'সেক্স, লাইজ অ্যান্ড মার্ডার', বেঙ্গালুরুতে গ্রেফতার ৭
১৬ বছর আগের একটি আত্মহত্যা আসলে খুন। একই কায়দায় আরও দুজনকেও খুন করে রেললাইনে ফেলে দিয়েছিল ৭ জনের একটি দল। একের পর এক অবৈধ সম্পর্কই খুনের কারণ বলে জানতে পেরেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ।
১৬ বছর ধরে যাকে আত্মহত্যা বলে ভাবা হচ্ছিল, তা আসলে খুন। ১৬ বছর আগের শুধু একটি মৃত্যু নয়, ২০০২ ও ২০১৪ সালে আরও দুটি খুনের অভিযোগে সাতজনের একটি গ্যাংকে গ্রেফতার করল বেঙ্গালুরু পুলিশ।
২০১৪ সালে সুরেশ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়েই উঠে এল এই অভাবনীয় সত্য। ঘটনার সূত্রপাত ২০০১ সালে। ইয়েল্লাপ্পা নামে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয় রেললাইনের ওপরে। কিন্তু দেহটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ায় সেসময় ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেই ব্যাখ্যা করে বেঙ্গালুরু পুলিশ। একইভাবে ২০০২ সালে রমেশ নামে একজনের দেহ উদ্ধার হয় রেল লাইনের ওপর থেকে।
সেবারও বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে ফাইল ক্লোজ করে পুলিশ। এরপর ২০১৪ সালে রেল লাইনের ওপর উদ্ধার হয় সুরেশ নামে আরও একজনের দেহ। অবশ্য তার আগেই সুরেশের স্ত্রী মুনিরত্না নিখোঁজ ডায়েরি করেন থানায়। সুরেশের দেহ উদ্ধার হওয়ার পর পুরোদমে তদন্তে নামে পুলিশ। মৃত্যুর আগে সুরেশ যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই শেখর, ভেঙ্কটেশ, কুমার,গণেশ,নাগেন্দ্র কুমার, রাজু ও নগেন্দ্র-র হদিশ পায় পুলিশ। তাদের গ্রেফতারের করে জেরার পর যা তথ্য উঠে এল, তাতে চক্ষু চড়কগাছ বেঙ্গালুরু পুলিশের।
জেরায় জানা যায় ২০০১ সালে ইয়েল্লাপ্পার স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ধৃত ভেঙ্কটেশের। ইয়েল্লাপ্পা সেকথা জানতে পারায় খুন হতে হয় তাঁকে। এরপর ২০০২ সালে খুন করা হয় রমেশকে। জানা যায় ভেঙ্কটেশের স্ত্রীর সঙ্গে রমেশের অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। জানাজানি হওয়ায়, রমেশকেও খুন হতে হয়। ২০১৪ সালে রমেশের মৃত্যুর বদলা নিতে যায় তার ভাই সুরেশ। কিন্তু তাকেও খুন করে সাতজনে মিলে। প্রত্যেকবারই একই কায়দায় রেললাইনের ওপর দেহ ফেলে রেখে পালায় খুনিরা।
কিন্তু সুরেশের স্ত্রীর দায়ের করা নিখোঁজ ডায়েরির ভিত্তিতে তদন্তে নেমে শেষ পর্যন্ত সাতজনকেই ধরতে সমর্থ হয় পুলিশ। অবশ্য সাতজনের মধ্যে শেখর ও কুমার পুরনো একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত। এতদিন তারা জামিনে মুক্ত ছিল। এরপর থেকে অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে আরও সতর্ক থাকা হবে বলে জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর পুলিশ প্রধান।