আরুষি হত্যাকাণ্ড : 'অভিযুক্ত' মা-বাবা নির্দোষ, বিশ্বাস তদন্তকারী আধিকারিকের
নয়াদিল্লি, ৬ অক্টোবর : ২০০৮ সালের আরুষি তলোয়ার হত্যাকাণ্ডের থেকে অণুপ্রাণিত ছবি "তলোয়ার" মুক্তি পাবার পর থেকেই এই মামলা নিয়ে নতুন সব জল্পনা তৈরি হয়েছে। গত ৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার এত সিবিআই আধিকারিক যিনি এই মামলাপ প্রাথমিক সিবিআই দলের নেতৃত্বে ছিলেন, জানালেন, তাঁর বিশ্বাস আরুষির বাবা রাজেশ এবং মা নুপুর তলোয়ার নির্দোষ।
তলোয়ার ছবিতে অভিনেতা ইরফান খান যাঁর চরিত্রে অভিনয় করেছেন সেই যুগ্ম অধিকর্তা অরুণ কুমার বারবার একথা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কোনও প্রমাণ রাজেশ ও নুপুরের বিরুদ্ধে পাওয়া যায়নি। যদিও রাজেশ তলওয়ার ও নুপুর তলোয়ার বর্তমানে নিজের মেয়েকে খুনের অভিযোগে দিল্লির কাছে দসনা জেলে রয়েছেন। [ তলোয়ার দম্পতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল সিবিআই আদালত]
বর্তমানে অরুণ কুমার কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশ বাহিনীতে রয়েছেন। অরুণ কুমারের কথায়,"আমার এই বিশ্বাসের পিছনে অনেক কারণ আছে। প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, খুনীরা ধরে নিতে পারে না যে হেমরাজের মৃতদেহ প্রথমদিনে পাওয়া যাবে না।"
আরুষির মৃতদেহ উদ্ধারের পরের দিন পুলিশ নয়ডার ওই একই বাড়ির ছাদ থেকে হেমরাজের মৃতদেহ উদ্ধার করে। অরুণবাবুর কথায়, "এই মামলায় কখনও ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তা করা হলে, অনেক সহজেই মামলা জট খোলা যেত।"
এই মামলায় দুটি সিবিআই দল তদন্ত করেছে। প্রথম সিবিআই দলটি বলেছে, তলোয়ার পরিবারের পরিচারক আরুষিকে খুন করেছে। দ্বিতীয় সিবিআই দল বলেছে, হেমরাজের সঙ্গে বিব্রতকর অবস্থায় আরুষিকে দেখে ফেলার জন্যই মেয়েকে খুন করেন তলোয়ার দম্পতি। কিন্তু সিবিআই-এর দুই দলের কোনও সদস্যই এই মামলার তদন্তে দুতরফের মতবিরোধ নিয়ে আজ পর্যন্ত মুখ খোলেনি। [ আরুষি হত্যা মামলায় তলোয়ার দম্পতিকেই দোষী সাব্যস্ত করল আদালত]
অরুণ বাবুর যুক্তি, "তলোয়ার পরিবারের পরিচারক কৃষ্ণ আরুষি এবং হেমরাজ উভয়কে খুন করেছে। কৃষ্ণ এবং রাজকুমার মিলে কিশোরী আরুষিকে হেনস্থা করছিল, হেমরাজ প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় তাকে খুন করে কৃষ্ণ।"
কিন্তু নয়া সিবিআই ডিরেক্টর অশ্বিন কুমার এই মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর এই যুক্তি নস্যাৎ করেন।
দুই অধিকর্তার লড়াইয়ের কারণেই কি এই মামলার জটিলতা এখনও রয়ে গিয়েছে? যা 'তলোয়ার' ছবিটিতেও দেখানো হয়েছে। যদিও এপ্রসঙ্গে অরুণ কুমার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, দ্বিতীয় দলটি তদন্ত শেষ করার পর তাঁর থেকে এবিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। "আমি তখনও জানিয়েছিলাম তলোয়ার দম্পতি যে অপরাধী তার কোনও তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।"