For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

বিকট বোমার আওয়াজ, চাঁদার জুলুম - পশ্চিমবঙ্গে কালীপুজো এখন এক শ্রেণীর পেশি আস্ফালনের সময়

কালীপুজোর সময়ে শব্দদূষণ বা সিগানদার জুলুমবাজি নিয়ে প্রশাসনকে হাজার দুষলেও কোনও ফল হবে না যদ্দিন না পশ্চিমবঙ্গের আর্থ-সামাজিক স্বাস্থ্য ফিরছে

  • By SHUBHAM GHOSH
  • |
Google Oneindia Bengali News

বঙ্গদেশে দীপাবলী যেন এক আতঙ্কের উৎসব আজকাল। যদিও আদর্শ কালীপুজো এবং দীপাবলী বলতে বোঝানো হয় আলোর উৎসব, কিন্তু বঙ্গের অত্যুৎসাহী শ্রেণীর কাছে এ যেন তাণ্ডব প্রদর্শনের ছাড়পত্র। সরকারি বা বেসরকারি নানা মহলে বারবার কালীপুজোর সময়ে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে আওয়াজ ওঠে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা শব্দাসুরের প্রবল কণ্ঠস্বরের আড়ালেই ঢাকা পড়ে যায়। শব্দ ছাড়াও রয়েছে বায়ুদূষণ। তা নিয়েও হেলদোল নেই বিশেষ কোনও প্রশাসনিক স্তরে।

আর এই দুই শত্রুর পাশে রয়েছে আরও এক উপদ্রব - চাঁদা। চাঁদা নিয়ে জুলুমবাজি পশ্চিমবঙ্গে আজকাল এক উৎসবকালীন সামাজিক বিপর্যয়। দিতেই হবে, না দিলে মারধর, বাড়িতে চড়াও হয়ে আক্রমণ - এটাই এখন বঙ্গজীবনের অনিবার্য অঙ্গ।

বঙ্গের কালীপুজো এখন এক শ্রেণীর পেশি আস্ফালনের সময়

এই যে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ - তা সে সময়ে অসময়ে বিকট আওয়াজের বোমা ফাটিয়েই হোক বা চাঁদা নিয়ে অত্যাচার করেই হোক -- বোঝায় আজ বঙ্গীয় জীবনে নৈরাজ্য কত বড় ভূমিকা পালন করে। এই আচরণ নিয়ে সাধারণ মানুষ যতই অতিষ্ঠ হয়ে উঠুক এবং প্রশাসনকে গালমন্দ করুক, এর পিছনে যে আর্থ-সামাজিক কারণ রয়েছে এবং তার যদ্দিন পর্যন্ত না কোনও সমাধান হচ্ছে, এই যন্ত্রনা থেকে কোনও মুক্তি নেই আমজনতার।
একটি কারণ অবশ্যই কাজের অভাব।

হাতে কাজ নেই এক বিপুল সংখ্যক তরুণের

পশ্চিমবঙ্গে আজ বিপুল সংখ্যক কমবয়সী মানুষের হাতে কাজ নেই এবং তাদের উৎপাদনশীলতা আজ এই উৎসবের মত্ততার মধ্যে দিয়ে পরিপূর্ণতা পায়। ব্যাপারটা যথেষ্ট দুর্ভাগ্যপূর্ণ কিন্তু বাস্তবিকও। দুর্গাপূজা আজ একদিকে যেমন একটি ইন্ডাস্ট্রি যেখানে প্রচুর প্রশিক্ষিত ছেলেমেয়ে নিজেদের শৈল্পিক সত্ত্বা দেখিয়ে কিছু হলেও নাম এবং পয়সা কামায়, সেখানে কালীপুজো হয়ে উঠেছে যেন 'সাব-অল্টার্ন'দের পেশি আস্ফালনের মোক্ষম সুযোগ।

কালীপুজো এখন 'পিছিয়ে পড়া'দের 'এগিয়ে আসার' দিন

কালীপুজো একদিন হওয়ার কারণে শিল্প প্রদর্শনীর বিশেষ সুযোগ নেই কিন্তু রয়েছে দেদার যথেচ্ছাচার করার এবং বোমা-বাজি-মদ ইত্যাদির সংযোগে তা যেন এক মাহেন্দ্রক্ষণে পরিণত হয়। 'আলোর উৎসবের নান্দনিকতা' তো ভদ্র শ্রেণীর পোশাকি ভাষা, আদতে কালীপুজো এখন সমাজের ওই পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর 'এগিয়ে আসার' সময়। আর বছরে এই একটিই এগিয়ে আসার সময়ের সদ্ব্যবহার যে তারা করবে তাতে আর সন্দেহ কী?

পুলিশ প্রশাসনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই কারণ এই বিপুল জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তাদের নেই। আর মানুষের মাথায় শুভচিন্তার উদ্রেক ঘটানোর মতো সমাজ সংস্কার করা তাদের কম্মো নয়। তাই ওই কিছু ধরপাকড় করা ছাড়া তারা আর কোনও সাহায্য করতে পারবে না।

চাঁদার জুলুম বোঝায় অর্থনীতির হাল

চাঁদার জুলুমও এই আর্থ-সামাজিক সমস্যার আরেকটি পরিচায়ক। কানে তালা লাগানো বোমার আওয়াজ করার মধ্যে যেমন সিস্টেমকে না মানার এক হুঙ্কার রয়েছে, তেমনি চাঁদা নিয়ে জুলুম জানান দেয় এই রাজ্যের শোচনীয় অর্থনীতির চিত্রটিকে। যারা জুলুম করে, তাদের কাছে এই উৎসবের মরশুমই প্রধান আশা কারণ বছরের বাকি সময়টাতে তাদের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু থাকে না।

শিল্পহীন রাজ্যে আর কী বা ভালো অবস্থা হবে? আর পাশাপাশি, এই মানুষগুলো চাঁদা নিয়ে জুলুম করার সাহস পায় রাজনৈতিক মদত থাকার কারণে। কারণ রাজনৈতিক দলগুলির এই স্থানীয় লোকবল প্রয়োজন হয় নির্বাচনের মরশুমে। 'আমরা ভোটে আছি, তোমরা পুজোয় থাকো' - এই দেনাপাওনার সমীকরণের মাঝে পিষে যায় সাধারণ মানুষ।

অতএব, যদ্দিন না পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির স্বাস্থ্য সার্বিকভাবে ফিরছে আর রাজনীতির করাল গ্রাস থেকে রাজ্যটি মুক্ত হচ্ছে, তদ্দিন এই নিয়মকেই ভাগ্য হিসেবে মেনে নিতে হবে আপামর বঙ্গবাসীকে।

'অসভ্য'রা 'সভ্য' তখনই হবে যখন অভাব - অর্থনৈতিক ছাড়াও সামাজিক - পুরোপুরি মিটবে।

English summary
Be it excess noise pollution or forced donation, West Bengal's problem lies in society and economy
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X