মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: নর্থ ক্যারোলাইনার লড়াই যে জিতবেন, মুকুট তাঁর
আগামী ৮ তারিখে নর্থ ক্যারোলাইনার যুদ্ধ যিনি জিতবেন, হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রবেশ পাকা; সেই জন্যেই শেষ লগ্নেও হিলারি এই রাজ্যে এগিয়ে থাকলেও ট্রাম্প শিবিরও আশা ছাড়ছে না
বৃহস্পতিবার (নভেম্বর ৩) এবারের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দুই পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলাইনা (এনসি) রাজ্যে প্রচার সারলেন। এবারের নির্বাচনে এই রাজ্যটি অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ। বলতে গেলে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ক্লিন্টন এনসি রাজ্যে সামান্য হলেও ধারাবাহিকভাবে ট্রাম্পের থেকে এগিয়ে রয়েছেন। গত বুধবার (নভেম্বর ২) কানেক্টিকাট রাজ্যের কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত একটি প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষায় বলা হয় যে ৪৮ শতাংশ পেয়ে হিলারি তাঁর রিপাবলিকান প্রতিপক্ষের থেকে দুই শতাংশ নম্বরে এগিয়ে রয়েছেন।
অর্থাৎ, রিপাবলিকানদের শক্ত ঘাঁটি এই এনসি প্রদেশের ১৫ ইলেক্টোরাল ভোট যদি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি জিততে পারেন, তাহলে তিনি হোয়াইট হাউস দখল করার লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে যাবেন।
এখানে জানিয়ে রাখা ভালো যে গত ৪৪ বছরে এনসি-তে ডেমোক্র্যাটরা মাত্র দু'বার জিতেছেন (১৯৭২ সালে জিমি কার্টার এবং ২০০৮ সালে বারাক ওবামা)। গতবারের নির্বাচনে ওবামা জিতলেও এনসি-তে তিনি তাঁর রিপাবলিকান প্রতিপক্ষ মিট রমনির কাছে মাত্র দুই অঙ্কে পরাজিত হন এই রাজ্যে।
এবছর
ট্রাম্পের
স্বপ্ন
সফল
হতে
গেলে
তাঁকে
এনসি-তে
জিতে
দেখাতেই
হবে।
আর,
রিপাবলিকানদের
ঘাঁটিতেই
যদি
তিনি
ম্যাচ
বের
করতে
ব্যর্থ
হন,
তাহলে
কলোরাডো,
নেভাদা,
নিউ
হ্যাম্পশায়ার,
পেনসিলভানিয়া
ইত্যাদি
রাজ্যে
তাঁর
লড়াই
ভীষণ
কঠিন
হয়ে
দাঁড়াবে।
তাই
প্রয়োজনীয়
২৭০টি
ইলেক্টোরাল
ভোট
পেতে
ট্রাম্পকে
এনসি
জিততেই
হবে।
আর
সেটা
ট্রাম্প
শিবির
খুব
ভালো
করেই
জানে।
"ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহায়ো এবং আইওয়া এই চারটি রাজ্য আমাদের জিততেই হবে এবং আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমরা এগুলি জিতবই। এই চারটি রাজ্য জেতার পর আমরা মনোনিবেশ করব অন্যান্য সুইং রাজ্যগুলিতে জয়ের ব্যাপারে," সম্প্রতি বলেন ট্রাম্পের সহ ক্যাম্পেন ম্যানেজার ডেভিড বসি, সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদনের মতে।
কিনতু বাস্তবে এই রাজ্যে এগিয়ে রয়েছেন ক্লিন্টনই। বা বলতে গেলে, এনসি-তেই এ বছর ক্লিন্টনের সাফল্য এখন পর্যন্ত সেরা, বলছে সিএনএন। এই চ্যানেলটির মতে, ক্লিন্টন যদি এনসি পকেটে পুরে ফেলেন, তাহলে ট্রাম্প আর অন্যান্য নানা প্রদেশ জিতলেও তাঁর প্রাপ্ত ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা ২৪৪ পেরোবে না। তাই এনসি বিনে ট্রাম্প এবং রিপাবলিকানদের গতি নেই।
নর্থ ক্যারোলাইনার কৃষ্ণাঙ্গ ভোট খুব গুরুত্বপূর্ণ
এনসি-তে নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করছে সেই রাজ্যের আফ্রিকান-আমেরিকান ভোটারদের উপর। যদিও ২০০৮ এবং ২০১২ সালের তুলনায় এবারে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটদের জনপ্রিয়তা একটু নিম্নগামী, কিনতু হিলারি জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি ওবামা এবং ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার সাহায্যে তাঁদের সমর্থন পাওয়া নিশ্চিত করতে।
২০০৮ সালে ওবামা এই রাজ্যেই জেতেন আর ২০১২ সালেও একটুর জন্য জয় তাঁর হাত থেকে ফস্কায়।
গত সপ্তাহে এনসি রাজ্যে হিলারি এবং মিশেল যৌথ প্রচার করেন আর গত বুধবার রাষ্ট্রপতি স্বয়ং ওই রাজ্যে হিলারির হয়ে বক্তব্য রাখেন। এনসি-র একটি রেডিও সাক্ষাৎকারেও রাষ্ট্রপতি বলেন যে ওই রাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের ভোট দেওয়ার হার যদি ২০১২ সালের মতোই হয়, তাহলে হিলারির জয় নিশ্চিত। তিনি নিজেও আবেদন জানান কৃষ্ণাঙ্গদের এবার ভোট দেওয়ার জন্য।
"না হলে, ২০০৮ এবং ২০১২ তে আপনারা যে ভোট দিয়েছেন, তাঁর কোনও মূল্যই থাকবে না," বলেন বারাক ওবামা।