চ্যুতি রেখার ঠিক উপরেই অবস্থান, ভবিষ্যতে ভয়াবহ ভূকম্পনের কবলে পড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হতে পারে কলকাতা
কলকাতা, ১৩ মে : যতবার কলকাতার মাটি কেঁপে উঠতে ততবার কলকাতা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কলকাতা। মঙ্গলবার নেপালের ভূমিকম্পের পর এই সতর্কবার্তাই দিলেন বিশেষজ্ঞরা। [নেপালের ঘটনা 'তুচ্ছ', 'গ্রেট হিমালয়ান ভূমিকম্প' আসা এখনও বাকি়]
শহরের মাত্র ৪.৫ কিলোমিটার নীচেই অবস্থান চ্যুতি রেখার। কলকাতার নীচ থেকে গিয়ে তা ভেঙেছে রাজরহাট-নিউটাউন এবং নদিয়ার রানাঘাটে। যা গত একবছর ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে অতীব সক্রিয় হয়ে উঠলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের কবলে পড়েত পারে শহর, যার কম্পাঙ্ক কমপক্ষে ৬ হতে পারে, দাবি ভূতত্ত্ববিদদের। [ফের প্রবল কম্পনে ত্রস্ত কলকাতা সহ গোটা রাজ্য, রাস্তায় নেমে এসেছেন মানুষ]
হিন্দুস্তান টাইমসকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক যিনি 'প্লেট টেকটনিক' ও ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করেন, তাঁর মতে এই ভূমিকম্প হলে মিনিটের মধ্যে ৩০০ বছরের পুরনো এই শহর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে।
২৫ এপ্রিল নেপালে ৭.৯ কম্পাঙ্কের তীব্র ভূমিকম্পে প্রায় ৮০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ভূমিকম্পের শতাধিক 'আফটার শক' অনুভূত হয়। এরপর গতকাল ফের ৭.৪ কম্পাঙ্কের ভূমিকম্প হয় যার উৎসস্থল আবারও নেপাল। এই ভূমিকম্পের পর মাত্র ২ ঘন্টার মধ্যে ৬ বার 'আফটার শক' অনুভূত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্রমাগত চাপ ও কর্ষণের ফলে মাটির নীচের ভারতীয় প্লেট বার্মা প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে ঘষাঘষিতে কলকাতার নিচের চ্যুতিরেখা অতি সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে যার ফলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে।
৬ কম্পাঙ্কের ভূমিকম্প কী কলকাতাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞদের উত্তর উৎসস্থল নেপালে ৭.৯ কম্পাঙ্কের ভূমিকম্পের জেরে কেঁপে উঠেছে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা। বাড়িতে ফাটল ধরেছে বহুতল কেঁপে উঠেছে। আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যেখানে কলকাতার ক্ষেত্রে রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৪-৫। তাহলে যদি ৬ কম্পাঙ্কের ভূমিকম্পের উৎসস্থল কলকাতার ঠিক নীচেই হয়, তার তীব্রতা কতটা হবে নিজেরাই কল্পনা করুন।
বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদের কথায়, ২৫ এপ্রিল এবং ১২ মে যে দুটি ভূমিকম্প নেপালে হয়েছে তাতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে কলকাতা শহর। ৬ কম্পাঙ্কের বেশি তীব্র ভূমিকম্প প্রতিরোধের ক্ষমতা এ শহরের নেই। এই ভূমিকম্প যদি হয়, কয়েকলক্ষ মানুষ মারা যাবে। শহরের অধিকাংশ পুরনো বাড়ি এমনই কিছু নতুন বহুতলও ধূলিসাৎ হতে পারে।
তবে এই ভয়াবহ ভূমিকম্প কবে হতে পারে সেবিষয়ে কোনও নিশ্চিত উত্তর দিতে পারেননি বিশেষজ্ঞরাও।