ইবোলার স্মৃতি উসকে ১৮ জনের রহস্যমৃত্যু নাইজেরিয়ায়
ওন্ডো, ২০ এপ্রিল : আফ্রিকায় ফের ফিরে এল ইবোলা মহামারীর স্মৃতি।
গতবছরই আফ্রিকায় এই রোগে হাজার হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন। সেই ঘটনার রেশ এখনও মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি। এর মধ্যেই নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বের ওন্ডো শহরে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গতকাল এবিষয়ে সরকারি ঘোষণার পর নড়েচড়ে বসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তদন্ত শুরু হয়। মৃতদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাদের শরীরে ইবোলা ভাইরাসের কোনও লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
জানা গিয়েছে, ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণও ঘটেনি মৃতদের শরীরে। ফলে ইবোলার সংক্রমণের কোনও ঘটনা না ঘটলেও সম্ভবত কীটনাশকের সংক্রমণেই নাইজেরিয়ায় এই মৃত্যুমিছিল বলে দাবি করেছেন হু-এর বিশেষজ্ঞরা।
যে রোগে আক্রান্ত হয়ে এতজন মানুষ মারা গিয়েছেন তার উপসর্গ হল, এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হয়, জ্ঞান হারিয়ে ফেলে রোগী, ওজন কমে যায় ও জ্বরে ভুগে রোগী মারা যায়। এভাবেই ওই ১৮ জন মারা গিয়েছেন।
চলুন আর একবার জেনে নেওয়া যাক ইবোলা নিয়ে
এটি একটি মারাত্মক ভাইরাস। ১৯৭৬ সালে এটি প্রথম অস্তিত্ব জানান দেয় আফ্রিকার দেশ জাইরে-তে। তখন থেকেই বিশ্ব জানতে পারে এই মারাত্মক রোগটির কথা। আফ্রিকা মহাদেশই এর আঁতুড়ঘর। ইবোল ভাইরাসের সংক্রমণের দু'টি পর্যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে জ্বর, দুর্বল শরীর, মাংসপেশিতে ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা, গলা ফোলা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। আর চরম তথা শেষ পর্যায়ে লাগাতার বমি-পায়খানা হতে শুরু করে। চামড়া ফুলে ওঠে আর সারা শরীরে গুটি বেরোতে শুরু করে। শরীরের অন্দরে যেমন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। কিডনি ও লিভার কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
ইবোলায় আক্রান্ত হলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী মারা যায় বলে জানাচ্ছে 'হু'। ইবোলাতে আক্রান্ত প্রাণীর শরীর থেকে এই ভাইরাস ঢোকে মানুষের শরীরে। তার পর তা ছড়াতে শুরু করে। রক্ত, থুতু ও পুরুষদের বীর্যে মূলত এই ভাইরাস বাসা বাঁধে। ইবোলা ঠেকাতে আজ পর্যন্ত কোনও ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ এর নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।