মাশারত আলমের সাত দিনের পুলিশ হেফাজত, বদলে হুমকি গিলানির
শ্রীনগর, ১৮ এপ্রিল : হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির পথসভায় পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে ভারতবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে গতকালই মাশারত আলমকে গ্রেপ্তার করেছে জম্মু-কাশ্মীর সরকার। আদালত তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে গৃহবন্দি করা হয়েছে খোদ গিলানিকেও।
যদিও তাতে উপত্যকায় শান্তি কতটা ফিরবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। মাশারতের গৃহবন্দি থাকাটা যে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা কোনওভাবেই মেনে নেবেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন গিলানি নিজে। তিনি বিক্ষোভের সুরে জানিয়েছেন, "কাশ্মীরের গণতন্ত্রের পক্ষে স্লোগান দিয়ে মাশারত আলমকে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। এই ঘটনা আমাদের টলাতে পারবে না। যদি স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করা অপরাধ হয় তাহলে একই ঘটনা আমরা আবার ঘটাবো।" একইসঙ্গে তাঁক হুঁশিয়ারি এরকম করা থেকে পৃথিবীর কোনও শক্তি তাঁদের আটকাতে পারবে না।
বস্তুত, মাশারত আলমকে মুক্তি দেওয়া বা তারপর ছেড়ে দেওয়া দুটি ঘটনাই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী কংগ্রেস তো বটেই, মাসারতকে জেল থেকে ছাড়া নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে সঙ্ঘ পরিবারও। কাশ্মীরে পিডিপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপির সরকার গড়ার প্রশ্নে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল সঙ্ঘের। কিন্তু বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ইচ্ছায় শেষ পর্যন্ত জোট সরকার গঠনে সম্মতি দেয় তারা। কিন্তু সেই জোট সরকারের কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ সঙ্ঘ।
সংঘের নেতাদের বক্তব্য, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি পিডিপি নেতৃত্বের নরম মনোভাবের ফলে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হচ্ছে। এর দায় গিয়ে পড়ছে জোটে থাকা বিজেপির উপরও। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়।
মাশারত আলমকে গ্রেপ্তারের জেরে গতকাল ব্যাপক অশান্তি ছড়ায় শ্রীনগরের নাওহট্টায়। সেখানে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় জনতার। মুখোশধারী বিক্ষোভকারীরা ভারতের পতাকা পোড়ায়। সংঘর্ষে দুজন পুলিশকর্মী সহ বেশ কয়েকজন লোক জখম হন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল মাশারত আলমকে মুক্তি দেয় জম্মু ও কাশ্মীরের মুফতি মহম্মদ সঈদের সরকার। এরপর গতকাল সকালে ফের তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।