চিনা দ্রব্য বয়কটের ডাকে মার খাচ্ছে দীপাবলীর ব্যবসা! কপালে চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদের
নয়াদিল্লি, ১৪ অক্টোবর : উরি হামলার পর থেকে পাকিস্তানকে সমর্থন করতে শুরু করে চিন। প্রতিবাদে সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সর্বত্র চিনা দ্রব্য বয়কটের প্রচার শুরু হয়েছে। আর তারই জেরে সমস্যায় পড়েছেন পুরনো দিল্লি বাজারের বিক্রেতারা। [দীপাবলীর উপহার : সেনাকর্মীদের ১০ শতাংশ বকেয়া মেটাচ্ছে মোদী সরকার]
দীপাবলীর কথা মাথায় রেখে এই সময়টার জন্যই অপেক্ষায় বসে থাকেন দিল্লির পুরনো বাজারের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চিনা দ্রব্য বয়কটের জেরে তাদের দীপাবলীর বিক্রিতে ভাটা পড়েছে।
চিনা দ্রব্য বর্জনের এই প্রচারের পিছনের যথার্থতা, বা ভারতীয় দ্রব্য ক্রয়ের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের প্রচার উভয়কেই সমর্থন করেন এই বিক্রেতারাও। কিন্তু এই সমস্ত প্রচার শুরু হওয়ার আগে থেকেই দীপাবলী উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ টাকার চিনা দ্রব্য আগাম মজুত করে রাখা হয়েছে গুদামে। এখন এই দ্রব্য বিক্রি না হলে বেশ ভাল পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে এই ছোট ব্যবসায়ীদের।
দিল্লির ব্যবসায়ীদের একাংশের কথায়, "চার মাস আগে থেকে আমরা একটু একটু করে সমস্ত দ্রব্য মজুত করেছি। সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের অবস্থা সম্পর্কে তাদের অবগত করার প্রয়োজন রয়েছে। ভারতে চিনা দ্রব্য নিষিদ্ধ করাটা আমাদের পক্ষে সমস্যা তৈরি করবে। এই একই ধরনের দ্রব্য এখানে তৈরি করাটা লাভজনক হবে না, কারণ আমাদের কাছে সে পরিকাঠামোই নেই।"
বেশ কয়েকবছর ধরেই ভারতের দীপাবলীর বাজারে একেচেটিয়া ব্যবসা করে চলেছে চিনের একাধিক ফার্ম। বিশেষ করে দীপাবলীর টুনি আলো, ঘর সাজানোর সামগ্রী প্রভৃতি। এদিকে সোস্যাল মিডিয়ায় চিনা দ্রব্য বর্জন ও স্বদেশী দ্রব্যের প্রচারের ফলে এবারের দীপাবলীতে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে চিনা দ্রব্যের বিক্রি।
স্বাভাবিকভাবেই বিক্রেতাদের একাংশ আবার পুরোপুরি চিনা দ্রব্য বয়কটের পক্ষে থাকতে পারছেন না। বরং তাদের যুক্তি পুরোপুরি চিনা দ্রব্য নিষিদ্ধ না করে, শুধুমাত্র এমন দ্রব্যই নিষিদ্ধ করা হোক যা ভারত বিরোধী। কারণ পুরোপুরি বয়কট হলে তা তাদের রুজি রোজগারে প্রভাব ফেলবে।
বিক্রেতাদের একাংশ মনে করেন, অনলাইন শপিংয়ের দৌলতে এমনিতেই খুচরা বাজার সংকটের মুখে। তার উপর দীপাবলীর সময় যদি চিনা দ্রব্য বিক্রি না করার প্রচার চালানো হয় তা শুধু মুষ্টিমেয় কয়েক ব্যবসায়ী নয়, বরং গোটা খুচরা কারবারকেই ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবে।
ইতিমধ্যেই যে হারে দীপাবলীর ব্যবসা চলছে তাতে বিক্রেতাদের আশঙ্কা এবছর লাভের মুখ দেখা তো দুরে থাক বরং ক্ষতির বোঝাই টানতে হবে তাদের। পাশাপাশি তারা এও জানিয়েছেন, যে দ্রব্য বর্জন করার ডাক দেওয়া হয়েছে তার বিকল্প যদি সহজলভ্য হত তাহলে তাদের কোনও আপত্তিই ছিল না। কিন্তু তা না হওয়াতেই সমস্যা।