আকর্ষণীয় গান বা সুরকে, যেগুলো একবার শুনতেই মগজে গেঁথে যায়।

কেন এই গানগুলো আমাদের এতোটা প্রভাবিত করে? এবং তার চাইতেও জরুরি, এই কানের পোকা তাড়ানোর সেরা উপায় কি?

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিষয়ক মনরোগ বিশেষজ্ঞ লরেন স্টুয়ার্ট এমনই কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

সংগীত শিল্পী লেডি গাগা। কাল রঙের অদ্ভুত এক পোশাক ও মাস্ক পরে মঞ্চে আসেন।
Getty Images
সংগীত শিল্পী লেডি গাগা। কাল রঙের অদ্ভুত এক পোশাক ও মাস্ক পরে মঞ্চে আসেন।

১. কানের পোকা কেন হয়?

যেসব গানের মেলোডি বা সুরের গঠন খুব সহজ-সরল, অর্থাৎ যে গানগুলোর তাল-লয় অথবা সুরের উত্থান-পতনের একটি সাধারণ প্যাটার্ন থাকে, সেগুলো আমাদের মস্তিষ্ক সহজেই গেঁথে নেয়।

এই বিষয়টিকে সংগীতের ভাষায় বলা হয় "মেলোডিক আর্কস"। অর্থাৎ একটা সুরের বৃত্তে বাঁধা পড়া।

শিশুদের নার্সারি রাইম বা ছড়া গানগুলো মেলোডিক আর্কসের একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে।

যেমন "টুইঙ্কল, টুইঙ্কল, লিটল স্টার", এই রাইমটি ছেলে বুড়ো সবারই মনে আছে। কারণ এর সুরের গাঁথুনি খুব সাবলীল।

একইভাবে বিভিন্ন পপ গান বা পুরনো কোন ক্লাসিক্যাল গান এই মেলোডিক আর্কসের বৈশিষ্ট্যযুক্ত হতে পারে।

আরো পড়তে পারেন:

বাংলাদেশকে কী দিয়ে গেলেন ব্যান্ড গানের আইয়ুব বাচ্চু?

'হাজির বিরিয়ানি’ গানটি নিয়ে যতরকম বিতর্ক

বাচ্চাকে জিনিয়াস হিসাবে গড়ে তুলতে চান? জানুন কীভাবে

আবার যে গানগুলোর সুরের উত্থান পতন বা মেলোডি লিপস অস্বাভাবিক বা অপ্রত্যাশিত সেগুলোও কানের পোকা হওয়ার আরেকটি বড় কারণ।

এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে টানা যেতে পারে লেডি গাগার "ব্যাড রোমান্স" গানটিকে।

রুপালি জামা ও ইউনিকর্ন টুপি পরে পারফর্ম করেছেন সংগীত শিল্পী কেটি পেরি।
Getty Images
রুপালি জামা ও ইউনিকর্ন টুপি পরে পারফর্ম করেছেন সংগীত শিল্পী কেটি পেরি।

২. কোন গানগুলো আমাদের মগজে আটকে যায়?

সম্প্রতি প্রকাশিত অথবা যে গানটি বারবার আলোচনায় আসছে সেটা মাথায় আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

এবং যারা গান করেন এবং শোনেন তাদের কানের পোকার শিকার হওয়ার আশঙ্কা অন্যান্যদের চাইতে অনেক বেশি।

কিন্তু কোন ধরনের গান এক পর্যায়ে আপনার বিরক্তির কারণ হতে পারে?

নিচে এমন কিছু ইংরেজি গানের তালিকা দেয়া হল, যেগুলো শুনলে কানের পোকা হামলা চালাতে পারে।

গোল্ডস্মিথ এবং ডুরহম বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌজন্যে এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে।

গানগুলো শোনার আগেই সতর্ক করছি যে, এগুলোর সুর আসলেও ভীষণ আকর্ষণীয়!

  • ব্যাড রোমান্স- লেডি গাগা
  • কান্ট গেট আউট অব মাই হেড-কাইলি মিনো
  • ডোন্ট স্টপ বিলিভিং-জার্নি
  • সামবডি আই ইউজড টু নো-গোটি
  • মুভস লাইক জ্যাগার- ম্যারুন ফাইভ
  • ক্যালিফোর্নিয়া গার্লস-কেটি পেরি
  • বোহেমিয়ান রাপসোডি-কুইন

মস্তিষ্কের এক্স রে রিপোর্ট।
Getty Images
মস্তিষ্কের এক্স রে রিপোর্ট।

৩.আপনি কিভাবে কানের পোকা থেকে মুক্তি পাবেন?

কানের পোকা থেকে পরিত্রাণের সবচেয়ে ভাল উপায় হল নিজেকে বিভ্রান্ত করা। অর্থাৎ আপনার মনোযোগ অন্য কোন দিকে সরিয়ে নেয়া।

তবে এটা বলা যতোটা সহজ করা ততোটা সহজ না।

যদিও বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে সহজ সমাধান বের করতে কঠোর পরিশ্রম করছেন।

এরই মধ্যে গবেষকরাও খুঁজে পেয়েছেন, মনোযোগ সরিয়ে নেয়ার এমন নানা কৌশল:

  • রেডিওতে মানুষের কথাবার্তা অথবা নিরাময়কারী সুর শুনলে এই কানের পোকা সহজেই বেরিয়ে যাবে।

নিরাময় সুর বা কিওর টিউনস বলতে এমন কোন গানকে বোঝায় যেটা শুনলে আগের গানটি মাথা থেকে সহজেই বিদায় নেবে। এক কথায় কানের পোকা তাড়িয়ে দেবে, আবার নিজেও গেঁথে যাবে না।

তবে কিওর টিউনস বলতে কিওর ব্যান্ডের গান শুনতে যাবেন না আবার।

তাহলে কিওর টিউনস কোনগুলো? এক্ষেত্রে অনেক গানই কিওর টিউনসের কাজ করতে পারে।

এরমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিকল্প হতে পারে যার যার দেশের জাতীয় সংগীত শোনা।

  • কানের পোকা তাড়ানোর চেষ্টা বাদ দিন। বরং যে গানটি আটকে আছে, সেটাই বার বার বাজাতে থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত না গানটি আপনার মাথা থেকে বিদায় হয়।
  • চুইংগাম চাবাতে থাকুন। এটাকে ঘরোয়া সমাধানের মতো মনে হলেও, চুইংগাম চাবানো সম্ভবত কানের পোকা দূর করার সবচেয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়।

এবং এটা নিয়ে চিকিৎসা শাস্ত্রে পড়াশোনাও হয়েছে।

কোন কিছু চাবানোর সময় মুখ এবং চোয়ালের অঙ্গগুলো একসঙ্গে কাজ করে।

বিজ্ঞানীদের মতে, যেটা কিনা মস্তিষ্কের প্রি মোটর এরিয়াতেও প্রভাব ফেলে। প্রি মোটর এরিয়া হল, মস্তিষ্কের যে অংশটা দিয়ে আমরা কোন কাজের পরিকল্পনা করি। মুখ ও চোয়ালের সঙ্গে মস্তিষ্কের এই অংশটির সম্পর্ক রয়েছে।

এ কারণে আমাদের মাথায় যখন কোন গান ঘুরপাক খায় তখন স্বাভাবিকভাবে সেটা আমাদের মুখে গুনগুন সুরে বেজে ওঠে।

অর্থাৎ চুইংগাম চাবানোর মাধ্যমে আপনি মুখ ও চোয়ালকে অন্য একটি কাজে ব্যস্ত রাখছেন। এতে মস্তিষ্কের সেই স্বাভাবিক অনুশীলন প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি হয়।

আর এই বাধার কারণে কানের পোকা গায়েব হয়ে যায় সহজেই।

আন্দিজ পর্বত এবং পপ সংগীত দল বনি এম।
Getty Images
আন্দিজ পর্বত এবং পপ সংগীত দল বনি এম।

৪. কানের পোকা কি প্রয়োজনীয় হতে পারে?

আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে লাখ লাখ সুর সুরক্ষিত রয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকটি সুর আমাদের নির্যাতন করতে ফিরে আসে।

কিন্তু সঙ্গীত যদি মস্তিষ্কের সনিক স্ক্রিন সেভার হতো?

ডাক্তার লরেন স্টুয়ার্ট বলেছেন যে যদি আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে একটি সুর বার বার মনে করি। তাহলে আমাদের মস্তিষ্ক হয়তো আমাদেরকে ধাক্কা দিতেই এমনটা করছে।

এবং আমাদের চেতনার মাত্রা কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত উদ্দীপনা সরবরাহ করতেই হয়তো মস্তিষ্ক গানের ধাক্কায় আমাদের জাগিয়ে রাখছে।

এই কানের পোকা কি আপনার জীবন বাঁচাতে পারে?

এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ যেতে পারে: বহু আগে পেরুর আন্দিজ পর্বতমালা আরোহণের সময় বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটে। পর্বতারোহী জো সিম্পসন ছিলেন সেই অভিযাত্রীদের একজন।

দুর্ঘটনায় তার সঙ্গীরা মারা গেলেও, ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। এবং নিজেকে জীবিত রাখতে তাকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে।

ভাঙা পা নিয়ে ভীষণ ঠাণ্ডার মধ্যে তাকে কেউ উদ্ধার করবে, এমন সম্ভাবনা ছিল ক্ষীণ। নিরুপায় আর হতাশ হয়ে পড়েছিলেন মিস্টার সিম্পসন।

এক পর্যায়ে তার চেতনা ওলট পালট কাজ করতে থাকে। কখনও তিনি সচেতন ছিলেন, কখনো বা অচেতন।

তবে এ কারণেই কষ্ট তুলনামূলক কম হয়েছিল বলে তার ধারণা।

আরও পড়তে পারেন:

বাংলাদেশকে কী দিয়ে গেলেন ব্যান্ড গানের আইয়ুব বাচ্চু?

'হাজির বিরিয়ানি’ গানটি নিয়ে যতরকম বিতর্ক

রাস্তা চেনার বা মনে রাখার আটটি টিপস

সে সময় তার মাথায় ১৯৭০ দশকের একটা বিরক্তিকর সুর ঘুরপাক খেতে থাকে। সেটা হল জার্মান ব্যান্ড বনি এমের গান, "ব্রাউন গার্ল ইন রিং" গানটি

মিস্টার সিম্পসন সেইদিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন,

"এটা মাথার ভেতরে চলতেই থাকে। কয়েক ঘণ্টা ধরে মাথার ভেতর বাজছিল গানটি। আমি খুব বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমি ভাবছিলাম, ধুচ্ছাই শেষমেশ কিনা বনি এমের গান শুনে মরতে হবে!'"

কিন্তু মিস্টার সিম্পসন সেই যাত্রায় বেঁচে ফিরেছেন।

সেক্ষেত্রে অনেকটা সাহায্য করেছে তার এই কানের পোকা। কেননা এই বিরক্তিকর পোকাই তাকে জেগে থাকতে, এক কথায় বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে।

আরো পড়তে পারেন:

খাশোগজি হত্যার কথা স্বীকার করেছে সৌদি আরব

ভারতের অমৃতসরে ট্রেনের ধাক্কায় অন্তত ৬২ নিহত

দুই নারীর মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা ব্যর্থ করলো বিক্ষোভকারীরা

English summary
Why song or music is built on the head?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X