ফেসবুকে ইঞ্জিনিয়ারের 'মধু ফাঁদে' পা দিয়ে যৌন শোষণের শিকার মুম্বইয়ের কিশোর
মুম্বই, ১৫ জুলাই : ফেসবুকের ফেক প্রোফাইলের সাহায্যে মুধু ফাঁদ পাতে এক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। আর সেই ফাঁদে নাবালককে ফাঁসিয়ে তার নগ্ন ছবির পরিবর্তে ব্ল্যাকমেল করা এবং গত তিন মাস ধরে যৌন হেনস্থার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনারের ৩৩ বছরের ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তের নাম মিলিন্দ শিটে। কান্দিভলিতে মা-বাবার সঙ্গে সে থাকে। ১৫ বছরের এক কিশোরকে ফেসবুকে 'টার্গেট' করে সে। গত জানুয়ারি মাসে 'বৈভবী কিউটি পাই' নামের একটি ফেক প্রোফাইল থেকে ওই কিশোরকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় মিলিন্দ। ওই কিশোরও রিকোয়েস্টটি গ্রহণ করে। এরপর থেকে দুজনের চ্যাটিং শুরু হয়।
'বৈভবী কিউটি পাই' প্রোফাইল থেকে মেয়ে হিসাবে চ্যাট শুরু করে মিলিন্দ। উল্টোদিকে মিলিন্দের ফাঁদে ক্রমশ ফাঁসতে থাকে ওই কিশোর। মেয়েটি ওই কিশোরকে নগ্ন ছবি পাঠাতে শুরু করে। বলে, যে সেই ছবিগুলি তারই। বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে কিশোরের কাছেও তার নগ্ন ছবি পাঠাতে বলে বৈভবী। ছেলেটিও মিলিন্দের জালে ফেঁসে যায় এবং বৈভবীকে তার নগ্ন ছবি পাঠায়। এরপরই ফেসবুক থেকে বৈভবীর অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যায়।
এর কিছুদিন পরে ফেসবুকে ছেলেটি একটি ম্যাসেজ পায়, জনৈক তীর্থ শর্মা দাবি করে, ছেলেটির নগ্ন ছবি একটি ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। ছেলেটি সঙ্গে সঙ্গে খুঁজে দেখে, কিন্তু কিছুই পায় না। এরপর সে আবার তীর্থের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তীর্থ বলে, ঋষি সোনেচা নামের এক ব্যক্তি ছবিটি আপলোড করেছে।
এরপর ছেলেটি ফেসবুকে সোনেচার অ্যাকাউন্ট খুঁজতে শুরু করে। সোনেচার অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়ে সে সোনেচাকে অনুরোধ করে তার নগ্ন ছবিগুলি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু সে আবেদন প্রত্যাখ্যাত করে সোনেচা। বরং তাকে কান্দিভলি-র একটি আবাসনের ছাদে ছেলেটিকে দেখা করতে বলে সে। সেখানে গিয়ে মিলিন্দকে দেখতে পায় ছেলেটি। মিলিন্দের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল তার।
মিলিন্দ এমন ভাব করতে থাকেন যেন তিনিও এই সোনেচার 'হানিট্র্যাপ'-এর স্বীকার। সোনেচার নির্দেশের দোহাই দিয়ে ছেলেটির যৌন শোষণও করে মিলিন্দ। এবং মোবাইলে এর ভিডিও রেকর্ডও করে। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে আরও ২ বার সোনেচা ওই ছেলেটিকে মিলিন্দের বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেয়। প্রত্যেকবারই তাকে যৌন শোষন করে মিলিন্দ। সোনেচা তাকে হুমকি দেয় যদি সে এই ব্যাপারে কাউকে বলে তাহলে তার নগ্ন ছবি ও যৌন মিলনের ভিডিও পরিবার ও বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
কিছুদিন পরে সোনেচার ফেসবুক অ্যাকাউন্টও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু অন্য অ্যাকাউন্ট থেকে সে সোনেচার ম্যাসেজ পেতে থাকে। অন্যদিকে মিলিন্দের থেকেও দেখা করার জন্য জোরাজুরি করা ম্যাসেজ পেতে থাকে।
ছেলেটির মা একদিন ফোনে মিলিন্দের ম্যাসেজ দেখে নেন। এরপর ছেলেকে এইবিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে ছেলে গোটা বিষয়টি জানিয়ে দেয় মাকে। এরপরই ওই ছেলেটির পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয় গয় ১০ জুলাই।
১৭ জুলাই পর্যন্ত মিলিন্দের পুলিশি হেফাজত হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে সব কটি ফেক প্রোফাইলই কী মিলিন্দ শিটের ছিল নাকি এই কুকর্মে তার সঙ্গে অন্য কেউও যুক্ত ছিল।