কেউ সাহায্য করেনি, মৃত স্ত্রীর দেহ কাঁধে ১০ কিলোমিটার পথ হাঁটলেন স্বামী
ভুবনেশ্বর, ২৫ অগাস্ট : স্ত্রী সরকারি হাসপাতালে রোগাক্রান্ত আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্য়াগ করেছে। স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এসে শেষকৃত্য করবেন সেই কাজেও শত বাধা পেতে হল এক ব্যক্তিকে। একে সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থা, তায় স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি কেউ। এমনকী যেতে রাজি হয়নি কোনও শববাহী গাড়িও। ফলে হাসপাতাল থেকে বাড়ি প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা স্ত্রীকে কাঁধে চাপিয়ে হাঁটতে হল এক ব্যক্তিকে। [যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে পুরীর জগন্নাথ মন্দির!]
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার কালাহান্ডি জেলায়। দরিদ্র দানা মাঝি তাঁর স্ত্রী আমাং দেই-কে (৪২) হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। স্ত্রী টিবিতে আক্রান্ত ছিলেন। তবে মঙ্গলবার রাতে ভবানীপাটনা হাসপাতালে আমাং দেই মারা যান। [পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ১০টি বৈশিষ্ট যা অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি]
এই ধরনের ঘটনায় মারা যাওয়ার পরে ওড়িশার নবীন পট্টনায়েক সরকার শবদেহ বিনামূল্যে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য 'মহাপরায়ণ' প্রকল্প চালু করেছেন। তবে নিজের স্ত্রীকে বাড়িতে আনার জন্য এমন কোনও গাড়ি পাননি দানাই মাঝি। [এই ছবিগুলি দেখলে আঁতকেই উঠতে হবে!]
এদিকে হাসপাতাল থেকে তাঁর বাড়ি কালাহান্ডি প্রায় ৬০ কিলোমিটার রাস্তা। যদিও কোনও উপায় না দেখে স্ত্রীর শবদেহ কাপড়ে জড়িয়েই হাঁটা লাগান দানাই। সঙ্গে ছিল তাঁর একমাত্র মেয়ে। প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে আসার পরে স্থানীয় কিছু সাংবাদিক বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন। এরপরে তাঁরাই অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিলে বাকী ৫০ কিলোমিটার রাস্তা সেটাতে চেপে শবদেহ নিয়ে ফেরেন দানাই। [অদ্ভুত অঙ্গধারী এই মানুষদের বাস এই পৃথিবীতেই]
দানাই জানিয়েছেন, তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে বলেছিলেন যে তিনি দরিদ্র মানুষ। গাড়ি ভাড়া করার সামর্থ্য তাঁর নেই। তবে কেউ তাতে কর্ণপাত করেনি। সাহায্য করা যাবে না বলেই জানিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়টি কালাহান্ডির ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরের কানে পৌঁছতেই তিনি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওড়িশার 'মহাপরায়ণ' প্রকল্প অনুযায়ী ৩৭টি সরকারি হাসপাতালে মোট ৪০টি শববাহী গাড়ি রয়েছে যারা বিনামূল্যে শবদেহ বাড়িতে পৌঁছে দেয়।