ধর্ষণের সময় নারীর শরীর কেন প্রতিবাদী হয় না, জানাল গবেষণা
সুইডেনের গবেষকরা জানিয়েছেন, ধর্ষিতা নারী অনেক সময়ে শরীরের সাড় হারিয়ে ফেলেন। তার সঙ্গে কী নৃশংস ঘটনা ঘটছে তা তিনি বুঝতে পারেন, তবে প্রতিরোধ বা প্রতিবাদ করতে পারেন না।
নারী নিগ্রহের সময়, বিশেষ করে ধর্ষিতা নারী অনেক সময়ে শরীরের সাড় হারিয়ে ফেলেন। তার সঙ্গে কী নৃশংস ঘটনা ঘটছে তা তিনি বুঝতে পারেন, তবে প্রতিরোধ বা প্রতিবাদ করতে পারেন না। কারণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
সম্প্রতি সুইডেনের গবেষকরা এমনই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, মাত্রাতিরিক্ত ভয় থেকে অনেক সময় ক্ষণস্থায়ী বিকলাঙ্গতা আসতে পারে। শরীর প্রতিরোধ করা বন্ধ করে দিতে পারে যতক্ষণ না ভয় কেটে যায়। যৌন নিগ্রহের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে এমনই হয়ে থাকে। এটাই মত সুইডিশ গবেষকদের।
গবেষকরা রেকর্ড বাতলে দেখেছেন, এক মাসের মধ্যে মোট ২৯৮জন মহিলা 'রেপ ক্রাইসিসি সেন্টার'-এ গিয়ে দেখা করেছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ এমন ছিলেন যারা নিগ্রহের মুহূর্তে বিশেষ নড়াচড়া করতে পারেননি। এবং ৪৮ শতাংশ এমন ছিলেন যাদের শরীর একেবারেই নড়াচড়া বন্ধ করে দিয়েছিল।
এই ভয় থেকে শরীরের নড়াচড়া বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় 'টনিক ইমোবিলিটি'। যা নিগ্রহের পর নির্যাতিতাকে ট্রমায় পাঠিয়ে দেয়, অবসাদে আচ্ছন্ন করে। এর মধ্যে অন্তত ২২ শতাংশ মহিলা চূড়ান্ত অবসাদে চলে যান যেখান থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা মুশকিল।
দুর্ভাগ্যের বিষয়, ধর্ষিতাকে বিচার করার সময় বিপক্ষ অনেক সময় বলে থাকে, মহিলা প্রতিরোধ করেননি। তার আসল কারণ লুকিয়ে শরীরের মধ্যেই। শরীরই মাত্রাতিরিক্ত ভয়ে প্রতিবাদহীন হয়ে পড়ে। ফলে কোনও উপায় থাকে না নির্যাতিতার কাছে। আর সেইজন্য অনেক সময় আইনের ফাঁক গলে অপরাধী ছাড় পেয়ে যায়।