ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি মিশিগানে হিলারিকে ধরে ফেললেন ট্রাম্প; পারবেন সেখানে রিপাবলিকানদের জেতাতে?
১৯৮৮ সালের পর মিশিগান প্রদেশে কোনও রিপাবলিকান প্রার্থী জেতেননি কিনতু এবার আশার আলো দেখাচ্ছেন ট্রাম্প; হিলারির সঙ্গে তাঁর এখন সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি চলছে এই রাজ্যে।
মার্কিন নির্বাচনের ঠিক দোরগোড়ায় এসে ক্রমেই জমে উঠেছে মিশিগান প্রদেশের লড়াই। মার্কিন সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, ৮ নভেম্বরের নির্বাচনের ঠিক প্রাক মুহূর্তে ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে ধরে ফেলেছেন তাঁর রিপাবলিকান প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্প।
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, দুজনের প্রাপ্ত অঙ্কই ৪৪ শতাংশ অথচ কয়েকদিন আগে পর্যন্তও হিলারি ট্রাম্পের থেকে বেশ কিছু অঙ্কে এগিয়ে ছিলেন ডেমোক্র্যাটদের এই ঘাঁটিতে। ইতিহাস বলছে ১৯৮৮ সালের পর (শেষ জিতেছিলেন জর্জ বুশ সিনিয়র) থেকে মিশিগান রাজ্যে কোনও রিপাবলিকান প্রার্থী জয় পাননি। সেখানে ট্রাম্পের এই উত্থান নির্দ্বিধায় উত্তর-পূর্বের এই প্রদেশের গুরুত্ব বেশ বাড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে।
কোনদিকে ঝুঁকবেন বাকি ১২ শতাংশ?
তাঁরা এও মনে করছেন যে বাকি ১২ শতাংশ ভোট (যদিও অনেকে বলেছেন যে তাঁরা বাকি দুই প্রার্থীদের মধ্যে একজনকে সমর্থন করবেন বা কাউকেই ভোট দেবেন না) ঠিক করে দেবে যে মিশিগানে ট্রাম্প রিপাবলিকানদের প্রায় তিরিশ বছর পরে জয় এনে দিতে পারবেন কি না।
মিশিগানে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা এগিয়ে থাকলেও রাজ্যস্তরে কিনতু রিপাব্লিকানরাই বেশি প্রভাবশালী
মজার কথা, মিশিগানে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের প্রাধান্য থাকলেও ওই রাজ্যে কিনতু রিপাবলিকানদের সমর্থন যথেষ্ট ভালো। ওই প্রদেশের গভর্নর রিক স্নাইডারও একজন রিপাবলিকান এবং সেখানকার আইনসভাতেও রিপাবলিকানরা বেশি প্রভাবশালী।
আর এই কারণেই যুযুধান দুই পক্ষী মিশিগানের প্রতি বিশেষ মনোনিবেশ করেছে। দুই প্রতিপক্ষ ছাড়াও তাঁদের পরিবারও নেমে পড়েছে মিশিগানের ভোটারদের মন জয় করতে।
ময়দানে নেমে পড়েছেন হিলারি এবং ট্রাম্পের পরিবারও
হিলারির স্বামী যথা প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিন্টন যেমন সম্প্রতি ঘুরে গিয়েছেন এই রাজ্যে, ট্রাম্পের ছেলেমেয়েরাও চষে বেড়িয়েছেন মিশিগান প্রদেশ। প্রচার চালিয়েছেন রিপাবলিকান দলের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী মাইক পেন্সও। এছাড়া দু'পক্ষই সেখানে বিজ্ঞাপনী প্রচারেও মন দিয়েছে। সব মিলিয়ে, মিশিগান এখন জমজমাট।
ট্রাম্প যদি মিশিগানে জিততে পারেন (এই রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা ১৬), তাহলে তা রিপাবলিকানদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে অনেকটাই। তাঁরা ঝাঁপাবে পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিন-এর মতো ডেমোক্র্যাট রাজ্যগুলি জিততেও। আর রিপাবলিকানরা যদি শেষ পর্যন্ত সত্যি এই জয়গুলি অর্জন করতে পারে, তাহলে ট্রাম্পের মিশন হোয়াইট হাউস অনেকটাই সম্ভবপর বলে মনে হবে।
তবে ট্রাম্পের উত্থান ঘটলেও মিশিগানে হিলারির অবস্থান যে দুর্বল হয়েছে তা নয়। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ব্যবধান কমলেও প্রাক্তন মার্কিন বিদেশসচিবের প্রাপ্ত অঙ্ক ধারাবাহিকভাবেই ভালো থেকেছে। বিশেষ করে, মিশিগানের কমবয়সী এবং কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাররা ট্রাম্পের থেকে হিলারিকেই বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করেছেন।