জয়ললিতা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি সিংহভাগ মানুষ জানেন না
নব্বইয়ের দশকে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখার পর ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন সকলের প্রিয় আম্মা। নিচে দেখে নিন এমন কয়েকটি তথ্য যা জয়ললিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।
দক্ষিণ ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এআইএডিএমকে নেত্রী জে জয়ললিতা এক মহীরূহ। দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে বারবার উত্থানপতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। কখনও একেবারে সাফল্যের চূড়ায় উঠে গিয়েছেন তো কখনও অভিযোগের কারণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়েছেন। তবে একটি জিনিস যা কখনও কম হয়নি জয়ার জীবনে তা হল মানুষের ভালোবাসা।
সত্তর ও আশির দশকে দক্ষিণী সিনেমায় সবচেয়ে সফল অভিনেত্রী হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। সেইসময়ে তিনি যা পারিশ্রমিক পেতেন তা অনেকে কল্পনাও করতে পারতেন না। পরে নব্বইয়ের দশকে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখার পর ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন সকলের প্রিয় আম্মা। নিচে দেখে নিন এমন কয়েকটি তথ্য যা জয়ললিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।
দশম শ্রেণির পরীক্ষায় প্রথম জয়া
রাজনীতিতে নামার আগে অভিনয় জগতে সর্বোচ্চ আসনে পৌঁছন জয়ললিতা। তবে তারও আগে তিনি অসম্ভব মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তার পরিচয় দেন। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় জয়ললিতা গোটা তামিলনাড়ুতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এজন্য তিনি 'গোল্ড স্টেট' পুরস্কারও পান। চেন্নাইয়ে যে স্কুলে তিনি পড়তেন তার নাম চার্জ পার্ক কনভেন্ট। এছাড়া তিনি পড়াশোনার জন্য সরকারি স্কলারশিপও পেয়েছিলেন।
১৯৯৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে হার
জয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এটাই প্রথম এবং ওটাই শেষ পরাজয়। প্রথমবার তিনি ১৯৮৯ সালে ডিএমকে নেতা মুখুমানোকরণকে হারিয়ে প্রথমবার জেতেন। এরপরে মোট সাতবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন জয়া। একবার বাদে প্রতিবার বিপুল ভোটে জিতেছেন। একবার ১৯৯৬ সালে ডিএমকে প্রার্থী ইজি সুগাভনমের কাছে হেরে যান তিনি।
প্রথম কোনও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত
১৯৯১ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হন জয়ললিতা। ১৯৯৬ সালে পালিত পুত্র সুধাগরনের বিয়েতে দেড় লক্ষ লোক আমন্ত্রিত করে গিনেস বুকে নাম তোলেন জয়া। একইসঙ্গে সেই কারণেই পরের নির্বাচনেও হেরে যান। এরপরে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি রাখার কারণে চার বছরের সাজা হয় জয়ার। পরে ২০১৫ সালে তা থেকে মুক্তি পান তিনি। এছাড়াও ২০০৩ সালে প্লিসান্ট স্টে হোটেল মামলায়ও জয়া দোষী সাব্যস্ত হন। যদিও এর থেকেও পরে মুক্তি পান।
জয়ার দুটি নাম
প্রথমে জন্মের সময়ে ঠাকুমার নাম অনুযায়ী জয়ার নাম কোমলাবল্লী রাখা হয়। বাহ্মণ প্রথা মেনে ২টি মোট নাম দেওয়া হয়। একটি পারিবারিক প্রথা মেনে ঠাকুমার নাম ও সঙ্গে আর একটি নিজের নাম। ১ বছর বয়সে জয়ললিতা বলে নামকরণ হয় জয়ার। এই নামকরণের পিছনেও অদ্ভুত কাহিনি রয়েছে। মহীশূরে দুটি বাড়ি ছিল জয়ললিতার পরিবারের। একটি বাড়ির নাম ছিল 'জয়া নিবাস' ও অপর একটি বাড়িুর নাম ছিল 'ললিতা নিবাস'। দুটি মিলিয়ে নাম রাখা হয় জয়ললিতা।
তামিলনাড়ুর দ্বিতীয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী
১৯৮৪ সালে এমজিআর অসুস্থ হওয়ার পরে জয়ললিতা দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন। এই সময়ই দলে ভাঙন ধরে। অর্ধেক লোক চলে যান এমজিআরের স্ত্রী জানকী রামচন্দ্রণের দিকে। আর বাকী সমর্থকেরা জয়ার পক্ষে দাঁড়ান। সেইসময়ে জানকী রামচন্দ্রণ ১৯৮৮ সালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হন। তবে তিনি পূর্ণসময় পদে ছিলেন না। ১৯৯১ সালে ভোটে জিতে জয়ললিতা তামিলনাড়ুর প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে পূর্ণসময় পদে ছিলেন। সবচেয়ে কমবয়সে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ডও আম্মার দখলে।
কর্ণাটকে জন্ম
১৯৪৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মহীশূরের (বর্তমানে কর্ণাটক) মাণ্ড্য জেলার পাণ্ডবপুরা তালুকের মেলুকোটেতে এক তামিল আইয়েঙ্গার ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জয়রাম ও মায়ের নাম বেদবল্লী। নিজের জীবনের প্রথম দশ বছর জয়ললিতা কর্ণাটকেই কাটিয়েছেন এবং মা-কে ছাড়া। পরে চেন্নাইয়ে মায়ের কাছে পাকাপাকিভাবে চলে যান।