মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রথম বিতর্কসভা : একে অপরকে বেনজির আক্রমণ ট্রাম্প-হিলারির!
ওয়াশিংটন, ২৭ সেপ্টেম্বর : বহুচর্চিত মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে আর কিছুদিনের অপেক্ষা। তারপরই জানা যাবে কে বসতে চলেছেন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশের রাষ্ট্রপতির চেয়ারে। একদিকে রয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী তথা বিতর্কিত চরিত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী তথা বিদায়ী রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার উত্তরসূরী হিলারি ক্লিন্টন।
এদিন প্রথমবার বিতর্কসভায় একে অপরের মুখোমুখি হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিন্টন। এবং প্রথা ভেঙে একে অপরকে বেনজির আক্রমণ শানালেন দুজনে। মার্কিন সময় সোমবার সন্ধ্যাবেলায় এই বিতর্কসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি হওয়ার যোগ্য নন হিলারি। আর এদিকে হিলারি একেবারে সরাসরি ট্রাম্পরে বর্ণবিদ্বেষী বলে তোপ দেগেছেন। ট্রাম্পের আক্রমণ, হিলারির সেই দেখনদারিও নেই, সেই স্ট্যামিনাও নেই। ফলে তিনি কোনওভাবেই বানিজ্যিক চুক্তিগুলি সম্পাদিত করতে পারবেন না।
জবাবে হিলারি ক্লিন্টন বলেছেন, আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'সেক্রেটারি অব স্টেট' হিসাবে ১১২টি দেশে সফর করেছি। এবং বহু বানিজ্যিক চুক্তি আলোচনা, মধ্যস্থতা ও সই করেছি। আর স্ট্যামিনা নিয়ে ট্রাম্প তাঁর থেকে পরামর্শ নিতে পারেন বলে জানান হিলারি।
হিলারির বক্তব্য শুনে ট্রাম্পের মন্তব্য, হিলারির অভিজ্ঞতা রয়েছে নিশ্চয়ই, তবে তা সুখকর নয়। পাল্টা হিলারিও বলেন, ট্রাম্প মহিলাদের শূকর, কাদা ও সারমেয় বলে হেয় করেছেন।
বিতর্কের মাঝে ট্রাম্প বারবার মেজাজ হারিয়েছেন। একসময়ে হিলারির পাশাপাশি বিতর্কের মধ্যস্থতাকারী লেস্টার হল্টকেও আক্রমণ করে বসেন। ট্রাম্প ও ক্লিন্টন দুজনেই দুজনের প্রার্থীপদ নিয়ে আক্রমণ করেন। ট্রাম্প বলেন, এই পদের জন্য শক্তসামর্থ ব্যক্তির প্রয়োজন। অন্যদিকে ট্রাম্পের কথায় কথায় মেজাজ হারানোর বিষয়টিকে তুলে ধরেন ক্লিন্টন।
পারস্য সাগরে ইরানি জাহাজের উপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলা করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। সেই বক্তব্যকে তুলে ধরে হিলারি বলেন, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ট্রাম্পের মনোভাব বিপজ্জনক। যে মানুষ শুধুমাত্র একটি টুইটেই উত্তেজিত হতে পারেন, তাঁর হাতে পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত নয়।
ট্রাম্প তাঁর চেনা ছন্দেই এদিন আক্রমণ করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারিকে। বানিজ্য, কর্মসংস্থান, সাইবার আক্রমণ, সেনা বৈরিতা এই সব নিয়েই প্রশ্ন করেছেন ট্রাম্প। এর পাশাপাশি ইরাক যুদ্ধ নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের আক্রমণ করার পাশাপাশি তিনি আইএসআইএসের উত্থানের জন্যও বারাক ওবামাকে দায়ী করেন।
পাল্টা ট্রাম্পকে আক্রমণ করে হিলারি বলেন, রিপাবলিকান প্রার্থী বর্ণবিদ্বেষী। তিনি এর আগে বহুবার বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন। এমনকী বর্তমান তথা আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাকেও উদ্দেশ্য করে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন।
টাম্প ৯০ মিনিটের এই বিতর্কসভায় বারবারই সন্ত্রাসবাদ, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়া নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের আক্রমণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, জিতলে এই সমস্ত সমস্যার তিনি সমাধান করবেন।