কাশ্মীরে অব্যাহত কার্ফু, মিডিয়ার কন্ঠরোধের সংবাদপত্রের অফিসে হানা, সাংবাদিকদের গ্রেফাতর-মারধর
কাশ্মীর, ১৭ জুলাই : কাশ্মীরের অস্থির অবস্থা এখনও অব্যাহত। শনিবার কুপওয়াড়া এলাকায় সেনার গুলিতে মৃত্যু হল আরও একজনের। আহত ২। বুরহান ওয়ানির মৃত্যু ঘিরে অশান্ত কাশ্মীরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪১।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার শ্রীনগরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু করলেন সাংবাদিক ও সম্পাদকরা। বুরহান ওয়ানির মৃত্যু ঘিরে ফুটছে কাশ্মীর। এরপরই কাশ্মীর সংক্রান্ত খবর যাতে প্রকাশিত না হয় সে জন্য সরকারি নির্দেশে কোনও খবরের কাগজ না ছাপানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এর জেরেই মিডিয়ার কন্ঠরোধের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ সাংবাদিকদের।[কাশ্মীরে নিহত হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির জঙ্গি হয়ে ওঠার কাহিনি]
বিক্ষুব্ধ সংবাদ সম্পাদকরাও জানিয়ে দেন খবরের কাগজ রাস্তায় বিক্রি না হলেও অনলাইন সংস্করণ আগামী কাল থেকেই চালানো হবে। [কাশ্মীরে হিজবুল জঙ্গি বুরহানের মৃত্যুতে একসুরে ভারতকে তোপ পাক প্রধানমন্ত্রী শরিফ ও জঙ্গি হাফিজ সঈদের]
বিক্ষোভের পিছনে শুধুমাত্র সরকারি নির্দেশ নয়, পুলিশি হানাও রয়েছে। কাশ্মীরের সংবাদপত্রের অফিসগুলিতে শুক্রবার রাতে হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়, বাজেয়াপ্ত করা হয় সংবাদপত্র ছাপার প্রয়োজনীয় সামগ্রী। উপত্য়কার জনপ্রিয় দৈনিক গ্রেটার কাশ্মীরের ৫০,০০০ কপি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।
কাশ্মীরের মিডিয়া হাউসগুলির দাবি, বুরহান ওয়ানি মৃত্যু ঘিরে বনধ-বিক্ষোভের অশান্ত কাশ্মীরে প্রথম দিন থেকেই নিরাপত্তা দিতে পুলিশ, অবস্থা সামাল দিতে নাকাল নিরাপত্তা বাহিনীরা। দশম দিনে পা দিল কার্ফু, উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনের বাইরে। মরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সেনার গুলিতে শনিবারও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাই পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এখন মিডিয়াকে 'নিষিদ্ধ' করে মিডিয়ার কন্ঠরোধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সরকার। [কাশ্মীরে অশান্তির জন্য হাওয়ালার মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছে পাকিস্তান, দাবি গোয়েন্দাদের]
শুধু সংবাদপত্রই নয়, গত ১২ ঘন্টা ধরে কেবল চ্যানেলগুলির পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট পরিষেবাও। যদিও কেবল অপারেটরদের তরফে জানানো হয়েছে, লিখিতভাবে কোনও নির্দেশ না দেওয়া হলেও মৌখিকভাবে আমাদের পরিষেবা বন্ধ করতে বলা হয়। পুলিশ কোনও কারণও দেখায়নি তারজন্য। সরকারি নির্দেশ মানতে আমরা বাধ্য। যদিও এখন জানানো হয়েছে, কেবল পরিষেবা ফের চালু করা যেতে পারে, কিন্তু পাকিস্তানের কোনও চ্যানেল না চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার।
তবে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে গুজব যাতে না ছড়ানো হয়, সেই কারণে সাময়িকভাবে এই ব্যবস্থাগুলি নেওয়া হয়েছে।