নীতীশের ইস্তফার পরই অমিতের ফোন, রাতেই নীতীশের বাড়িতে বিজেপি-র প্রতিনিধি দল
নীতীশ কুমারের ইস্তফার খবরের পরই বৈঠকে বসে পড়ে বিহার বিজেপি। এমনকী দিল্লিতেও বিজেপি-র সংসদীয় কমিটি বৈঠক করে। বিহার বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বকে ফোন করেন অমিত শাহ।
বিহারের রাজনৈতিক অচলাবস্থার সুযোগ নিতে সেখানকার রাজ্য বিজেপি-র বিশিষ্ট নেতা সুশীল মোদীকে ফোন করলেন অমিত শাহ। নীতীশ কুমারের ইস্তফার খবর নিশ্চিত হতেই আসরে নেমে পড়েন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সূত্রের পাওয়া খবরে অমিত শাহ ফোনেই বিহারে তিন জনের একটি কমিটি তৈরি করে দেন। যারা নীতীশ কুমারকে সমর্থন করা নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে এবং পরিস্থিতির উপরে নজরে রাখবে। এই কমিটিতে রয়েছেন বিহারের বিজেপি-র বিশিষ্ট নেতা সুশীলকুমার মোদী, রাজ্য সভাপতি নিত্যানন্দ রাই এবং প্রবীণ নেতা প্রেম কুমার।
অমিত শাহর ফোনের পরই তিন জনের এই কমিটি বিশেষ বৈঠকে বসে পড়েন। সেখানেই নীতীশ কুমার সরকার গঠন করলে কী ভাবে সমর্থন করা হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকের পর অবশ্য সরকারি ভাবে সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানাননি সুশীল মোদীরা। তবে, বিহার বিজেপি-র অন্যতম মুখপাত্র মঙ্গল পাণ্ডে নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকেরও ইঙ্গিত দেন। পরে গভীর রাতেই সুশীলকুমার মোদীরা নীতীশ কুমারের সরকারি বাসভবনে হাজির হন এবং তাঁকে অভিনন্দন জানান। নীতীশ কুমারকে সরকার গঠনে সমর্থনের কথাও সেখানে জানিয়ে দেন সুশীলকুমার মোদীরা।
এদিকে, বুধবার সন্ধ্য়ায় দিল্লিতে এক বিশেষ বৈঠকে বসে বিজেপি-র সংসদীয় দল। বৈঠকের পর বিজেপি-র শীর্ষনেতা জেপি নাড্ডা পরিস্কার করে জানিয়ে দেন, বিহারের মানুষকে এখনই ভোটের মধ্যে নিয়ে যেতে চায় না বিজেপি। তারা বিহারের অতি দ্রুত রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা বজার রাখার পক্ষে এবং যাতে চটজলদি বিহারের মানুষ নয়া সরকার পায় সে ব্যাপারে বিজেপি তৎপর বলেও জানান নাড্ডা।
বিজেপি যে নীতীশ কুমারের দিকেই ঝুঁকে তা অনেকদিনই পরিস্কার করে দিয়েছিলেন অমিত শাহরা। লালুপ্রসাদ যাদব এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই বিহার বিজেপি সমানে নীতীশকে মহাজোট সরকার ভেঙে দেওয়ার জন্য সওয়াল করে আসছিল। প্রয়োজনে নীতীশকে বিজেপি সমর্থন দেবে বলেও বার্তা দিয়েছিলেন বিহার বিজেপি-র শীর্ষনেতা সুশীলকুমার মোদী।
বুধবার ইস্তফার পরই নীতীশকে টুইট করে অভিনন্দন জানান নরেন্দ্র মোদী। নীতিগত অবস্থানের কথা উল্লেখ করে এই মোদীর প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন নীতীশ কুমার। পরে একপ্রকার নীতীশের জেদেই জেডিইউ-এর শরদ যাদবরা এনডিএ জোট ভেঙে বেরিয়ে আসেন।
সম্প্রতি দুর্নীতি ইস্য়ুতে লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে যেভাবে বিজেপি চাপ বাড়াচ্ছিল তাতে নীতীশ বুঝে গিয়েছিলেন মহাজোটের সরকারকে বাঁচানো সম্ভব নয়। তাই নীতীশ বেশ কয়েক মাস ধরেই পরবর্তী পদক্ষেপের সন্ধানে ছিলেন। জিএসটি ইস্যুতে মোদীকে সমর্থন করার সঙ্গে সঙ্গে নীতীশের অবস্থান স্পষ্ট হচ্ছিল। এদিন ইস্তফার পরই নীতীশ ও মোদীর কাছাকাছি আসাটা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এখন দেখার কোন পথে বিজেপি-র সমর্থন নিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে ফের একবার আসিন হন নীতীশ কুমার।