সম্ভভত বানর সেনার কাছে বড় হয়নি , 'মোগলি' কন্যার মানসিক মূল্যায়ণ প্রয়োজন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
২দিন ধরেই খবরের শিরোনামে উত্তরপ্রদেশের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া 'মোগলি কন্যা'। বলা হচ্ছে জঙ্গলে বানর সেনার সঙ্গেই তার বড় হয়ে ওঠা। যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা।
কানপুর, ৮ এপ্রিল : ২দিন ধরেই খবরের শিরোনামে উত্তরপ্রদেশের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া 'মোগলি কন্যা'। বলা হচ্ছে জঙ্গলে বানর সেনার সঙ্গেই তার বড় হয়ে ওঠা। যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। যেমনটা মনে করা হচ্ছে তা না হওয়ার সম্ভবনাই বেশি বলে মনে করছেন তারা।
সম্ভবত মেয়েটির বয়স ৮ বছর। জানুয়ারি মাসে কাটারনিয়াঘাটের জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয় তাকে। বনকর্মীরা যখন তাকে উদ্ধার করে আলুথালু চুল, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত, পরনে মোগলির মতোই 'চড্ডি'।
তাঁর আচরণ বাঁদরের মতো, হাত-পা মিলিয়ে চার পায়ে হাঁটছে, হাতের ব্যবহার না করে মুখে করে খাবার তুলছে, বাঁদরের মতোই গায়ে আঁচড় কাটছে, আবার বাঁদরের মতোই মুখ দিয়ে আওয়াজ বের করছে। ফলে খুব সহজেই তার সঙ্গে বিখ্যাত শিশু কাহিনী জঙ্গল বুক-এর মোগলির সঙ্গে সামঞ্জস্য বের করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবটা অন্য হতে পারে।
বনআধিকারিকদের কেউ বলছেন, "জঙ্গলে নজরদারির জন্য শয়ে শয়ে ক্যামেরা লাহানো আছে, বনকর্মীরা টহল দেন জঙ্গলে, এটা সম্ভব নয়, বছরের পর বছর মেয়েটি জঙ্গলে দিন কাটিয়েছে আর তা বনকর্মীর চোখে এমনকী সিসিটিভির ক্যামেরাতে ধরা পরেনি।"
শিশু চিকিৎসকদের কথায়, "হয়তো মেয়েটির মানসিক অসুস্থতার কারণেই ওর মা-বাবা ওকে জঙ্গলে ছেড়ে গিয়েছিল। আর তাও বনকর্মীরা ওকে উদ্ধার করার কিছুদিন আগেই। বানরের কাছে মেয়েটি মানুষ হয়েছে এই তত্ত্বের কোনও ভিত্তি নেই।"
চিকিৎসকদের দাবি, এই মুহূর্তে মেয়েটির মানসিক মূল্যায়ণ ও চিকিৎসার প্রয়োজন।
মোগলি কন্যাকে আপাতত বনদূর্গা নাম দেওয়া হয়েছে। এখন একরকমের সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছে একরত্তি মেয়েটি। তাকে দেখতে হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
এখন আগের থেকে অনেকটাই ভাল রয়েছে মেয়েটি। ফলমূল ও রুটি খাচ্ছে। বিস্কুট খেতে পছন্দ করে সে। শরীরের ঘা গুলো অনেক কমেছে আগের থেকে। এই দুমাসে অনেককিছু শিখেছে সে। খিদে পেলে ইশারায় বোঝাতে পারছে। শৌচকর্মের জন্য বাথরুম ব্যবহারের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে তাকে।
চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, মেয়েটি সম্ভবত জঙ্গলে থাকাকালীন বাঁদরদের চেঁচাতে বা তাদের আচরণ লক্ষ্য করেছিল এবং সেটারই নকল করত। এই বয়সে বাচ্চারা যা দেখে তাই শেখে। একই বয়সের অন্যান্য ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ওর বেশি সময় কাটানো ওর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। মেয়েটি কোনও বড় শারীরিক বা মানসিক আঘাতের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে কিনা তাও মূল্যায়ণ করে দেখা উচিৎ।