ডেস্টিনেশন লখনউ, নোট বাতিলকে ইস্যু করে মমতার নিশানায় মোদিই
টার্গেট সেই মোদি। মোদি বিরোধী আন্দোলনে ঝড় তুলতে এবার লউনউয়ে ‘বিরোধী মুখ’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী সমাজবাদী পার্টি ও আম আদমি পার্টি।
উত্তর প্রদেশ, ২৯ নভেম্বর : এবার ডেস্টিনেশন লখনউ। টার্গেট সেই মোদি। মোদি বিরোধী আন্দোলনে ঝড় তুলতে এবার লউনউয়ে 'বিরোধী মুখ' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী সমাজবাদী পার্টি ও আম আদমি পার্টি। দিল্লি ও কলকাতার পর এবার লখনউ-এর মন জয় করতে চান তিনি।
মিশন লখনউয়ে আজ গোমতীনগরে ধর্নায় বসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সফরে তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গী মুকুল রায়। তাঁর সঙ্গে গিয়েছেন মন্ত্রিসভার চার সদস্যও। লউনউয়ে কর্মসূচির দায়িত্বে তিনিই। আর মুকুল রায় যেখানে দায়িত্বে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সাফল্য অনিবার্য। সেই সাফল্যের প্রথম স্বাদ তিনি পেলেন বিমান বন্দরে নেমেই। সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব।
আগে থেকে নির্ধারিত ছিল না, মমতা উত্তরপ্রদেশ সফরে বিমানবন্দরে নামতেই বদল গেল পরিস্থিতি। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত হতেই জল্পনা শুরু হল, তবে কি এবার তৃণমূল ও সমাজবাদী পার্টি যৌথ সমাবেশ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ ফেলতে পারবেন বলে মনে হয় না, তাই অখিলশ নিজে উপস্থিত থাকতে না পারলেও মমতার ধরনা-মঞ্চে উপস্থিত থাকতে পারেন তাঁর প্রতিনিধিরা।
তৃণমূল সূত্র জানানো হয়েছে, তাঁদের তরফে সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো মুলায়ম সিং যাদব ও দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড তথা মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকে ধর্না মঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এখনও স্পষ্ট নয়, তাঁরা মমতার ধরনা মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন কি না? তবে দলের পক্ষ থেকে মমতার সভায় যে প্রতিনিধি পাঠানো হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত। এদিকে উপস্থিত থাকার কথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। সব নিয়ে লখনউ এখন মুখিয়ে আছে মমতার কর্মসূচি কতটা জমাট হয়, তা দেখার জন্য।
আর যাই হোক, এই নোট বিতর্ক সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মমতার গুরুত্ব অপরিসীম বাড়িয়ে দিয়েছে। সমস্ত বিরোধী দলেরই সম্ভ্রম আদায় করে নিতে সমর্থ হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই লক্ষ্যে মমতার শরীরী-ভাষা যেমন বদলে গিয়েছে, তেমনই মুখের ভাষাতেও এসেছে কার্যকরী পরিবর্তন। এখন কলকাতাতেও হিন্দিতে বক্তব্য রাখছেন। আসলে তিনি বিরোধী মঞ্চের সর্বভারতীয় মুখ হতে সচেষ্ট। কালই কলকাতায় বিস্ফোরণ দেগেছেন, 'হয় বাঁচব, নয় মরব, কিন্তু নরেন্দ্র মোদিকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে ছাড়ব'। সেই লক্ষ্য নিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে এগোচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নোট বাতিল ইস্যুকে কেন্দ্র করেই আবার ফেডারেল ফ্রন্টের জল্পনাও উঠে পড়েছে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে। এখন দেখার ২০১৯-কে সামনে রেখে পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়। বিজেপি বিরোধী মহাজোটের ভবিষ্যৎ আদৌ একটা জায়গায় পৌঁছতে পারে কি না, তা-ই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। নাকি অঙ্কুরেই বিনাশ হয় সেই জোট-ভবিষ্যৎ, তা বোঝা যাবে কিছুদিনের মধ্যেই। আপাতত উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাবের নির্বাচনী ফলাফলের উপর ঝুলে রয়েছে পুরো বিষয়টি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু বসে থাকতে চান না। তিনি এগিয়ে যেতে চান বাধাহীন গতিতেই।