ফের বদলালো জীবন, সাত পাকে বাঁধা পড়লেন ঝাড়খণ্ডের অ্যাসিড হামলার পীড়িতা সোনালি মুখোপাধ্যায়
ধানবাদ, ১৭ এপ্রিল : কে বলে কোনও মহিলার উপর অ্যাসিড হামলা হলে তাঁর জীবন সেখানেই শেষ হয়ে যায়? অ্যাসিডের ছোঁয়ায় বিকৃত হয়ে যায় নারীর রূপ। ভালবাসা মাইল খানেক দূর থেকেই পালিয়ে যায়। এসব মিথ ভেঙে ভেঙে দিয়েছেন চিত্তরঞ্জন তিওয়ারি ও সোনালি মুখোপাধ্যায়।
অ্যাসিড হামলার স্বীকার সোনালি। হামলার ফলে ঝলসে গিয়েছিল চেহারা। ১৬ এপ্রিল জামশেদপুরের চিত্তরঞ্জন তিওয়ারির সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন সোনালি।
তাঁর উপর অ্যাসিড হামলার কথা মিডিয়া থেকে জানার পর সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সোনালির সঙ্গে যোগাযোগ করেন চিত্তরঞ্জন। এরপরেই নিয়মিতভাবে কথা শুরু হয় দুজনের মধ্যে। তারপর ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব। সেখান থেকে ভাললাগা ও তারপর ভালবাসা।
একে অপরের প্রতি ভালবাসা উপলব্ধি করার পর আর দেরি করেননি তারা। বৃহস্পতিবার ধানবাদের বোকারোয় আদালতে আইনসম্মতভাবে বিয়ে করেন দুজনে। রীতি মেনে সামাজিক বিয়ে হবে এই মাসের শেষের দিকেই।
২০০৩ সালের ২২ এপ্রিল যখন সোনালির উফর অ্যাসিড আক্রমণ হয় তখন তিনি অষ্টাদশী। বাড়ির ছাদে শোয়া একটা রাত পুরোপুরি বদলে দিল সোনালির জীবন। ছাদে শুয়ে ঘুমনোর সময় আচমকাই মুখের উপর তরল কিছুর ছিটেয় তার মাংস ঝলসে দিচ্ছে বুঝতে পারল সোনালি। যন্ত্রণায় চিৎকার করছিল সোনালি।
মুখ, গলা, বুকের ডানদিকের মাংস যেন নিমেষেই গলে গেল। এই ঘটনার জন্য দায়ী ৩ জন। যাদের মধ্যে একজন বিবাহিত।
সোনালির বাবা চণ্ডীদাস মুখোপাধ্যায় মেয়ের চিকিৎসার খরচ মেটাতে এবং আইনি লড়াই লড়তে গিয়ে জমিজমা, গয়নাগাটি বেচে সর্বশান্ত হলেন। প্রায় ১০-১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল। দেনাও হয়েও গিয়েছিল অনেক। টাকার দরকার ছিল।
সমস্ত প্রতিকুলতা সত্ত্বেও গত ১০ বছরে সোনালির শরীরে ২৫টি পুনর্গঠনমূলক অস্ত্রোপচার হয়। ডান কান দিয়ে এখনও শুনতে পাননা সোনালি। কানের জায়গায় শুধুই ছোট্ট একটা মাংসপিণ্ড। সোনালির ছোট বোনের হাতে ও পায়ে অ্যাসিডের দাগ রয়েছে। কিন্তু অনেক আগেই তার বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
Hello everyone our dear sonali got married to Mr.chitta ranjan tiwari at bokaro distt courts we wish her a very happy and prosperous married life ahead.
Posted by Help sonali mukherjee acid attack victim on Wednesday, April 15, 2015
২০১২ সালে সোনালির ঘটনা সামনে আসে যখন অমিতাভ বচ্চনের কউন বনেগা কড়োরপতি অনুষ্ঠানে লারা দত্তের সঙ্গে অংশ নেন। জাতীয় সংবাদের শিরোনামে চলে এসেছিলেন সোনালি। আইনি মামলা ও চিকিৎসার জন্য খরচে ডুবে যাওয়ার পর ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বোকারোর সরকারি স্কুলে চাকরি পেয়েছেন।
সোনালির বিবাহিত জীবন সুখের হোক আমাদের এই কামনা ও নবদম্পতির জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল।