"অ্যাপেল ব্যক্তিগত তথ্য হাতে পেলে সরকার কী দোষ করল", আধার শুনানিতে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
বেসরকারি সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা গেলে কেন সরকারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে? আধার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের।
আধারের তথ্য সরকারের হাতে চলে যাওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে হওয়া মামলার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলল সর্বোচ্চ আদালত। অ্যাপেলের মতো বহুজাতিক বিদেশি সংস্থা যদি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য পেয়ে থাকতে পারে, তাহলে সরকার কী দোষ করল? বেসরকারি সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা গেলে কেন সরকারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে? এদিন শুনানির সময়ে মামলাকারীদের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত।
আধারের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে মামলার নিষ্পত্তিতে যে নয় সদস্যের বিচারপতির কমিটি তৈরি হয়েছে, তারই একজন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সিং এই প্রশ্ন তুলেছেন।
[আরও পড়ুন:এবার ম্যারেজ সার্টিফিকেট-এর সঙ্গে আধার সংযুক্ত করা আবশ্যিক হতে পারে]
তিনি বলেন, শতকরা ৯৯ শতাংশ মানুষ নিজের অজান্তে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করে চলেছেন। তাঁরা জানেনও না কেন এই তথ্যগুলি নেওয়া হয়। যেমন আইফোন, আইপ্যাডে বুড়ো আঙুলের ছাপ দিতে হয়। নানাক্ষেত্রে ট্রেনের, বিমানের টিকিট বুকিং এমনকী ইমেলের ক্ষেত্রেও ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে হয়। তাহলে সরকারের সঙ্গে তা শেয়ার করতে অসুবিধা কোথায়? জানতে চেয়েছেন তিনি।
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সিংয়ের কথায়, অনলাইনে বহু মানুষ গোপন ব্যক্তিগত তথ্য নিজেরাই ফাঁস করছেন। এটা মানুষের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।
গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে কিনা তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে তাতে আধারের তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়েই মূলত অভিযোগ উঠেছে। আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিসের স্ক্যান করে নেওয়া হয়েছে একশো কোটির উপরে জনগণের। সেই তথ্য কতটা সুরক্ষিত রয়েছে তা নিয়েই মূলত প্রশ্ন উঠেছে।
কীভাবে গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে তা নিয়ে বিচারপ্রার্থীদের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বলেন, সার্বভৌম, প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক- এই শব্দবন্ধগুলির মধ্যেই গোপনীয়তা লুকিয়ে রয়েছে। তাঁর কথায়, গোপনীয়তা একটি বিস্ততৃত শব্দ। স্বাধীন ভাবনা, মত, ব্যক্তি স্বতন্ত্রতা ইত্যাদির মধ্যে গোপনীয়তা রয়েছে। আর তা ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যায় না। কেন্দ্রীয় সরকারকেই তাই সকলের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জেএস খেহর, জে চেলামেশ্বর, এসএ ববডে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও এস আবদুল নাজিরের বেঞ্চ আগেই জানিয়েছে, গোপনীয়তা রক্ষা করা মৌলিক অধিকার কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মোট ৯জনের বিচারপতি বেঞ্চ। এই পাঁচজন ছাড়াও রয়েছেন বিচারপতি আরকে আগরওয়াল, আরএফ নরিম্যান, এএম সাপরে ও সঞ্জয় কিষণ কউল। আগামী মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।