বিশ্বকাপ জ্বর : কাল আপনি অসুস্থ হবেন নাকি 'বাড়িতে চুরি'র গল্প দেবেন অফিসে?
কলকাতা, ২৫ মার্চ : তাহলে বৃহস্পতিবারের ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালের দিন অফিস ডুব দিতে কী ফন্দি আঁটলেন? 'অসুস্থ' হওয়ার পরিকল্পনা করছেন নাকি বাড়িতে সিঁধেল চোরের ঢুকে পড়ার গল্প? কারণ আফিসযাত্রীদের উপর সমীক্ষা চালিয়ে এমন মজাদার চিত্রটাই যে স্পষ্ট হয়েছে।
সিডনির পিচ সহায়ক হবে ভারতের, ম্যাচ শুরুর আগেই ব্যাকফুটে অজিরা
প্রিভিউ: ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল
ভারত-অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল নিয়ে ১০টি তথ্য
এমন কিছু করার লক্ষ্যে বিরাট, যা ভারতীয় ক্রিকেটে আগে হয়নি!
ইএসপিএন ক্রিকইনফো প্রায় ৬০০০ জন অফিসযাত্রীর উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। এদের মধ্যে ৩৪ শতাংশই অফিসে ডুব মারার জন্য 'অসুস্থতা'-কেই হাতিয়ার বানাতে চাইছেন। অর্থাৎ সকাল সকাল টুক করে ফোনে বসের নম্বর ডায়াল করে 'আজ শরীরটা খুব খারাপ' এই বাহানাই দেওয়ার কথা ভাবছেন। আর এই ৬০০০ এর ২ শতাংশ ভাবছেন বাড়িতে চুরি বা ডাকাতির অজুহাত দিয়ে কোনওমতে কাল অফিস থেকে পালিয়ে বাঁচবেন।
আসলে, ভারতের অধিকাংশ বড় ম্যাচই নয় শনিবার, নয় রবিবার পড়েছে এতদিন। ফলে ছুটি নেওয়ার দরকার হয়নি। কিন্তু একে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ তার উপর সেমিফাইনাল, এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ কাজের দিনে পড়ে যাওয়াতেই যত গণ্ডগোল। তাই অগত্যা মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া আর কী?
টিসিএ,-এ কর্মরত নারিন স্যামুয়েলের কথায়, "কালকের ম্যাচটা জমবে বেশ। অফিসে গেলেও মন পড়ে থাকবে ম্যাচেই। কাজে ভুল হয়ে যাবে। শেষে সেই বসের গালি শুনতেই হবে। তার থেকে বরং একদিন ডুব দিয়েই বকুনিটা শুনে নেব। ম্যাচটাতো এনজয় করা যাবে।
অন্যদিকে এমএনসিতে কর্মরত বিবেক ভট্টাচার্যর কথায়, এদিন আমার কাজের প্রাধান্য তালিকায় সবচেয়ে উপরে থাকবে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল ম্যাচ। প্রথমে ভেবেছিলাম ছুটি নেব, তারপর ভাবলাম না থাক, যতক্ষণ খেলা চলবে ততক্ষণ 'ক্লায়েন্ট মিটিং' বলে চালিয়ে দেব। খেলা হয়ে গেলে অফিস ঢুকব।
কলকাতার সিটি ব্যাঙ্কে কাজ করেন পল্লবী গুহঠাকুরতা। পল্লবী জানিয়েছেন, কালকের জন্য কোনও মিটিং রাখা হয়নি। দিনটা শুধুমাত্র ভারতকে সমর্থন করার জন্য সমর্পন করেছি।
তবে, অনেক অফিস কর্তারা আবার কর্মীদের ক্ষেত্রে এদিনে কড়াকড়ি করতে চাইছেন না। টাইটান শোরুমের স্টোর ম্যানেজার জানাচ্ছেন, চার বছরে একবার বিশ্বকাপ একবার হয়। তাতে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার এমন টক্করদার সেমিফাইনাল দেখার সুযোগই বা কবার আসে। তাই কর্মীদের ক্ষেত্রে কোনও জোরাজুরি নেই। তবে কর্মীদের অনুরোধ করা হবে কামাই না করে অফিসে বসেই খেলা উপভোগ করতে। ক্যাফেটেরিয়ায় ভিড় জমানোর ক্ষেত্রে একদিনের ছুট দেওয়া হবে।
এই সমীক্ষা থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বকাপের এই ম্যাচ উপভোগ করার পথে নিজেদের কাজকে বাধা হতে দিতে চাননা ক্রিকেটপ্রেমীরা। ৬২ শতাংশ বলেছেন কোনও না কোনওভাবে তারা কাজে ফাঁকি মারবেন। কী বাহানায় কাজ ফাঁকি দেবেন সে প্রশ্নে তরুণ ক্রিকেটপ্রেমীরা অসুস্থতার বাহানাটাই বেছে নিয়েছেন। অনেকে আবার সরাসরি ম্যাচের যুক্তি দিয়েই কাজ ফাঁকির কথা ভাবছেন।