হাসপাতালের প্রত্যাখ্যান: গর্ভে ৫ দিনের মরা ভ্রূণ নিয়ে ঘুরে মৃত্যু মহিলার!
রায়পুর, ২১ সেপ্টেম্বর : গর্ভে পাঁচদিনের মৃত ভ্রূণ নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেছিলেন। কিন্তু চিকিৎসার টাকা না থাকায় প্রায় প্রত্যেক বেসরকারি হাসপাতালই তাঁকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। শেষমেষ সংক্রমণের জেরে ৫ দিনের মরা ভ্রূণ গর্ভে নিয়েই মৃত্যু হল এক মহিলার।
মৃতা ছত্তিশগড়ের কোরবা জেলার কোদিবাহার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। নাম সরস্বতী। গর্ভবতী সরস্বতী ও তাঁর স্বামী তিনটি বেসরকারি হাসপাতালের চক্কর কেটেছেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু তাদেরকে বলা হয়েছিল আগে চিকিৎসার টাকা জমা দিতে এবং রক্তের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু টাকা বেসরকারি হাসপাতালে খরচের টাকা জোগাড় করতে না পারার খেসারত প্রাণ দিয়েই দিতে হল গর্ভবতী মহিলাকে। যদিও ঘটনাটি সামনে আসার পরই ছত্তিশগড়ের মহিলা কমিশন বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার জমুনাদেবী মেমোরিয়াল মেটারনিটি হাসপাতালে সরস্বতীর স্ক্যান করে দেখা যায় তাঁর আট মাসের ভ্রূণ গর্ভের মধ্যেই মারা গিয়েছে। হাসপাতালের তরফে তাদের বলা বয়, ১০,০০০ টাকা এবং ৩ বোতল রক্ত হাসপাতালের কাউন্টারে জমা দিতে।
ততক্ষণে সরস্বতীর পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়ে গিয়েছে। হাজার চেষ্টা করেও টাকা বা রক্ত কোনওটাই জোগাড় করতে পারেনি সরস্বতীর সামী গুলাবদাস। কিন্তু অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে দেখে ফের একই হাসপাতালে বউকে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় সরস্বতীর চিকিৎসা করতে অস্বীকার করে হাসপাতালের ডাক্তাররা।
এদিকে গর্ভে ভ্রূণের মৃত্যুর অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ায় সরস্বতীর শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরতে শুরু করে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে বুঝতে পেরে তাঁকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় চিকিৎসকরা। সেখান থেকে তাঁকে পাশের কৃষ্ণা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে রোগী প্রত্যাখ্যান করেন চিকিৎসকরা।
কৃষ্ণা হাসপাতাল থেকে খালি হাতে ফিরে সৃষ্টি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে ডাক্তাররা বলেন মঙ্গলবার সরস্বতীর অস্ত্রোপচার করে মৃত ভ্রূণ বের করা হবে। কিন্তু সোমবার রাতেই মৃত্য়ু হয় সরস্বতীর।
অবস্থা আশঙ্কাজনক বুঝতে পেরেও কেউ টাকার জন্য কেউ আবার ঝুঁকি নেবেন না বলে আমার স্ত্রীকে মরতে দিল। এভাবেই কী চিকিৎসকরা কাজ করেন? প্রশ্ন গুলাবদাসের।