মুম্বইয়ের আদর্শ তদন্ত, অভিযুক্ত ২ অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান
মুম্বইয়ের আদর্শ হাউসিং-এর অনিয়মের তদন্তে প্রতিরক্ষামন্ত্রকে রিপোর্ট জমা। ২ প্রাক্তন সেনাপ্রধান, ৩ অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, ৪ মেজর জেনারেলের নাম অভিযুক্তদের তালিকায়
মুম্বইয়ের আদর্শ হাউসিং কেলেঙ্কারিতে সেনাবাহিনীর দুই প্রাক্তন প্রধানসহ যুক্ত একাধিক সেনা অফিসার। কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য মুম্বই হাইকোর্টের নির্দেশে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়েছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রক। সেই কমিটির তদন্তেই উঠে এসেছে এই তথ্য।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা প্রধান জেনারেল এনসি ভিজ( ২০০২-২০০৫), এবং দীপক কাপুর(২০০৭-২০১০), তিন অবসরপ্রাপ্ত লেফটান্যান্ট জেনারেল জিএস সিহোটা, তেজিন্দার সিং, শান্তনু চৌধুরী, চার মেজর জেনারেল এআর কুমার, ভিএস যাদব, টিকে কাউল এবং আরকে হুডা ছাড়াও, ডজনেরও বেশি সেনা অফিসার এবং ডিফেন্স এস্টেট অফিসের অফিসারদের নাম ১৯৯পাতার তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে। রিপোর্টে সরকারের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই আদর্শ হাউসিং কোঅপারেটিভ সোসাইটিতে ফ্ল্যাট পেয়েছেন। ৩১ তলার এই হাউসিং পার্শ্ববর্তী কোলাবা সেনা ছাউনি, হেলিপ্যাডের পক্ষে বিপজ্জনক।
২০১১ সালে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া, সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ তদন্তের রিপোর্টেও অভিযুক্ত তিন অবসরপ্রাপ্ত লেফটান্যান্ট এবং চার মেজর জেনারেলের নাম ছিল বলে জানা গিয়েছে। মেজর জেনারেল আরকে কুমার, টি.কে কাউল, ব্রিগেডিয়ার টিকে সিনহা, এমএম ওয়াংচু, কর্নেল আরকে বক্সি এবং প্রাক্তন ডিইও অফিসার আরসি ঠাকুরের বিরুদ্ধে সিবিআই ২০১২ তেই চার্জশিট জমা দিয়েছে। কিন্তু বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
এপ্রিল ২০১৬-তে মুম্বই হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রক তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্টেই অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্টে, অভিযুক্তদের সরকারি কোনও কমিটিতে না রাখারও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর বর্তমান আইনে,অবসরের তিন বছর পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি পর্যায়ে আর কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই।
উচ্চস্তরের অফিসাররা রোল মডেল হিসেবে গণ্য হন। খারাপ কাজ আটকাতে তাদের ওপর দায়িত্বও থাকে বেশি। সেই সমস্ত ব্যক্তির কাছ থেকে নিজেদের স্বার্থে খারাপ কাজ আশা করা যায় না। এমনটাই বলছেন, তদন্তের দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন আইএএস রাজন কাটচ এবং অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রবি থোড।
শহিদের স্ত্রী, সন্তান এবং প্রাক্তন সেনাকর্মীদের জন্য বরাদ্দ করা জমিতে সেনা আধিকারিকদের এই হাউসিং। তৎকালীন মহারাষ্ট্র সরকার এবং সরকারি আধিকারিকদের সাহায্য় নিয়ে এই অনিয়ম করা হয়। অনিয়মের জেরে ২০১০ সালে মহারাষ্ট্রের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহ্বানকে ইস্তফা পর্যন্ত দিতে হয়।
ঘটনার তদন্তে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে মহারাষ্ট্র সরকার দুই সদস্যের বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে। কমিশন ২০১৩-র এপ্রিলে তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্টে অশোক চৌহ্বানসহ মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ৪ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও আঙুল তোলা হয়েছিল।