স্বতন্ত্রতা ছাড়া গোপনীয়তার অধিকার রক্ষিত হয় না, আধার বিতর্কে সওয়াল সুপ্রিম কোর্টে
গণতন্ত্র, স্বতন্ত্রতা, স্বাধীনতা এগুলির মৌলিকতা গোপনীয়তার অধিকার না থাকলে রক্ষা করা সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্টে আধার বিতর্কে গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিয়ে সওয়াল করে গিয়ে একথাই বলেছেন আইনজীবী সুব্রহ্মণ্যম।
গণতন্ত্র, স্বতন্ত্রতা, স্বাধীনতার মৌলিকতাকে গোপনীয়তার অধিকার না থাকলে রক্ষা করা সম্ভব নয়। ফলে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাতেই গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারের কথা সুনিশ্চিত করা রয়েছে। এদিন সুপ্রিম কোর্টে আধার বিতর্কে গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিয়ে সওয়াল করে গিয়ে একথাই বলেছেন আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম।
এদিন সর্বোচ্চ আদালতে নয় সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ মুখ্য বিচারপতি জেএস খেহরের নেতৃত্বে গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসেন। এটি মৌলিক অধিকার কিনা তার চয়ন করাই মূল উদ্দেশ্য। কারণ এর পিছনে আসল কারণ হল, সরকার আধার কার্ডকে সারা দেশে সবকিছুর ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করতে চাইছে। তার বিরুদ্ধেই অনেকে মামলা করেছেন। সবকটি মামলা একত্র করে সর্বোচ্চ আদালত শুনানিতে বসেছে।
কীভাবে গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে তা নিয়ে বলেত গিয়ে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেন, সার্বভৌম, প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক- এই শব্দবন্ধগুলির মধ্যেই গোপনীয়তা লুকিয়ে রয়েছে। তাঁর কথায়, গোপনীয়তা একটি বিস্ততৃত শব্দ। স্বাধীন ভাবনা, মত, ব্যক্তিস্বাতন্ত্রতা ইত্যাদির মধ্যে গোপনীয়তা রয়েছে। আর তা ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যায় না। কেন্দ্রীয় সরকারকেই তাই সকলের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। এই দায় সরকারেরই।
সওয়ালে আরও বলা হয়েছে যে, সরাসরি সংবিধানে এসবের উল্লেখ যদি উহ্যও থাকে, তার মানে এই নয় যে সেই অধিকার সংবিধানে সুরক্ষিত নয়। ঠিক যেভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অধিকার বাক ও মতামত প্রকাশের ধারা থেকে গ্রহণ করা হয়েছে, সেভাবেই এটিকে মৌলিক অধিকারের অন্য ধারা থেকে গ্রহণ করা উচিত।
ঘটনা হল, আধার কার্ডে বায়োমেট্রিক সহ ব্যক্তিগত তথ্য খুব সহজেই সাধারণ মানুষের হাতে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষিত হচ্ছে না। সেই নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে একেরপর এক পিটিশন জমা পড়ে। আধার কার্ডের ফলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত জীবন প্রকাশ্যে এসে পড়ছে। মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে এর মাধ্যমে। এমনটাই অভিযোগ জমা পড়েছে। তাই নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে বসেছে সর্বোচ্চ আদালত।