শনি-রবিবারও 'ব্রা' পরে থাকুন স্ত্রী, স্বামীর আব্দারে ক্ষিপ্ত স্ত্রী শরণাপন্ন ইন্টারনেট ফোরামের
স্ত্রী শনি-রবিবারের মতো ছুটির দিনেও সবসময়ে ব্রা পরে থাকুক চান স্বামী। এমন আব্দারে ক্ষিপ্ত স্ত্রী শরণাপন্ন হলেন ইন্টারনেট ফোরামের।
ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। এই নিয়ে ফের এক অভূতপূর্ব বিতর্ক সামনে এল। স্বামীর অবাক আব্দারে রীতিমতো ক্ষুব্ধ স্ত্রী। বিতর্কের ঝাঁঝ এতটাই চড়েছে যে তা এখন গড়িয়েছে ইন্টারনেটে মহিলাদের এক ফোরামে। ইংল্যান্ডের এই ঘটনায় ইন্টারনেট দুনিয়া রীতিমতো ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
'বিং মি প্লিজ' নামে একটি মহিলাকেন্দ্রিক ফোরামে এক বিবাহিত মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী চান তিনি শনিবার-রবিবারের মতো ছুটির দিনগুলোতেও বাড়িতে সবসময় 'ব্রা' পরে থাকুন। ফোরামের শরণাপন্ন হওয়া এই মহিলা একজন চাকুরিজীবী। তাঁর দাবি, ৫দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা অফিস করতে হয় তাঁকে। এই সময়টা সবসময়ই তাঁকে জামা-কাপড়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্তর্বাসও পরতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্তর্বাস পরে থাকলে তাঁর শারীরিক এবং মানসিক বিভিন্ন অসুবিধা হয়। প্রচণ্ড অস্বস্তিও হয়। কিন্তু, বাইরের দুনিয়ার লোকেদের সঙ্গে মিশতে গেলে তাঁকে নিজেকে সবসময় ভদ্র-সভ্য হিসাবেই তুলে ধরতে হয়। সুতরাং, কর্মস্থলে থাকাকালীন 'ব্রা' পরে থাকাটা তাঁর কাছে আবশ্যিক।
কিন্তু, এই মহিলার দাবি, সপ্তাহান্তে যখন বাড়িতে থাকেন তখন তিনি হাল্কা পোশাক-আশাক পরতে ভালবাসেন। এতে তাঁর নিজেকে 'রিফ্রেশ' লাগে। বাড়ির অন্দরমহলে থাকেন বলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি জামা-কাপড়ের তলায় অন্তর্বাস পরেন না। কিন্তু, আবার এমন পোশাক-আশাকও পরেন না যাতে তাঁকে দেখে কেউ অসভ্য বা বিকৃতমনস্ক বলবে। মহিলার অভিযোগ, তাঁর এই স্বাধীনতায় বাধ সেধেছেন তাঁর স্বামী। তাঁর দাবি, শনিবার-রবিবারের মতো ছুটির দিনে বাড়িতে থাকলেও তাঁকে 'ব্রা' পরে থাকতে হবে। কারণ, 'ব্রা' না পরলে স্ত্রী-র স্তন বিসদৃশ আকার নেয়।
স্বামীর এমন আব্দারে ক্ষিপ্ত স্ত্রী বিষয়টিকে নিয়ে গিয়েছেন 'বিং মি প্লিজ' বলে একটি ইন্টারনেট ফোরামে। স্ত্রী-র দাবি, তিনি কি পোশাক পরবেন সেটা তাঁর ইচ্ছে। তাঁর মতে, তাঁর স্তনের আকার অনেকটাই বড়। তাই সারাক্ষণ 'ব্রা' পরে থাকলে শারীরিকভাবে তিনি অস্বস্তি বোধ করেন। তিনি চান না ছুটির দিনে অন্তর্বাস পরে স্তনের স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করতে।
অভিযোগকারিনীর বক্তব্যে, প্রচুর মহিলা তাঁদের রায়ও জানিয়েছেন ওই ইন্টারনেট ফোরামে। যেমন এক মহিলা লিখেছেন, তিনি 'ব্রা' পরতে ভালবাসেন। কিন্তু, তার মানে এই নয় যে, স্বামী ঠিক করে দেবেন তাঁর কী পরা উচিত, কী পরা উচিত নয়।
অন্য এক মহিলার বক্তব্য, 'স্বামী অযৌক্তিক কথা বলছেন। স্তনের সঙ্গে একজন মহিলার হৃদয়ের সম্পর্ক রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা এটা মহিলাদের সম্পত্তি। সেখানে পুরুষদের নাক গলানো কেন?'
আর এক মহিলা লিখছেন, 'আপনার শরীর, আপনার মত- এখানে কোনও পুরুষ নির্দেশ দেওয়ার কে? সবচেয়ে বড় কথা আজ রবিবার এবং আমি ব্রা না পরেই বাড়িতে আছি'
অন্য এক মহিলা লিখছেন, 'ব্রা পরবেন, কি পরবেন না সেটা আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। পোশাকের সঙ্গে আবশ্যিক হল অন্তর্বাস পরা। কিন্তু, অন্তর্বাস পরাটা যদি অসুবিধাজনক মনে হয় তাহলে তা না পরাই ভাল'
এক মহিলার দাবি, 'আমি ব্রা পরতে ভালবাসি। এটা না পরলে মনে হয় আমার স্তন লোকচক্ষুর সামনে চলে এল। তবে ব্রা না পরাটা কোনও অসভ্যতা নয়। কেউ যদি তাঁর স্তনকে স্বাভাবিক আকৃতিতেই রাখতে পছন্দ করে তাহলে সেটা করার যথেষ্ট অধিকার তাঁর আছে।'
আরও এক মহিলা জানিয়েছেন, 'বাড়িতে আমি ব্রা ছাড়া থাকি। আমার স্তনও স্বাভাবিক আকৃতির থেকে বড় এবং আমি ব্রা পরে থাকাটাকে ঘৃণা করি'
আর এক মহিলা মারাত্মকরকমের অভিযোগ এনেছেন, তাঁর বক্তব্য, 'যে স্বামী চায় তাঁর স্ত্রী ব্রা পরে থাকুক, তাহলে সে কোনও স্বামী নয়। কারণ, স্বামীরা কি চায় না তাঁর স্ত্রীর নগ্ন শরীরটাকে কল্পনা করতে! স্বামীরা ভালমতোই জানেন ব্রা-না পরে থাকা অবস্থায় কী হয়।'
মহিলা ফোরামের এমন আলোচনার শেষে আবার রায়ও দেওয়া হয়েছে। এই রায়ে অধিকাংশ মহিলাই জানিয়েছেন, 'সমস্ত কিছু জানার পর স্বামী মানুষটি আপনার জন্য আমরা সকলেই দুঃখিত। কিন্তু এটা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আপনার দাবিকে ধর্তব্যের মধ্যেই আমরা আনছি না। '