বাংলাদেশ থেকে নিখোঁজ হাজারের বেশি যুবক? এদেরকেই জঙ্গি হামলায় কাজে লাগানো হচ্ছে না তো?
পবিত্র ঈদের দিনে কিশোরগঞ্জে দরগায় বিস্ফোরণের ঘটনা ফের একবার শোক আর আতঙ্কের চোরাস্রোত বইয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে। দেশজুড়ে বেড়ে চলা কট্টরপন্থী ভাবনাকে পরাস্ত করতে পণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। [ঈদের দিন যারা মানুষ খুন করে তাঁরা ইসলামের শত্রু]
এদিন বিস্ফোরণের পর ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন শেখ হাসিনা। ইসলামের নাম নিয়ে নিরীহ মানুষের প্রাণ নেওয়া কোনও মানুষের কাজ নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। ঈদের দিনে যারা মানুষ মারে তাদের সঙ্গে ইসলামের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। [বাংলাদেশে পরপর জঙ্গি হামলার জেরে বন্ধ হল 'মৈত্রী এক্সপ্রেস']
কিন্তু যেভাবে সারা বাংলাদেশ জুড়ে কট্টরপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে গত কয়েকবছরে তা সবচেয়ে বেশি ভাবিয়ে তুলেছে হাসিনা সরকারকে। আরও একটি বিষয় গুলশনে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর বিশেষ নজরে এসেছে সরকারের। আগে বিষয়টি ছন্নছাড়া অবস্থায় থাকলেও সবকটির মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ রিপোর্ট বলছে, গোটা বাংলাদেশ জুড়ে হাজারের বেশি যুবক নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। নানা জেলায় ঘটা এই সমস্ত ঘটনায় পরিবারের লোকেরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গুলশনে হামলাকারীদের মধ্যেও এমন যুবক ছিল যে গতবছর থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। পরে উচ্চবিত্ত পরিবারের সেই যুবক জঙ্গি বেশে গুলশনের রেস্তরাঁয় হামলা চালায়। এবং নিজেও নিহত হয়।
বাংলাদেশ প্রশাসন এখনও নিজেদের দেশে জঙ্গি সংগঠন আইএসের অস্বিত্ব স্বীকার করেনি। তবে গুলশন হামলার পরে যে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সামনে এসেছে তাতে নিজেদের অবস্থান বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। এমনকী মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তরফেও গুলশনে হামলার ঘটনায় আইএসের দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
সবচেয়ে যেটা ভয়ের মনে হচ্ছে বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে তা হল, আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই যে হাজার খানেক যুবক নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে দেশজুড়ে, এদেরকে ধরে নিয়েই জঙ্গি বানানোর প্রক্রিয়া চলছে। দেশের যুবকদের মগজধোলাই করেই দেশে সন্ত্রাসবাদের বীজ বপনে এগিয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলি।
এক্ষেত্রে আইএসের মতো বিদেশি জঙ্গি সংগঠন যেমন রয়েছে, তেমনই বাংলাদেশের জামাত-উল-মুজাহিদিনের মতো সংগঠনও ইন্ধন যোগাচ্ছে। উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেদের ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি বানানোর চেষ্টা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে ফের জানিয়েছেন, সন্তান বিপথগামী হচ্ছে বুঝলে ব্যবস্থা নিন। প্রয়োজনে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দিন। বাংলাদেশ শান্তির দেশ। এখানে জঙ্গিবাদ বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু হাসিনার কথা শোনা হবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।