কিডনির সমস্যা দূর করতে আসছে 'কৃত্তিম-কিডনি', এর বাঙালী যোগ কি জানেন ?
বাঙালী বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত 'কৃত্তিম-কিডনি' হতে চলেছে চিকিৎসাশাস্ত্রের অন্যতম যুগান্তকারী ঘটনা
চেন্নাই, ২৭ জানুয়ারি : দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা কিডনির সমস্যার শেষ পর্যায়ে ভুগছেন, তাঁরা জানেন 'ডায়ালিসিস' সহ্য করা কতটা কষ্টের। তবে এবার এই কষ্টের অবসান ঘটতে চলেছে। আগামী ১০ বছরের মধ্যেই বাজারে আসছে, 'কৃত্তিম কিডনি'। আর এই 'কৃত্তিম কিডনি' ডিভাইসটির অন্যতম আবষ্কর্তা এক বাঙালী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী মার্কিন বিজ্ঞানী ডঃ শুভ রায় এ নিয়ে বহু দিন ধরেই ক্যালিফোর্নিয়া স্যান ফ্রান্সিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করে চলেছেন। তামিলনাড়ু কিডনি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পুরস্কার বিতরণী সভায় একথা বলেন বিজ্ঞানী ডঃ শুভ রায়।
উল্লেখ্য 'কৃত্তিম কিডনি' , কিডনি সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় একটা বড় সাফল্য এনে দেবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। হাত মুঠো করলে যেরকম আকার হয়, এই কৃত্তিম কিডনিও সেই আকারের হবে। এই ডিভাইস নিয়ে বিজ্ঞানী ডঃ শুভ রায়ের গবেষণার কাজ অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই আবিষ্কারে শুধুমাত্র এফডিএ বা ইউএস ফুড আন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন -এর তরফে শীলমোহর পড়া বাকি রয়েছে।
এই ডিভাইস বসানো হবে রোগীর পেটে। এর সঙ্গে সংযোগ থাকবে হৃৎপিণ্ডের। যা রক্ত পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করবে। পাশপাশি এটি স্বভাবিক 'কিডনি'-এর মতোই যাবতীয় কাজ করবে। যার মধ্যে রয়েছে মূত্র উৎপাদন, হরমন তৈরি করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মত কাজ ।
প্রসঙ্গত যেভাবে শরীরে হেমো-ডায়ালিসিস চলে, তার থেকে আলাদা হবে এই পদ্ধতি। ডায়ালিসিস-এ শুধুমাত্র রক্ত থেকে 'টক্সিন' পরিশুদ্ধ হয়। 'কৃত্তিম কিডনি' -এর একটি আলাদা পর্দা রয়েছে, যা রক্তকে পরিশুদ্ধ করবে। পাশাপাশি জীবন্ত কিডনি কোষ দিয়ে তৈরি একটি বায়ো-রিয়াক্টর এই কোষ গুলিকে ডায়ালিসিস-এর সময়ে রক্তে উন্মুক্ত করবে।
বর্তমানে সারা ভারতে প্রায় ২.৫ লক্ষ মানুষ কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। মধুমেহ আর রক্তচাপ তার মধ্যে দুটি বড় রোগ। রোগের শেষ পর্যায়ে গিয়ে 'ডায়ালিসিস' বা 'কিডনি' প্রতিস্থাপন যে কতটা খরচ সাপেক্ষ তা অনেকেই জানেন। তবে এই 'কৃত্তিম কিডনি' যন্ত্রটির দাম কত পড়বেসে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি বিজ্ঞানী রায়। তাই নতুন এই 'কৃত্তিম কিডনি'-এর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন চিকিৎসক তথা রোগীরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই বিশেষ 'কৃত্তিম কিডনি' ডিভাইস একাধিক রোগীর শরীরে বসিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে। এখন চলছে তারই প্রস্তুতি।