For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

শ্রীলঙ্কা: ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দেশে ক্ষমতার লড়াই

শ্রীলঙ্কায় পরিস্থিতিকে হয়তো টেলিভিশন সিরিয়াল হাউজ অব কার্ডস বা গেম অব থ্রোনসের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। কিন্তু ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সংকটে পড়েছে দেশটির মানুষ।

  • By Bbc Bengali

শ্রীলঙ্কার ক্ষমতার লড়াইয়ের তিন চরিত্র: মাহিন্দা রাজাপাক্সে, মৈথ্রিপালা সিরিসেনা এবং রানিল বিক্রামাসিংহে
BBC
শ্রীলঙ্কার ক্ষমতার লড়াইয়ের তিন চরিত্র: মাহিন্দা রাজাপাক্সে, মৈথ্রিপালা সিরিসেনা এবং রানিল বিক্রামাসিংহে

শ্রীলঙ্কায় এখন যা ঘটছে, তাকে হয়তো টেলিভিশন সিরিয়াল হাউজ অব কার্ডস, গেম অব থ্রোনস বা সেক্সপিয়ারের রোম নিয়ে লেখা নাটকের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।

গত সপ্তাহে দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কয়েকদিন আগে রাজধানী কলম্বোর কেন্দ্রস্থলে একটি রাজনৈতিক সমাবেশ করেছেন কয়েকশো মানুষ।

গত কয়েকদিন ধরে দেশটিতে এরকম অনেক সমাবেশ চলছে।

আরো পড়ুন: প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী দ্বন্দ্বে শ্রীলংকায় ওলট-পালট

তবে যেখানে অনেকে বিক্ষোভকারী বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রামাসিংহের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, সেখানে এই সমাবেশে অংশ নেয়া ব্যক্তিরা বলছেন, তারা কাউকে সমর্থন জানাতেই এখানে আসেননি। তারা শুধু মনে করেন, প্রেসিডেন্ট যা করেছেন, তা গণতান্ত্রিক হয়নি।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া একজন নারী বলছেন, ''আমরা অসন্তুষ্ট, কারণ সাংবিধানিক বিধিবিধান অবজ্ঞা করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে, এবং এই সরকার, এই প্রেসিডেন্ট যখন ২০১৫ সালে নির্বাচিত হয়েছেন, তখন তারা একটি সুশীল সরকারের অঙ্গীকার করেছিলেন।

কিন্তু গত কয়েকদিনে যা হয়েছে, তা পুরোপুরি তার বিপরীত।''

আরেকজন বলছিলেন, ''আমরা আসলে খুবই ক্ষুব্ধ, খুবই হতাশ। বিশেষ করে যেসব প্রত্যাশা নিয়ে এই সরকারকে আমরা এনেছিলাম, তার সঙ্গে যায় না। বিশেষ করে গণতান্ত্রিকভাবে সরকার পরিচালনার সঙ্গে মেলে না।''

রাতারাতি নিজেকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দাবি করেছেন মাহিন্দা রাজাপাক্সে
Getty Images
রাতারাতি নিজেকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দাবি করেছেন মাহিন্দা রাজাপাক্সে

এটি শুরু করেছেন এমন একজন ব্যক্তি, যিনি একসময় তার নিজের নেতাকে প্রতারণা করেছিলেন, যাকে তিনিই এখন আবার ক্ষমতায় বসিয়েছেন। আরো আছে একটি হত্যার অভিযোগ এবং একটি সাদা ভবন নিয়ে দুই ব্যক্তির দাবি, যা দেশটির ক্ষমতা কেন্দ্রের প্রতীক বলে মনে করা হয়।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনটি বিশাল এলাকা নিয়ে তৈরি করা, যেখানে বিশাল সব লম্বা গাছ আর বিশাল আকৃতির খিলান রয়েছে। এই সাদা রঙের ভবনটি সবসময়েই শ্রীলঙ্কার ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে দেখা হয়েছে। তবে এখন সেটি ক্ষমতার একটি লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

গত শুক্রবার থেকেই বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রামাসিংহে ভবনটি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ভবনের বাইরে সমাবেশ করছেন তার সমর্থকরা। গত কয়েকদিন ধরেই তারা ভবনের ভেতরে বাইরে অবস্থান নিয়ে রয়েছেন। এখন কি করার কথা ভাবছেন গত সপ্তাহেই বরখাস্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রী মি. বিক্রমাসিংহে?

রানিল বিক্রামাসিংহে বলছেন, ''সংবিধানে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র তাকেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন, যিনি সংসদে আস্থা অর্জন করতে পারবেন। এবং আমিই সেই ব্যক্তি, যার পক্ষে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন রয়েছে। সংবিধান অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে এবং সংসদের সভা ডাকতে হবে। এখন আমরা সেরকম পদক্ষেপ নিচ্ছি যাতে সংসদের ক্ষমতা এবং জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত হয়।''

কিন্তু কেন আপনি আইনি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না? কেন তিনি আদালতে গিয়ে অভিযোগ করছেন না যে, তাকে সরিয়ে দেয়া বেআইনি হয়েছে? তার কাছে জানতে চান সংবাদদাতা।

মি. বিক্রামাসিংহে বলছেন, ''চূড়ান্ত বিচারে আদালত অবশ্যই বলবে, যে এ বিষয়ে সংসদ শেষ সিদ্ধান্ত নেবে। আদালত হয়তো বলতে পারে, কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, সেটাই প্রমাণ করুন।''

পুরো ঘটনাটি প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার জন্য একটি বড় ইউটার্ন বলা যেতে পারে। কারণ গত সপ্তাহে যে ব্যক্তিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ পাঠ করিয়েছেন, তার বিরুদ্ধেই তিনি ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচন করেছিলেন এবং তাকে হারিয়েছেন।

সমাবেশের ছবি
EPA
সমাবেশের ছবি

গত সপ্তাহে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা বলেছেন, সব নিয়োগই সংবিধানের নিয়ম মেনে এবং আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী নেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েকজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ তার সঙ্গে একমত নন। নিহাল জয়াবিক্রমা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই।

আইন বিশেষজ্ঞ নিহাল জয়াবিক্রমা বলছেন, ''প্রধানমন্ত্রীর সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিষয়টি প্রেসিডেন্টের নয়, সে বিষয়ে সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। একটা সময় ছিল, যখন তিনি সেটা করতে পারতেন। কিন্তু ২০১৫ সালে সংবিধানের কিছু নাটকীয় পরিবর্তন আনা হয়। প্রেসিডেন্টের ৯০ শতাংশ নির্বাহী ক্ষমতা তখন কেড়ে নেয়া হয়। সেইসব কেড়ে নেয়া ক্ষমতার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার ক্ষমতাটি।''

প্রেসিডেন্ট হিসাবে মাহিন্দা রাজাপাক্সে এক দশক ধরে শ্রীলঙ্কার ক্ষমতায় ছিলেন। দেশটির রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অবসানের জন্য তার যেমন প্রশংসা করা হয়, কিন্তু তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি আর মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও অভিযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার পরাজয় ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত, এখন তাকে সেটি পুনরুদ্ধারের একটি সুযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেজন্য সংসদ পুনরায় বসার আগে তার পক্ষে আরো অনেক এমপির সমর্থন দরকার হবে।

দুই পক্ষেই এখন দীর্ঘ দরকষাকষি চলছে এবং সেজন্য অর্থকড়িরও লেনদেন হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এসব কিছুর মধ্যে দেশটি আটকে রয়েছে সংকটে।

English summary
Sri Lanka: The power struggle in the Indian Ocean Islands country
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X