For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

জ্বালানি তেল: ধাপে ধাপে না বাড়িয়ে এক লাফে দাম কেন বাড়ানো হলো, কী বলছে বাংলাদেশ সরকার?

  • By Bbc Bengali

বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম একলাফে ৫১ শতাংশের বেশি বাড়ানো নিয়ে সমালোচনার জবাবে সরকার বলেছে, পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য একবারে তেলের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিবিসিকে বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম ধাপে ধাপে বৃদ্ধি করা হলে দ্রব্যমূল্যসহ মানুষের জীবনযাত্রার সবক্ষেত্রে তার প্রভাব বেশি পড়তো বলে তারা মনে করেন।

তবে ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলো বলছে, এক ধাপে বড় অঙ্কের দাম বৃদ্ধির কারণেই পরিস্থিতি বেশি অসহনীয় হয়েছে।

গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫১শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে এবছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে।

এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত ডিজেলের প্রতি ব্যারেলের দাম ১৭০ ডলার পর্যন্ত উঠেছিল, সে সময় বাংলাদেশে দাম বাড়ানো হয়নি।

কিন্তু যখন বিশ্ববাজারে দাম কমছে, তখন এক সাথে ব্যাপক ব্যবধানে দাম বাড়ানো হয়েছে। এনিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার।

তবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিশ্ববাজারের দাম কমতে শুরু করায় এখন সহনীয় মাত্রায় রেখে তারা দাম সমন্বয় করতে পেরেছেন।

শুক্রবার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসার পর পাম্পগুলোয় মানুষের ভিড় তৈরি হয়।
BBC
শুক্রবার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসার পর পাম্পগুলোয় মানুষের ভিড় তৈরি হয়।

কিন্তু দফায় দফায় বা বার বার দাম বাড়ানো হলে তাতে প্রতিক্রিয়া বেশি খারাপ হতো বলে তারা মনে করেন।

"ফেব্রুয়ারি মাসে যখন দাম অনেক বেশি ছিল, তখন যদি সমন্বয় করতাম তাহলে আমাদের প্রতি লিটারে ৬০ টাকা বাড়াতে হতো," মন্ত্রী বলেন।

তিনি বলেন পর্যায়ক্রমে দাম বাড়ালে প্রতিক্রিয়া আরো তীব্র হত।

"আমি যদি ধাপে ধাপে বাড়াতাম, তাহলে প্রতি মাসে লিটারে ১০ টাকা করে দাম বাড়াতে হতো। এতে আরও বেশি প্রতিক্রিয়া হতো," তিনি বলেন।

বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন:

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে এবছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে।
Getty Images
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে এবছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে।

ব্যবসায়ীদের ভিন্নমত

তেলের দাম এক লাফে বড় অঙ্কের বৃদ্ধির প্রভাবে পরিবহন ভাড়া বাড়াতে হয়েছে।

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসহ মানুষের জীবন যাত্রার সবক্ষেত্রেই খরচ বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতি ক্ষুব্ধ করেছে সাধারণ মানুষকে।

কিন্তু সরকারের পক্ষে যুক্তি হচ্ছে, যদি ধাপে ধাপে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হতো, তাহলে প্রতিবার খাদ্যদ্রব্যসহ সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হতো এবং পরিস্থিতি সহনীয় মাত্রায় রাখা সম্ভব হতো না।

সরকারের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে শিল্পপতি বা ব্যবসায়ীদের অনেকের।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কম

ব্যবসায়ীদের প্রধান সংগঠন এফবিসিসিআই এর পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ বলেছেন, ধাপে ধাপে বা পর্যায়ক্রমে তেলের দাম বাড়ানো হলে শিল্পপতি ব্যবসায়ী এমনকি সাধারণ মানুষের একটা প্রস্তুতি থাকতো এবং তখন পরিস্থিতি সবার জন্য সহনীয় হতো।

বিশ্লেষকরা পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করছেন ভিন্নভাবে। তারা বলেন, বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম অনেক বেশি ছিল, তখনও দাম না বাড়িয়ে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে।

এখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে এসেছে বা অর্থে টান পড়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের জন্য অর্থ প্রয়োজন।

টার্গেট কী রাজস্ব বাড়ানো

জ্বালানি তেলের দাম একধাপে বাড়ানোর পেছনে এসব বিষয়কে বড় কারণ হিসাবে দেখেন বিশ্লেষকরা।

জ্বালানি খাতের একজন বিশ্লেষক অরুণ কর্মকার বলেছেন, জ্বালানি খাত থেকে রাজস্ব বাড়ানো অন্যতম একটি টার্গেট বলে তার ধারণা।

" এই দাম বাড়িয়ে সরকার পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসিকে কিছু লাভ বা মুনাফা দিতে চাইছে। একই সাথে উদ্দেশ্য হচ্ছে সেখান থেকে সরকারেরও রাজস্ব কর আদায়টা বাড়ানো" বলেন মি. কর্মকার।

তিনি উল্লেখ করেন, জ্বালানি পণ্য থেকে সরকার ৩৫ শতাংশ কর পেয়ে থাকে। এখন দাম বাড়লে সরকারের এই আয় আরও বাড়বে।

দুই মাস তেল আমদানি

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিপিসির হাতে এখন ১৯ হাজার কোটি টাকা মজুদ আছে এবং এই টাকা দিয়ে দুই মাস তেল আমদানি করা যাবে। এরপর তেল আমদানির অর্থ নেই।

অরুণ কর্মকার মনে করেন, সরকারের এই তথ্য ঠিক হলেও তাদের শেষ মুহুর্তে জুলাই মাসের শেষে সেই হিসাব না করে অনেক আগেই তা বিবেচনা করা উচিত ছিল।

মি. কর্মকারের বক্তব্য হচ্ছে, এখন পেট্রল ও অকটেনের যে পরিমাণ দাম বাড়ানো হয়েছে, তাতে বিপিসির ৪৫ টাকার বেশি মুনাফা থাকবে।

শুধু ডিজেলে লিটার প্রতি আট টাকার মত ভর্তুকি দিতে হবে।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিশ্ববাজারের জ্বালানি তেলের দাম আরও কিছুটা কমলে দেশে আবারও দাম কমানো হবে।

বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:

English summary
Why fuel price has increased rapidly in Bangladesh
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X