এবারের মার্কিন নির্বাচনে খরচ হয়েছে ২৬৫ কোটি ডলার, কিন্তু টিভি কোম্পানিগুলির ভাঁড়ার প্রায় শূন্যই!
ধনকুবের প্রার্থী থাকাতে এবারের মার্কিন নির্বাচনে যে বিপুল পয়সা খরচ হবে তা জানা কথাই কিন্তু ট্রাম্পের অভিনব প্রচার পন্থায় টিভি কোম্পানিগুলির মুনাফা হয়নি কিছুই
আচ্ছা বলতে পারেন, এই যে এত ঢাকঢোল পিটিয়ে মার্কিন মুলুকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তার খরচ ঠিক কত? একেই ধনী দেশ আমেরিকা,তার উপর এবার লড়ছেন ধনকুবের ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই খরচের অঙ্ক তা যে খুব খুব কম নয়, তা বলাই বাহুল্য।
সেন্টার ফর রেস্পন্সিভ পলিটিক্স (সিআরপি) নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণামূলক সংস্থা জানিয়েছে যে ২০১৬ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন যজ্ঞে মোট খরচের অঙ্ক ২৬৫ কোটি মার্কিন ডলার! মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ২০১২-র হিসেবে ১১ কোটি ডলার কম, বলেছে ইউএসএ টুডে-র একটি প্রতিবেদন।
তবে এবারের নির্বাচনী প্রচারে গতবারের তুলনায় বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা গিয়েছে, যা ইউএসএ টুডে-র প্রতিবেদনের মতে ট্রাম্পের কারণে হয়েছে। প্রথাগত টিভি বিজ্ঞাপনের বদলে ট্রাম্প তাঁর প্রচারে জোর দিয়েছেন ডিজিটাল এবং টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে।
ইউএসএ টুডে পরিসংখ্যান তুলে বলেছে ২০১২ সালে রিপাবলিকান পদপ্রার্থী মিট রোমনি এক লক্ষ বিরাশি হাজার নির্বাচনী বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করেছিলেন টিভিতে। এবছর জুন ৮ এবং অক্টোবর ৩০-এর মধ্যে ট্রাম্প সেখানে মাত্র ৬৮ হাজার টিভি বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করেন নিজের প্রার্থীত্বের সমর্থনে। তথ্যটি পাওয়া গিয়েছে নির্বাচন-সংক্রান্ত সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপন বিশ্লেষক সংস্থা ওয়েসলেয়ান মিডিয়া প্রজেক্ট।
সিআরপি-র মুখ্য আধিকারিক শেলিয়া ক্রামহোলজ ইউএসএ টুডেকে বলেন এ ব্যাপারে ট্রাম্পের সঙ্গে অন্যান্য বড় দলের প্রার্থীদের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
আর মেনস্ট্রিম মিডিয়াকে উপেক্ষিত রেখেই ট্রাম্পের এই বিশাল নির্বাচনী প্রচার প্রভাব ফেলেছে বড় সম্প্রচার সংস্থাগুলির উপরেও। যেমন সিনক্লেয়ার ব্রডকাস্ট গ্রুপ। ইউএসএ টুডে জানাচ্ছে যে ১৭৩ টি টিভি স্টেশন নিয়ন্ত্রণকারী এই সংস্থা যার ওহায়োর মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যেও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে, ট্রাম্পের এই অভিনব প্রচার কায়দার ফলে তার মুনাফা যথেষ্ট কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অথচ এ বছরের নির্বাচনে কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না, জানায় প্রতিবেদনটি। বিশেষ করে এবারে যখন রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে থাকা সব প্রার্থীই নতুন, সেখানে মিডিয়ার কাছে নির্বাচনটি ছিল মুনাফা বাড়ানোর এক বড় সুযোগ। কিন্তু ট্রাম্পের নয়া পন্থা তাতে জল ঢেলে দিয়েছে। "টিভি সংস্থাগুলি চার বছর পরে পরে আসা এই বিশেষ বছরটির দিকে তাকিয়ে থাকে ব্যবসায়িক লাভ বাড়াতে কিন্তু প্রার্থী নিজেই খরচ না করতে এবারে তাদের সে আশায় ছাই," ইউএসএ টুডেকে বলেন মিডিয়া বিশ্লেষক জ্যান ডসন।