For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

বাংলাদেশে নিখোঁজ ব্যক্তিরা ফেরার পর চুপ থাকেন কেন?

বাংলাদেশে গুম বা নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা কেউই পরিবারে ফিরে আসার পর মুখ খুলতে চান না। পুলিশও রহস্য উদ্ঘাটনে কার্যত ব্যর্থ বলেই অনেকে মনে করেন।

  • By Bbc Bengali

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষক, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ নিখোঁজ হচ্ছেন যারা গুমের শিকার বলে পরিচিত।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে ২০১৭ সালে এ পর্যন্ত ৫৫ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন যাদের মধ্যে মাত্র ৯ জন ফিরে এসেছেন। এছাড়া দুই জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে আর তিনজনকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।

গুম বা নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা যখন পরিবারে ফিরে আসেন তখন ওই ব্যক্তি কিংবা তার পরিবার কেউই মুখ খুলতে চান না। তাদের সঙ্গে কী ঘটেছিল, কারা ধরেছিল বা কোথায় রাখা হয়েছিল সে সম্পর্কে কোনো তথ্যই পাওয়া যায় না। পুলিশও এসব ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে বলেই অনেকে মনে করেন।

বিবিসির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে ফিরে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা এ প্রসঙ্গে কোনো কথাই বলতে রাজি হন নি। এমনকী কোনো প্রকার তথ্য চাইলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকেও সাড়া পাওয়া যায় না।

বাংলাদেশে নিখোঁজ ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে কিংবা গণমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা বিরল।

সম্প্রতি নিখোঁজ থাকার পর ফিরে আসা প্রথম কোনো ব্যক্তি হিসেবে লেখক ফরহাদ মজহার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন। অপহরণ এবং উদ্ধার হওয়ার ৫ মাসের মাথায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেছেন, উদ্ধার হওয়ার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই তিনি বক্তব্য দিয়েছেন।

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:

'পুলিশ কাউকে নিয়ে গেলে আত্মীয়দের জানাতে হবে’

নিখোঁজের পরিবার কতটা আইনী সহায়তা পাচ্ছে?

'অনেক মানুষকে গোপনে আটকে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী'

তাসনিম খলিল
BBC
তাসনিম খলিল

অবশ্য এমন একটি সময়ে ফরহাদ মজহার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন যখন তার অপহরণের কাহিনি সাজানো বলে বর্ণনা করে পুলিশ মামলা করতে যাচ্ছে।

বিতর্ক এবং সন্দেহের জায়গা থেকে পর্যবেক্ষকদের অনেকেই ফরহাদ মজহারের ঘটনাকে অন্যান্য গুমের ঘটনার থেকে আলাদা করে দেখেন।

সুইডিশ বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনিম খলিল মনে করেন ফরহাদ মজহারের ঘটনা বাংলাদেশে বিদ্যমান গুম পরিস্থিতিকে হালকা করে দেয়। বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির একজন পর্যবেক্ষক মি. খলিল নিজেও ২০০৭ সালে বাংলাদেশে সাময়িক সময়ের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন। মি. খলিল বলছেন বাংলাদেশে গুমের বেশিরভাগ ঘটনার সঙ্গেই কোনো না কোনো নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা আছে।

"আজকে দেখেন মোবাশ্বার হাসানকে তুলে নিয়ে গেছে। আমরা লেখার পরে জানতাম, এটা বাংলাদেশের কোনো পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হবেই না। আমরা ইন্ডিয়াতে একটা ওয়েবসাইটে এটা পাবলিশ করেছি। বাংলাদেশে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটার অ্যাকসেস পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। ডেভিড বার্গম্যান এবং আমি তো বিদেশি সাংবাদিক। বাংলাদেশের অথরিটি বা সরকার আমাদেরকেই যেখানে কোনো স্পেস দিতে রাজি নয়, সেখানে ভিকটিমরা কি বের হয়ে এসে বাংলাদেশে বসে বলবে যে আমাদের ওমুক এজেন্সি নিয়ে গিয়েছিল? তার কোনো অবকাশ বাংলাদেশে নেই," বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন মি. খলিল।

ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই তথ্য দিতে চান না

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল
BBC
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল

গণমাধ্যমে বা প্রকাশ্যে কথা না বললেও দুএকটি ক্ষেত্রে মানবাধিকার কর্মীদের কাছে কেউ কেউ তথ্য দেন।

ফিরে আসার পর মুখ না খোলার পেছনে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা এবং ভয়ভীতি কাজ করে বলেই মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন। মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন ব্যক্তিগতভাবেও অনেকে তথ্য দিতে চান না।

"যখন গুম হচ্ছে বা ফিরে আসছে- তারা কী ধরনের বার্তা নিয়ে ফিরে আসছে। কোন্ ধরনের শর্তে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে, সেটা কিন্তু আমাদের খেয়াল করতে হবে। যারা ফেরত এসেছে এমন কিছু কিছু বন্ধুকে আমরা বলেছি, যে তোমরা এটা নিয়ে কথা বলোনা কেন? তখন তারা বলেছে, আপা বাচ্চা-কাচ্চার ওপরে যখন হুমকি আসে তখন আর কিছু করা যায় না। সেরকমই নিশ্চয়ই কোনো না কোনোভাবে বলে দেয়া হয় যে তুমি যতটুকু জেনেছ, তোমার মধ্যেই রাখ আর কাউকে বলা যাবে না।"

বাংলাদেশে গত তিন মাসেই সাংবাদিক, শিক্ষক, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক ব্যক্তিত্বসহ ১৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এরমধ্যে অন্তত তিনজন ফেরত এসেছেন। কিন্তু তারা কোথায় ছিলেন, কে নিয়েছিল কিছুই তারা বলতে চান না।

পুলিশের গণমাধ্যম ও প্রকাশনা বিভাগের এআইজি সহেলী ফেরদৌস
BBC
পুলিশের গণমাধ্যম ও প্রকাশনা বিভাগের এআইজি সহেলী ফেরদৌস

যারা ফিরে আসছে তাদের ব্যাপারে কী জানা যাচ্ছে এ প্রশ্নে পুলিশের গণমাধ্যম ও প্রকাশনা বিভাগের এআইজি সহেলী ফেরদৌস বলেন, "বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যেটা হয় যে, ওনারা আসার পর আর কথা বলতে চান না। আমাদের তরফ থেকে আমরা নিশ্চিত করি যে তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু ওনাদের কাছ থেকে আর কোনো তথ্য না পাওয়ায় আমাদের পরবর্তী অনুসন্ধান ব্যাহত হয়। এর সাথে কে জড়িত, সন্দেহভাজন কিছু আছে কিনা এই জিনিসগুলো খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে যায়।"

এদিকে যারা নিঁখোজ হয়েছেন তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে স্বীকার করেনি কিন্তু পরে তেমনটাই প্রকাশ হয়েছে, এরকম নজির বাংলাদেশে আছে।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সরকারি বাহিনীর সদস্যদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ থাকায় বাংলাদেশে নিখোঁজ বা গুম পরিস্থিতি মারাত্মক আতঙ্ক এবং উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

English summary
Why Bangladeshi people keep silence after coming back from abduction
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X