সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর পাকিস্তান, চাঞ্চল্যকর দাবি মার্কিন রিপোর্টে
পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদীদের মুক্তাঞ্চল বলেই বার্ষিক রিপোর্টে ঘোষণা করল মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক। এবার মার্কিন অর্থসাহায্য বন্ধ করতে ধ্বনি ভোট বিল পাশ মার্কিন কংগ্রেসে।
পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের মুক্তাঞ্চল। জৈশ-এ মহম্মদ, লস্কর -এ তৈবার মত জঙ্গি সংগঠনগুলি দেশের মধ্যেই পুরোদমে নিজেদের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত একটি রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তান জোর ধাক্কা খেল। সেইসঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হল ভারতের দীর্ঘদিনের অভিযোগ।
মার্কিন বিদেশ দফতরের 'কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেররিজম ২০১৬' তে বলা হয়েছে আফগান তালিবান অথবা হাক্কানি জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান। সেইসঙ্গে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীকে সহযোগিতা করতেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পাকিস্তান। তারা শুধুমাত্র সেইসব তেহরিক ই তালিবানের মত জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিয়েছে যারা পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গি হামলা চালিয়েছে।
রিপোর্টে ভারতের প্রসঙ্গও তুলেছে মার্কিন বিদেশমন্ত্রক । ভারত একইসঙ্গে মাওবাদী ও পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিদের হামলায় জর্জরিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। সেইসঙ্গে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার জন্যও পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়েছে। পাকিস্তানে লস্কর -এ তৈবাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও, লস্করের শাখা সংগঠন জামাত -উদ দাওয়া বা ফালাহ -ই ইনসানিয়ত বহাল তবিয়তে অর্থ সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকী আমেরিকা লস্কর প্রধান হাফিজ সইদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীর তকমা দিলেও পাকিস্তানে তার ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কোনও বাধা নিষেধ ছাড়াই পাকিস্তানের মাটিতে অবাধে সে জনসভা করে চলেছে বলেই রিপোর্টে বলা হয়েছে।
এদিকে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরই মার্কিন কংগ্রেসে পাকিস্তানকে অর্থসাহায্য় দেওয়ার বিরুদ্ধে একটি বিল পাশ নিয়ে ভোটাভুটি হয়। এবিষয়ে গঠিত একটি প্যানেল পাকিস্তানের অর্থ সাহায্য় পাওয়া নিয়ে বেশ কিছু কঠোর শর্ত রেখেছে। যার মধ্যে অন্যতম হল, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্য়বস্থা না নিলে পাকিস্তানকে কোনওরকম অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে না। আপাতত বিলটি হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে পাঠানো হয়েছে। আমেরিকার বিদেশ দফতরের এই রিপোর্ট যে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান যে আরও শক্ত করবে তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত কূটনৈতিকমহল।