স্থুলকায় তিন সন্তানকে বাঁচাতে কিডনি বেচতে চাইছেন গুজরাতের রমেশভাই
ছেলেমেয়েদের বাঁচাতে নিজের কিডনি বেঁচতে চাইছেন গুজরাতের রমেশভাই নন্দওয়ানা (৩৪)।
ভাবছেন এ আর এমন কি? সব বাবা-মাই চায় তাদের সন্তান যেন সুস্থ শরীরে বেঁচেবর্তে থাকে। তাঁর গায়ে যেন কোনও খারাপ কিছুর আঁচ না লাগে। ফলে সন্তানের জন্য এরকম চাওয়ার মধ্যে অস্বাভাবিকতা কিছু নেই। সমস্যায় পড়লে এমন পথ অনেকেই বেঁছে নেন।
কিন্তু রমেশভাইয়ের সমস্যা খানিক ভিন্ন। তাঁর তিন সন্তান যোগিতা নন্দওয়ানা (৫), অনিশা নন্দওয়ানা (৩) ও হর্ষ নন্দওয়ানা (১৮ মাস) এত কম বয়সেই এত ওজন বাগিয়ে ফেলেছে যে তাঁরা বাঁচবে কিনা সেটাই এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারের কাছে। যোগিতার ৩৪ কেজি, অনিশার ৪৮ কেজি ও হর্ষের ১৫ কেজি ওজন হয়ে গিয়েছে।
দিনমজুর রমেশভাইয়ের দিনে ১০০ টাকা রোজগার
দিনমজুরির কাজ করা রমেশভাই দিনে ১০০ টাকা রোজগার করেন। কোনও কোনওদিন আবার কাজও থাকে না। ফলে তাঁদের সুচিকিৎসা ও একইসঙ্গে খাবারের যোগাড় করতে এমন মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রমেশভাই। তিনি বলেছেন, "বাচ্চারা যে হারে গায়ে-গতরে বাড়ছে তাতে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে।" ওরা মারাও যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রমেশভাই।
জানা গিয়েছে, ওই তিন মূর্তিমান মিলে এক হপ্তায় যত খাবার সাবাড় করে তাতে পুরো পরিবারের দু'মাস নিশ্চিন্তে চলে যায়। কী খায় তারা? যোগিতা এবং অনিশা প্রতিদিন ১৮ টি করে চাপাটি, দেড় কেজি চালের ভাত, দুই বাটি জুস, ছয় প্যাকেট খাস্তা, ৫ প্যাকেট বিস্কুট, ১ লিটার দুধ, এবং ১২টি কলা খায়। যদি কখনও যোগিতাদের একটু বেশি খিদে পায় তাহলে মা প্রাগনা বেনকে প্রায় সারাটা দিনই হেঁশেলে কাটাতে হয়।
তিনি বলছেন, "ওদের খিদে কখনোই থামে না। খাবার না পেলে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। ওদের জন্য সবসময় আমাকে রান্না ঘরে থাকতে হয়।"
রমেশভাইয়ের এই তিন মূর্তমান বাদেও আর ওকটি মেয়ে রয়েছে। ছয় বছরের ভাবিকার ওজন ১৬ কেজি যা একেবারে স্বাভাবিক। ছোট্ট ভাবিকা ভেবে পায় না, তার ভাইবোনেরা এরকম স্থুলকায় কীভাবে হল!
মাসে খাবারের পিছনে দশ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয় রমেশভাইকে
ফি
মাসে
সন্তানদের
খাবারের
পিছনে
দশ
হাজার
টাকা
ব্যয়
করতে
হয়
রমেশভাইকে।
তিনিও
জানেন
না
কেন
এরকম
হল
তাঁর
ছেলেমেয়েদের।
গত
তিন
বছরে
প্রায়
৫০
হাজার
টাকা
তিনি
চিকিৎসক
দেখিয়ে
খরচ
করেছেন
এই
তিন
জনের
পিছনে।
তাঁর
কথায়,
"সবাই
বলছে,
বড়
ডাক্তার
দেখাতে
হবে।
কিন্তু
সে
সামর্থ্য
আমার
নেই।"
আর অগত্যা, কিডনি বেচে ফেলার নির্মম সিদ্ধান্তটাই নিয়ে ফেলেছেন দিন আনা দিন খাওয়া রমেশভাই।