(ছবি) যোগী আদিত্যনাথকে নিয়ে নানা অজানা তথ্য একনজরে
যোগী আদিত্যনাথ সম্পর্কে হঠাৎ করেই সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। কে এই যোগী আদিত্যনাথ যাকে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় রাজ্যের দায়ভার অর্পণ করল বিজেপি নেতৃত্ব। আসুন জেনে নেওয়া যাক।
উত্তরপ্রদেশের রাজপুত ঘরানায় জন্ম যোগী আদিত্যনাথের। সেখান থেকে প্রথমে মেধাবী ছাত্র, তারপর সন্ন্যাসী ও পরে রাজনেতা থেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এই সফর একেবারে অন্যরকম ছিল উত্তরপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসাবেই যার সুখ্যাতি ও কুখ্যাতি রয়েছে, তিনি উত্তরপ্রদেশের মতো দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য তথা ধর্মীয়ভাবে অনেকভাগে বিভক্ত রাজ্যের প্রধান হিসাবে কীভাবে রাজ্যপাট সামলান তা অবশ্যই দেখার বিষয়।
যে বিতর্কিত মন্তব্য বারবার শিরোনামে এনেছে উত্তরপ্রদেশের নয়া মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে
আরএসএস ঘেঁষা হিন্দুত্ববাদী নেতার নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক যে উথলে উঠেছে তা বলাই বাহুল্য। এহেন যোগী আদিত্যনাথ সম্পর্কে হঠাৎ করেই সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। কে এই যোগী আদিত্যনাথ যাকে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় রাজ্যের দায়ভার অর্পণ করল বিজেপি নেতৃত্ব। আসুন জেনে নেওয়া যাক।
আদিত্যনাথের জন্ম
১৯৭২ সালের ৫ জুন যোগী আদিত্যনাথের জন্ম। জন্মের সময়ে তাঁর নাম ছিল অজয় সিং বিস্ত। রাজনীতি ও সন্ন্যাসে আসার আগে মেধাবী ছাত্র ছিলেন আদিত্যনাথ। গণিতে স্নাতক ডিগ্রি তিনি অর্জন করেছেন।
সন্ন্যাসের পথে পা বাড়ানো
মাত্র ২১ বছর বয়সে পরিবার ছেড়ে পড়াশোনা ছেড়ে সন্ন্যাসের পথে পা বাড়ান অজয় সিং। গোরক্ষনাথ মঠের প্রধান মহন্ত অদ্বৈতনাথের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন তিনি। এরপরে ধীরে ধীরে সন্ন্যাসের পথেই হেঁটে অজয় সিং বিস্তের পরবর্তী নাম হয় যোগী আদিত্যনাথ।
সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষা
সেই গোরক্ষনাথ মঠে থেকেই সন্ন্যাসীর সমস্ত আচার শেখেন যোগী আদিত্যনাথ। গোরক্ষা, হিন্দু শাস্ত্রের অধ্যয়নের পাশাপাশি মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে গুরু অদ্বৈতনাথের সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য হয়ে ওঠেন আদিত্যনাথ।
মঠের প্রধান
অদ্বৈতনাথের পরে গুরু গোরক্ষনাথ মঠের প্রধানের দায়িত্ব বর্তায় আদিত্যনাথের উপরে। এছাড়াও স্কুল, কলেজ ও হাসপাতালের প্রধানেরও দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
রাজনীতিতে হাতেখড়ি
১৯৯৬ সালে যোগী আদিত্যনাথের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়। একেবারে প্রথমে অদ্বৈতনাথের নির্বাচনী ম্যানেজার ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে যখন অদ্বৈতনাথ রাজনীতি থেকে অবসর নেন, তখন আদিত্যনাথ তাঁর বদলে লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
দ্বাদশ লোকসভার সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ
১৯৯৮ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে দ্বাদশ লোকসভার সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসাবে যোগী আদিত্যনাথের হাতেখড়ি হয়। এরপরে ১৯৯৯, ২০০৪, ২০০৯ ও ২০১৪ সালে মোট পাঁচবার লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেছেন তিনি।
বিজেপির জয়ে অন্যতম কারিগর
বিজেপির হয়ে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে যোগী আদিত্যনাথ অন্যতম বড় নাম ছিলেন তাই নয়, উত্তরপ্রদেশের উত্তরে বিজেপিকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার পিছনেও সবচেয়ে বড় অবদান রয়েছে আদিত্যনাথের। বিজেপি যে ৩০০-র বেশি আসনে জয়লাভ করেছে, তাঁর কৃতিত্বের অন্যতম ভাগীদার আদিত্যনাথ।
সুচারু রাজনীতিক
হিন্দুত্ববাদী হিসাবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া ও তুলে ধরা যোগী আদিত্যনাথ হিন্দু ভোটের পাশাপাশি দলিত হিন্দুদের মনও একইসঙ্গে জয় করেছেন। ফলে হিন্দু ভোটকে একজায়গার আনার সুচারু কৌশল তাঁর এই নির্বাচনে কাজ করে গিয়েছে। ফলে সংখ্যালঘু ভোট বিপক্ষে গিয়েছে কিনা তা ততটা পার্থক্য তৈরি করতে পারেনি।
বিতর্কিত যোগী
পাচরুখিয়া ঘটনার পরে যোগী আদিত্যনাথের নাম বেশি করে সকলের সামনে আসে। ১৯৯৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সমাজবাদী পার্টি নেতা তলত আজিজের সভায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। অভিযোগ ওঠে আদিত্যনাথের অঙ্গুলিহেলনেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এইসময়ই আদিত্যনাথের সমর্থকেরা স্লোগান বাঁধে, "গোরক্ষপুর মে রহেনা হ্যায় তো যোগী যোগী কহেনা হ্যায়"।
যোগীর বিতর্কিত বাহিনী
২০০২ সালে আদিত্যনাথ 'হিন্দু যুব বাহিনী' তৈরি করেন। এই বাহিনী নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। কারণ এই বাহিনী গোরক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। তা নিয়ে নানা জায়গায় অশান্তি শুরু হয়। এছাড়া লাভ জিহাদ নিয়ে কড়া অবস্থান নেয় এই বাহিনী। এছাড়া ২০০৫ সালে হিন্দু ধর্মে মানুষকে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেন আদিত্যনাথ। এর ফলে জেলেও যেতে হয় তাঁকে।