For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

পরীক্ষার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

পরীক্ষার চিন্তায় দিশেহারা? পরীক্ষার আগে কিভাবে শেষমুহূর্তের রিভিশন দেবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় অনেক শিক্ষার্থী। তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ মনোবিজ্ঞানী,স্নায়ুবিজ্ঞানী এবং শিক্ষাবিদদের

  • By Bbc Bengali

একটার পর একটা পরীক্ষা, শেষমুহূর্তের প্রস্তুতি বা রিভাইজ যখন কঠিন হয়ে পড়ে তখন কোথা থেকে তা শুরু করতে হবে সেটাও অনেকেই বুঝতে পারেননা অনেক সময়। কিন্তু আপনি চাইলে নিজের স্মৃতিশক্তি আরও বাড়াতে পারেন, সেই সাথে গভীর মনোযোগ এবং মেজাজও আরও উন্নত করতে পারেন।

স্নায়ুরোগ রোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী এবং পুষ্টিবিদদের সম্পাদিত গবেষণালব্ধ মূল্যবান তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে এখানে, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর পরামর্শও সংযুক্ত করা হয়েছে।

এবং তার সারমর্ম রূপে চূড়ান্ত কিছু টিপস তৈরি করা হয়েছে। পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি বা রিভাইজ পর্ব যাতে আপনি আরও কার্যকর-ভাবে সম্পন্ন করতে পারেন, সেজন্য এমন স্টাডি টেকনিক বেছে নিন যা কার্যকর, এবং ইতিবাচক মনোভাব রাখুন।

নিচের টিপস গুলো আপনাকে ধারালো মেধার অধিকারী হতে এবং শেখায় উন্নতি করতে সহায়তা করবে।

১. বাধ্যতামূলক সকালের নাশতা, সাথে পুষ্টিকর খাবার

আমাদের দেহের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চালানোর জন্য দরকার শক্তি। এবং মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখারা ক্ষমতা এবং একাগ্রতা আসে শক্তির পর্যাপ্ত, ধারাবাহিক সরবরাহ থেকে যা আসে গ্লুকোজ রূপে ।

গবেষণায় দেখা গেছে যেসমস্ত শিক্ষার্থীরা সকালের নাশতা ঠিকমত খেয়েছে তারা পরীক্ষায় তুলনামূলক ভালো করেছে।

কারণ তাদের মনোযোগ দিতে এবং বিভিন্ন তথ্য স্মরণ করতে সহজ হয়েছে।

সুতরাং অবশ্যই সকালবেলা আপনাকে কিছুটা কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করতেই হবে যেটা ধীরে ধীরে শরীরে শক্তি যোগাবে। যেটা হতে পারে ওটস, রুটি বা কম চিনি যুক্ত সিরিয়াল।

আপনার প্রোটিনের চাহিদাও কিছুটা পূরণ করতে হবে দুধ, দই কিংবা ডিম খেয়ে।

মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী বিভিন্ন খাবার
Getty Images
মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী বিভিন্ন খাবার

অন্যান্য বেলার খাবারে মস্তিষ্কের জন্য ভালো এমন খাবার বেছে নিতে হবে, যেমন ডিম, তেল সমৃদ্ধ মাছ যেমন ম্যাকেরেল, সার্ডিনস এবং স্যামন মাছ, এছাড়া খেতে হবে হোল-গ্রেন (শস্যদানা), বাঁধাকপি, ব্রকলি, টমেটো, স্পিনার, অ্যাভাকাডো ইত্যাদি।

সেইসাথে নির্দিষ্ট সময়ে কোন একটি স্ন্যাকস বা জলখাবার খাওয়ার কথা ভুলে গেলে চলবে না।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার স্বল্প-স্থায়ী স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সেইসাথে বদলে দিতে পারে মুড।

ব্লুবেরি, বাদাম, স্ট্রবেরি, জলপাই, কুমড়োর বিচি এবং ডাক চকোলেট একইসঙ্গে দেহ এবং মনের খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২. আগেভাগেই শুরু করা...

পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে আসার আগেভাগেই শুরু করতে হবে প্রস্তুতি যা আপনাকে রাখতে শান্ত স্থির । সকাল বেলা পড়ার চেষ্টা করুন কেননা সেইসময় ব্রেইন সতেজ এবং শিথিল থাকে। রিভিশন কখনোই পরের বেলার জন্য রেখে দেয়া সঠিক কাজ নয় কারণ দুপুর বা বিকেলের দিকে আপনি আরও বেশি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন ।

সবচেয়ে ভালো হয় যদি রিভিশন দেয়ার জন্য একটি রুটিন তৈরি করে নেয়া যায়: এর ফলে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাঠ শুরু এবং শেষ করা সম্ভব হবে।

সূর্যোদয়ের সময় একজন তরুণী শিক্ষার্থী পড়াশোনায় ব্যস্ত
Getty Images
সূর্যোদয়ের সময় একজন তরুণী শিক্ষার্থী পড়াশোনায় ব্যস্ত

৩. কোন বিষয়টিতে ফোকাস করবেন সেটি ঠিক করুন

মৌখিক পরীক্ষা? প্র্যাকটিক্যাল? নাকি বিষয় ভিত্তিক?

বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মনোভাব কাজ করে। সুতরাং পরীক্ষার ধরণ বুঝে কি পরিমাণ সিলেবাস বা পাঠ্যসূচি পড়তে হবে তা অনুধাবন করতে হবে।

সহজবোধ্য বিষয়ের ক্ষেত্রে সমগ্র বিষয় বড়বার প্রয়োজন নাও হতে পারে। সেখানে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর ফোকাস ঠিক করে সে বিষয়ে গভীরভাবে পাঠ নিতে হবে। আবার মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন বা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রে আরও বিশদ পাঠের প্রয়োজন হবে।

৪. পরিকল্পনা গ্রহণ

এটাকে সময়সাপেক্ষ মনে হতে পারে কিন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ রিভিশন পরিকল্পনা প্রকৃতপক্ষে আপনার সময়কে বাঁচিয়ে দেবে।

প্রতিদিন কতটুকু রিভাইজ দেবেন সেটা ভাববার জন্য এক মিনিটও সময় নষ্ট করতে হবেনা। এটা আপনার পাঠের কতটা অগ্রগতি হল সেটা যাচাই করারও একটা উপায় বটে।

সময়সূচী যতটা সম্ভব বিস্তারিত বা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নির্ধারণ করে নিন -এর সাথে যত সম্পর্কিত পেপার বা নোট দেখতে হতে পারে তা-ও যুক্ত করুন। এবং সামাজিকতা, শরীরচর্চা কিংবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিরতি নিতে কখনোই ভুলে গেলে চলবে না।

৫. "বিরতি" হতে পারে আপনার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু

একটি বিষয় একদিনে ১০ ঘণ্টা পড়ার চেয়ে ১০ দিন ধরে এক ঘণ্টা করে পাঠ অধিক উপকারী। তথ্যগুলো স্মৃতিতে গেঁথে রাখার ক্ষেত্রে সময় প্রয়োজন কিন্তু বিরতিময় কৌশল প্রমাণ করেছে যে সবচেয়ে কার্যকর।

এই পদ্ধতিতে একেকটি রিভিশনের মধ্যবর্তী সময়ে পাঠ ভোলার এবং তা পুনরায় আত্মস্থ করার জন্য সময় রাখার নিয়ম।

এই কৌশলটিকে লেখাপড়া এবং মুখস্থ করার ক্ষেত্রে গবেষণার ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বলা হয়েছে।

তবে মনে রাখতে হবে একেকটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে নেয়া কৌশল অন্য ধরনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর নাও হতে পারে। যে কারণে সবসময় রিভিশন শুরু করতে হবে আগেভাগে।

তাই অভিনব জিনিসের পেছনে সময় এবং টাকার অপচয় করে লাভ নেই পরীক্ষার সময় তা কোন কাজেই আসবে না।

হেডফোন কানে একজন শিক্ষার্থী
Getty Images
হেডফোন কানে একজন শিক্ষার্থী

৬. নিজেকে যাচাই করুন

"নিজেকে যাচাইকরণ" অবশ্যই তথ্য-উপাত্ত মনে রাখার অন্যতম কার্যকর উপায়, এমনটাই বলেছেন মনোবিজ্ঞানী এবং স্নায়ুবিজ্ঞানীরা।

এর ফলে কোনকিছু মুখস্থ করার চেয়ে তা বোঝা অনেক বেশি সহায়ক হয়, এবং সেটা আপনার জ্ঞানের কোন ফাঁক-ফোকর থাকলে তা অনুধাবন করতে সুযোগ দেয়।

রিভিশন সেশন শেষ হলে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন কিংবা নিজেকে কুইজ করার মধ্য দিয়ে যাচাই করা সম্ভব।

৭. নিজেই হয়ে উঠুন শিক্ষক

তো আপনি রিভাইজ দিয়েছেন, নিজেকে যাচাই করেছেন-এরপর কী? এবার গিয়ে নিজের লব্ধ জ্ঞান অন্য একজন কাউকে শেখাতে শুরু করুন, অবশ্যই।

এটা একটা বহুল পরিচিত কৌশল। এটা আপনার স্মরণশক্তিকে উদ্দীপিত করে এবং মনে রাখতে সাহায্য করে।

আর অন্য কাউকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আপনার নিজেকে একটি পরিষ্কার এবং কাঠামোগত পদ্ধতিতে আপনার জ্ঞান অর্জন করতে হবে-সেটাও বড় ভূমিকা রাখবে।

ক্যালেন্ডার
Getty Images
ক্যালেন্ডার

৮ স্মার্ট হয়ে উঠুন এবং ফোনটি লুকিয়ে রাখুন

ফোনের তো অবশ্যই প্রয়োজনীয়তা আছে কিন্তু লেখাপড়ার সময় নয়।

সোশ্যাল মিডিয়া এবং চ্যাট অ্যাপ্লিকেশনের টোপ আপনাকে বিভ্রান্ত করবে।

এটা পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে যত বেশি আপনি ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন আপনার নম্বর বা গ্রেড তত কম হবে।

এবং এমনকি ভাববেন না যে আপনি টেবিলের উপর ফোনটি রেখে দেবেন এবং তা স্পর্শ করবেন না: গবেষণায় দেখা গেছে যে সামনে থাকা ফোনটির দিকে কেবল তাকালেও আপনার মনোযোগ নষ্ট করে দেয়া জন্য তা যথেষ্ট।

৯. মিউজিক কম, নীরবতা বেশি

যেসব শিক্ষার্থীরা গান শুনতে শুনতে পড়াশোনা করেন তাদের তুলনায় যারা শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ লেখাপড়া করেন তাদের স্মরণশক্তি ভালো হয়।

গবেষণায় এমনটাই দেখা গেছে। সুতরাং পাঠের কক্ষের পরিবেশও গুরুত্বপূর্ণ।

১০. নিয়মিত বিরতি, মুক্ত বাতাস এবং ব্যায়াম

কার্যকর রিভিশন মানে একটানা পড়ে যাওয়া নয়: মাঝে মাঝে বিরতি মস্তিষ্ককে অধিক কর্মক্ষম রাখে। আপনার দেহ ও মন একে অপরের সাথে অন্তর্নিহিত-ভাবে সম্পর্কিত।

শরীরচর্চা রক্ত প্রবাহ সচল রাখে, মস্তিষ্কে আরও অক্সিজেন সরবরাহ করে, ফলে কার্যক্ষমতাও ভালো হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে ।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে মুক্ত বাতাসে কিছু সময় কাটিয়ে নিজের পড়ার ডেস্কে ফিরে আসতে পারেন সতেজ হয়ে এবং তা আপনাকে আরও মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

দুজন শিক্ষার্থী রিভিশন দিচ্ছে
Getty Images
দুজন শিক্ষার্থী রিভিশন দিচ্ছে

১১. ঘুম

পরীক্ষার আগের রাতে অবশ্যই রাতে ভালো ঘুম দিতে হবে, কিন্তু সেটা পুরো রিভিশন কালীন সময়েই প্রয়োজন।

নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে গেলেই আপনি সকালে নির্দিষ্ট সময়ে জেগে উঠতে পারবেন।

কখনো কখনো রাতের বেলা রিভিশন দেয়ার প্রয়োজনীয়তা হতে পারে তবে চেষ্টা করতে হবে তেমন পরিস্থিতি এড়াতে।

ঘুমানোর সময় নিয়মিত রাখার চেষ্টা করুন এবং মোবাইল বা রাতে টেলিভিশন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা বন্ধ করুন।

১২. শান্ত স্থির এবং ইতিবাচক থাকুন

শীর্ষস্থানীয় মনোবিজ্ঞানী, স্নায়ুবিজ্ঞানী এবং শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে পাওয়া এইসব পরামর্শ এখন আপনার কাছে আছে যা আপনাকে আরও ভালোভাবে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করবে।

সুতরাং কাজে লাগান একে। অন্তত আগের প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের চেয়ে আপনি এখন বেশি ভালো জানেন কিভাবে নিজের পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও ভালোভাবে নিতে হবে।

এবং কিভাবে নিজের স্মরণশক্তি, মন-মেজাজ এবং মনোযোগ আরও উন্নত করতে পারবেন-তাও জানা আছে।

তাই পুরো প্রক্রিয়া-জুড়ে শান্ত এবং ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করুন এবং যদি আপনার কখনো খারাপ সময় আসে তাহলেও।

শেষকথা হল, পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে অবশ্যই নিজেকে পুরস্কৃত করতে ভুলে যাবেন না।

English summary
Some important suggestions for preparing for the last minute before the Examination
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X