স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে জায়গা নেই গান্ধী, নেহরুর, মুঘলদের হত্যাকারী বলেই ব্যাখ্যা পাঠ্যবইয়ে
ভারতের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মহাত্মা গান্ধী, জহরলাল নেহরুর উল্লেখ নেই ।
ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগ উঠল বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির স্কুল পাঠ্যক্রমে মুঘল শাসকদের অত্যাচারী ও হত্যাকারী হিসেবেই দেখানো হচ্ছে এবং সমস্ত হিন্দু রাজাদের বড় বড় যুদ্ধে জয়ী হিসেবে দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মেওয়াড়ের রাজা মহারানা প্রতাপ ও সম্রাট আকবরের হলদিঘাটির যুদ্ধ কম আলোচিত নয়। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, এই যুদ্ধে মহারাণা প্রতাপ পালিয়েছিলেন যদিও পরবর্তী সময়ে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য়পুস্তকে লেখা, প্রায় ৪৫০ বছর আগের একটি বড় যুদ্ধে আকবরকে পরাজিত করেছিলেন মহারাণা প্রতাপ।
[আরও পড়ুন:আঁচড় পড়বে না রবীন্দ্রনাথে, চাপে পড়ে সিলেবাস ইস্যুতে বিবৃতি কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর]
স্বাধীনতার সংগ্রামে মহাত্মা গান্ধী ও জহরলাল নেহরুর অবদান সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। কিন্তু সেই মহাত্মা গান্ধী ও জহরলাল নেহরুর সম্পর্কে কোনও তথ্যই নেই রাজস্থানেই অষ্টম শ্রেণির একটি পাঠ্যবইয়ে। সেই বইয়ে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর যেমন কোনও উল্লেখ নেই, তেমনই মহাত্মা গান্ধীর হত্যা নিয়েও একটি কথাও লেখা নেই। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বইয়ে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে দু-চার কথা লেখা হলেও নেহরু সম্পর্কে কিছু নেই। উল্টে হিন্দুত্ববাদী বীর সাভারকরকে নিয়ে গোটা একটি অধ্যায় রয়েছে এই বইয়ে।
অপরদিকে হরিয়ানায় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোরাল সায়েন্সের বইয়ের প্রথম পাতাতেই রয়েছে সরস্বতী বন্দনা। ভারতীয় মূল্যবোধ শেখাতেই বইয়ের শুরুতে সরস্বতী বন্দনা রাখা হয়েছে বলে দাবি বইটির লেখক দীনানাথ বাত্রার। ইতিমধ্যেই গুজরাটে এই বইটিকে স্কুলশিক্ষায় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষার গেরুাকরণে পিছিয়ে নেই মোদীর রাজ্য গুজরাটও। সেখানে অবশ্য এই কাজ মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঢের আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ১৯৯৫ সালে যখন কেশুভাই প্যাটেল মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখনই গুজরাটের পাঠ্যপুস্তকে মুসলমান, খ্রিশ্চানদের বিদেশি বলে বর্ণনা করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে হিটলারকে জার্মানির গর্ব বলেও ব্যাখ্যা করা হয়। পরে অবশ্য চাপে পড়ে সেই বইটি তুলে নেওয়া হয়।