সস্তার প্রচার নয়, দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রথম হয়েও সন্ন্যাসীই হলেন আমেদাবাদের বর্শিল
গুজরাতের আমেদাবাদের বর্শিল শাহ দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৯.৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম হওয়ার পর জানিয়েছে, সে এবার জৈন সন্ন্যাসী হতে চায়।
বর্তমান যুগে ইঁদুর দৌড়ে দৌড়তে গিয়ে কেরিয়ারকে জলাঞ্জলি দিতে চায় না কেউই। সকলেই কেরিয়ার তৈরির পিছনে ছুটে চলেছে নিরন্তর। তবে একবিংশ শতাব্দি হলেও ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে। গুজরাতের আমেদাবাদের বর্শিল শাহ যেমন। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৯.৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম হওয়ার পর আরও বড় চমক দিয়েছিল সে।
বর্শিল জানিয়েছিল, সে এবার জৈন সন্ন্যাসী হতে চায়। যা শুনে গোটা ভারত অবাক হয়ে গিয়েছিল। প্রচার পাওয়ার এ এক নয়া স্টান্স, এমনটা অনেকেই ভেবেছিলেন। তবে সকলকে অবাক করে সন্ন্যাসই গ্রহণ করেছে বর্শিল।
বর্শিলের বাবা জিগরভাই সরকারি চাকুরে। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করার তিন বছর আগে থেকেই বর্শিল ঠিক করে রেখেছিল তাঁকে কী করতে হবে। গোটা পরিবার জৈন ধর্মাবলম্বী ও ধর্মের অনুশাসনকে নিষ্ঠাভরে পালন করে। খুব সাধারণ জীবনযাপন ও সকল জীবের প্রতি দয়াভাব রয়েছে পরিবারের সকলের।
বাবা জিগরভাই ও মা আমিবেন ছেলের সিদ্ধান্তে খুশি। দিদি জৈনিনী ও বর্শিলকে একেবারে ছাপোষা জীবনে অভ্যস্ত করা হয়েছে। জৈন আদর্শকে তারা যারপরনাই মেনে চলেন। বাড়িতে টিভি, রেফ্রিজারেটর নেই। বিদ্যুতের ব্যবহার করা হয় শুধু যখন ছেলেমেয়েরা পড়তে বসে তখনই। কারণ জৈন মতে বিদ্যুতের ব্যবহারে বহু জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়। যা জৈন অহিংসা মতাদর্শের বিরুদ্ধ।
বর্শিল জানিয়েছেন, গুরু কল্য়াণ রত্ন বিজয়জী মহারাজের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরই তাঁর জীবন বদলে গিয়েছেন। তিনি বুঝেছেন মানুষের চাহিদার ও লোভের কোনও শেষ নেই। হাজার হাজার রোজগার করলে লক্ষ টাকার লোভ হয়, লক্ষ টাকা রোজগার করলে মানুষ কোটি টাকা রোজগার করতে চায়। তার বদলে মনের অন্দরের শান্তি খোঁজাই জীবনের মোক্ষ। আর সেই মোক্ষলাভের উদ্দেশেই সন্ন্যাসের পথে এগিয়ে গেলেন বর্শিল।