সলমন খান জেলে গেলে আমাদের সমস্যা মিটবে না, বললেন হিট অ্যান্ড রান মামলায় মৃতের ছেলে
মুম্বই, ৭ মে : সলমন খানের হেভিওয়েট নামের পিছনে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে নুরুল্লাহ শেখের নাম।
২০০২ সালের সেই কালো দিনে অভিনেতা সলমন খানের ল্যান্ড ক্রুসারের তলায় চাপা পড়ে মারা গিয়েছিলেন নুরুল্লাহ। আরও ৪ জন আহত হয়েছিলেন। সেই একটি রাত পুরোপুরি বদলে দিয়েছে নুরুল্লাহর ছেলে ফিরোজ ও স্ত্রী বেগম জাহানের জীবন।[ সলমন খানের পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত]
এত বছর পর ন্যায় পেয়ে কতটা খুশি ফিরোজ ও তাঁর মা? আদালতের রায়ে কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই তাঁদের। ফিরোজের কথায়, 'সলমন খানকে আমি অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি।সলমন জেলে গেলে আমার বাবা ফিরে আসবে না। আমরা শুধু একটা ভালভাবে বাঁচতে চাই। আমরা অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। শুধু চাই ক্ষতিপূরণের যে টাকা মায়ের আজও পাওনা, সেটা দিয়ে দেওয়া হোক, যাতে এখন থেক ভালভাবে মা জীবনযাপন করতে পারেন।[২০০২-২০১৫ : দেখে নিন হিট অ্যান্ড রান মামলার টাইম লাইন]
ফিরোজের কথায়, সলমন খান আমার সবচেয়ে পছন্দের অভিনেতা। সেই রাতের পরও আমি ওঁর অনেক সিনেমা দেখেছি।
অন্যদিকে বেগম জাহান মনে করছেন সলমনের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ অন্তত গোটা ঘটনায় একটা ইতি টানল। যখন এই দুর্ঘটনায় স্বামী প্রাণ হারান তখন সলমন খান কে তাও জানতেন না বেগম জাহান।
পরে পুলিশ স্টেশনে স্বামীর মরদেহ চাইতে গিয়ে বেগম জাহান জানতে পেরেছিলেন কে ছিল সেই সলমন খান। তারপর কোনও মতে ১৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে সান্তা ক্রুজের একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন তিনি। চোখের জল আটকে বেগম জাহান বললেন, "কারোর কাছ থেকে তখন সাহায্য পাইনি। অনেকে বলেছিল বিধায়ক বাবা সিদ্দিকির কাছে সাহায্য চাইলে পাওয়া যেতে পারে। দেখা করেছিলেন ওনার সঙ্গেও। কিন্তু উনি স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন কিছু করতে পারবেন না।"
পরে অবশ্য পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় নুরুল্লাহের এক বন্ধুকে বিয়ে করেন বেগম জাহান। তাঁর কথায়, সলমনের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িও গিয়েছিলেন তিনি। "কিন্তু আমাকে বলা হয়, সলমন খানের সঙ্গে আমার দেখা করার অনুমতি নেই। ভবিষ্যতেও যেন আমি এবাড়ি মুখো না হই।"
ফিরোজের কথায়, "সেই রাতে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সলমন খান ইচ্ছাকৃতভাবে ওই ঘটনা ঘটাননি। ওঁকে জেলে পাঠালে আমাদের সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা শুধু ওনার দিক থেকে সাহায্য চাই যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে পারি।" [২ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন সলমন খান]
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, মা-ছেলে এতদিন জানতেনই না মামলার কী গতিপ্রকৃতি। এমনকী সেদিন রায় ঘোষণা ছিল তাও তাদের অজানা ছিল। কারণ মামলায় কী হচ্ছে তার খোঁজখবর রাখার ক্ষেত্রে, না পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা, না বন্ধুরা, না পুলিশ, কেউ কোনও সাহায্য করেনি। হঠাৎ করে একটি সংবাদ চ্যানেল থেকে সবকিছু জানতে পারলাম।
সলমনের ৫ বছরের সাজা যথেষ্ট বলে মনে করছেন বেগম জাহান। তাঁর কথায়, "সলমন যা করেছে তার জন্য ৫ বছর সাজা দেওয়াটা যথেষ্ট। কারণ উনি নিজের ভুলটা উপলব্ধি করবেন। হয়তো ভবিষ্যতে আর একাজ করবেন না।"