নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে জাপানের ৬০ বছরের পুরনো চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ
নয়াদিল্লি, ২ সেপ্টেম্বর : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান নিয়ে ৬০ বছরের পুরনো জাপানি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট প্রকাশিত হল। জাপান সরকারের প্রকাশিত এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতের এই বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যু হয়েছে ১৮ অগাস্ট, ১৯৪৫ সালের বিমান দুর্ঘটনাতেই। [নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য : সব জানতেন নেহেরু, গান্ধী, প্যাটেল?]
এই প্রথম নেতাজির অন্তর্ধান বা মৃত্যু সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট এভাবে প্রকাশিত হল বলে যুক্তরাজ্যের একটি নেতাজি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট দাবি করেছে। জাপান সরকার তা প্রকাশ্যে আনার পরই তা জনসমক্ষে এল। [ব্রিটিশদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ীই নেতাজির পরিবারের উপর গোপন নজরদারি চলেছিল!]
লন্ডনের ওয়েবসাইটি থেকে আরও জানা গিয়েছে, ১৯৫৬ সালে নেতাজির অন্তর্ধান সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করে তা টোকিওর ভারতীয় দূতাবাসে জমা দেওয়া হয়েছিল। তবে যেহেতু এটি গোপন নথি, তাই কোনওপক্ষই একটিকে প্রকাশ করেনি। [১৯৮৫ সালে স্বাভাবিক মৃত্যু হয় নেতাজির!]
জাপানি রিপোর্টটি ৭ পাতার। সেটিকে ইংরেজি তর্জমা করলে ১০ পাতার রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। সেখানেই দাবি করা হয়েছে, নেতাজি ১৮ অগাস্ট, ১৯৪৫ সালের বিমান দুর্ঘটনাতে আহত হন। এরপরে তাইপেইয়ের হাসপাতালে সেদিন সন্ধ্যায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [স্বাধীন ভারতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন এঁরা!]
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিমানটি ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মাটিতে আছড়ে পড়ে। নেতাজি গুরুতর আহত হন। এরপরে বিকেল ৩টে নাগাদ নেতাজিকে তাইপেইয়ের সেনা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি দেহত্যাগ করেন। এরপরে ২২ অগাস্ট তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় বলেও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে।
দুর্ঘটনার বিস্তৃত রিপোর্ট হিসাবে বলা হয়েছে, বিমানটি মাটি থেকে ২০ মিটার উপরে ওঠার পরই বামদিকে ডানার একটি অংশ ভেঙে যায়। ফলে সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। বিমানবন্দরের রানওয়ের মধ্যেই একটি জায়গায় গিয়ে বিমানটি ধাক্কা খায় ও আগুন ধরে যায়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, সুভাষচন্দ্র বসুর দেহ আগুনে ঝলসে যায়। তাঁর পরনের জামাকাপড় খুলে বিমান থেকে বের করে আনা হয়। তখন নেতাজির সারা শরীর বিমান দুর্ঘটনার ক্ষতচিহ্ন ও আগুনের ফলে ঝলসে গিয়েছে।
সেইসময়ই একটি তদন্ত করে জাপান সরকার নেতাজির মৃত্যুর খবর ভারত সরকারকে দেয়। সেসময়ে নেতাজির বয়স ছিল মাত্র ৪৮ বছর। ১৯৫৬ সালে যখন জওহরলাল নেহরুর প্রধানমন্ত্রিত্বকালে শাহ নওয়াজ খানের নেতৃত্ব একটি দল নেতাজি অন্তর্ধান নিয়ে তদন্ত চালিয়েছিল, তখনও এই সংক্রান্ত যোগান দেওয়া হয়েছিল বলে লন্ডনের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে।