২ কোটি বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে থাকছেন, রাজ্যসভায় জানাল কেন্দ্র
গত ১২ বছরে বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসে থাকা মানুষের সংখ্যায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে বলেও কেন্দ্র জানিয়েছে। অর্থাৎ ২ কোটির মতো বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে এদেশে এসে থাকতে শুরু করেছেন।
নয়াদিল্লি, ১৭ নভেম্বর : কেন্দ্রের তরফে রাজ্যসভায় জানানো হয়েছে যে প্রায় ২ কোটি বাংলাদেশি অবৈধভাবে এদেশে এসে পাকাপাকিভাবে বসবাস করছেন। ২০০৪ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ১ কোটি ২০ লক্ষের মতো। পরে তা বেড়ে প্রায় ২ কোটিতে পৌঁছেছে।
এদেশে যত বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে এসে পাকাপাকি থাকতে শুরু করেছেন, সেটি অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের মোট জনসংখ্যার সমান। গত ১২ বছরে বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসে থাকা মানুষের সংখ্যায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে বলেও কেন্দ্র জানিয়েছে।
রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান, বাংলাদেশি নাগরিকেরা বৈধ ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে এদেশে আসছেন। তারপরে ফেরত না গিয়ে এদেশেই থেকে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন অংশে তারা ছড়িয়ে পড়েছেন। ফলে একেবারে নিখুঁত সংখ্যা জানানো সম্ভব নয়। তবে ২ কোটির মতো বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে এদেশে এসে থাকতে শুরু করেছেন।
২০০৪ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল জানিয়েছিলেন, ২০০১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ কোটি ২০লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৫০জন বাংলাদেশি এদেশে এসে অবৈধভাবে থাকতে শুরু করেছেন। সেই সময়ে অসমে ৫০ লক্ষ ও পশ্চিমবঙ্গে ৫৭ লক্ষ বাংলাদেশি থাকছিলেন বলে কেন্দ্র জানিয়েছিল। সেই সংখ্যাটিই একদশকে ২ কোটিতে পৌঁছেছে বলে কেন্দ্রের তরফে এবার জানানো হয়েছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে যে সংখ্যাটা প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি পৌঁছেছে তা বলাই বাহুল্য।
কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, আগের ইউপিএ সরকারের মতো এনডিএ সরকার তথ্য গোপন রাখবে না। খুব সচেতনভাবেই ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা কেন্দ্র জানিয়েছে। আগামিদিনেও কেন্দ্র এবিষয়ে তথ্য গোপন করবে না।
তবে এতজন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে কিনা সেইবিষয়ে কোনও পদক্ষেপের কথা জানাননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তিনি জানিয়েছেন, এটি দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা। সকলকে বেছে, ধরে নিয়ে দেশে ফেরত পাঠাতে অনেকটা সময় লাগবে। এক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
গত মে মাসে অসমে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল জানিয়েছেন নাগরিকদের নতুন রেজিস্টার তৈরি করে আগামী ২ বছরের মধ্যে অসমের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি সিল করে দেবেন। যদিও বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসে বসবাসকারী অবৈধ নাগরিকদের নিয়ে কোনও অবস্থান নেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।