For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

জোট নয়, সমাজবাদী পার্টিকে দেখে আঞ্চলিক দলগুলির ভাবা উচিত উত্তরাধিকারের জট নিয়ে

কেন্দ্রীভূত রাজনীতিতে যে পরিবারতন্ত্রও নিরাপদ নয়, তা সমাজবাদী পার্টির অভ্যন্তরীণ কলহ প্রমাণ করছে; অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির ব্যক্তিকেন্দ্রিক নেতৃত্বর কাছেও এ এক সাবধানবাণী।

  • By SHUBHAM GHOSH
  • |
Google Oneindia Bengali News

উত্তরপ্রদেশে যাদবদের পরিবার-কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কলহ নিয়ে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) বিপর্যয়ের সম্মুখীন। দলপ্রধান মুলায়ম সিং যাদবের সঙ্গে তাঁর ছেলে তথা মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিং যাদবের যে ব্যক্তিত্বের সংঘাত শুরু হয়েছে, তাতে অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে দলটাই হয়তো ভেঙে যাবে।

আর সামনের বছরের গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি উত্তরপ্রদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল এসপি যদি এমনভাবে মুখ থুবড়ে পরে, তবে তা রাজ্য রাজনীতির গতিমুখই বদলে দেবে পুরোপুরি।

সমাজবাদী পার্টিকে দেখে আঞ্চলিক দলগুলির ভাবা উচিত!

এদিকে এসপি-র এই অভ্যন্তরীণ বিবাদে প্রমাদ গুনছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, মুলায়মের দলের মধ্যে এই গন্ডগোল আদতে ক্ষতি করছে বিজেপি-বিরোধী মঞ্চের। এতে 'ধর্মনিরপেক্ষ জোট'-এর পক্ষে এগোনো মুশকিল হয়ে পড়বে।

কিন্তু, মমতার মুখে রাজনৈতিক ক্ষতির কথা প্রাধান্য পেলেও বিরোধী সিপিএম মনে করছে তৃণমূল নেত্রী আসলে এসপি-র অবস্থা দেখে ভয় পাচ্ছেন তাঁর দলেও ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে কিনা।

ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলগুলির কাছে এ এক দুশ্চিন্তার বিষয় বটে

যদি নেত্রীর মাথায় সেই দুর্ভাবনা ঘুরপাক খেয়েই থাকে, তাতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। বলতে গেলে, ভারতের প্রত্যেকটি একনায়ক/একনায়িকার দলের এসপি-র অবস্থা দেখে চিন্তিত হওয়ারই কথা। ব্যতিক্রম, বিজেপি এবং সিপিএম।

ভারতীয় রাজনীতিতে যে ক'টি আঞ্চলিক দল রয়েছে, তার সবক'টিই ব্যক্তি এবং পরিবারকেন্দ্রিক। এদের বেশিরভাগেরই উত্থান কংগ্রেস দলের পতনের পরে।

কংগ্রেসের পতনের পর এই দলগুলির উত্থান, কিন্তু এদের রাজনীতি কংগ্রেসের ঢঙেই

ইন্দিরা গান্ধী যত কংগ্রেসকে কেন্দ্রীভূত দল বানিয়েছিলেন, ততই সেই দলের জনভিত্তি হারিয়েছে এবং সেই শূন্যতা পূরণ করেছে বিভিন্ন আঞ্চলিক দল। কিন্তু এই আঞ্চলিক দলগুলি নিজের নিজের রাজ্যে কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে গড়ে উঠলেও এদের গঠনপ্রণালী এবং কাজকর্ম কিন্তু সেই কংগ্রেসকেই নকল করে। অর্থাৎ, ব্যাক্তিকেন্দ্রিকতা এবং তার হাত ধরে পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি। এই দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্বও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাসী নন এবং উত্তরাধিকার প্রশ্নে বেছে নেন নিজের পরিবারেরই কাউকে।

কিন্তু এসপি দেখাল পরিবারতন্ত্রও নিরাপদ নয়

কিন্তু সপা-র বিপর্যয় দেখাল যে ক্ষমতার প্রশ্নে পরিবারবাদও নিরাপদ পন্থা নয়। কারণ ক্ষমতার কেন্দ্রিকরণের প্রশ্নে মতান্তর এবং সংঘাত দেখা দিতে পারে পরিবারের মধ্যেও। এসপি-র বৃহত্তর পরিবারের অন্দরমহলে রাজনীতিকে ঘিরে যে নাটক প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে, তা এই তত্ত্বকেই প্রতিষ্ঠা দেয়। ক্ষমতার প্রশ্নে পদবিও কোনও ব্যাপার নয়।

বৃহত্তম নেতার মৃত্যুর পরে ক্ষমতার লড়াই কোন পর্যায়ে যায় আগেও দেখে গিয়েছে দক্ষিণ ভারতে

ভারতের অন্যান্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেও এই একই বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে যে কোনওদিন। কারণ তারাও ক্ষমতার গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণের কথা কোনওদিন ভাবেনি। অতীতে দক্ষিণ ভারতে এডিএমকে প্রধান এমজিআর বা টিডিপি-র প্রতিষ্ঠাতা এনটিআর-এর মৃত্যুর পরে তাঁদের দলে কদর্য ক্ষমতার লড়াই আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আর সপা-র ক্ষেত্রে তো দলের প্রতিষ্ঠাতা মুলায়মের জীবদ্দশাতেই শুরু হয়ে গিয়েছে মুষলপর্ব।

পশ্চিম ভারতেও দেখা গিয়েছে শিবসেনা প্রধান বাল ঠাকরে নিজের পুত্র উদ্ধবকে উত্তরসূরী ঘোষণা করতে কীভাবে দল ছেড়ে বেরিয়ে যান ক্ষুব্ধ ভাইপো রাজ এবং নিজের আলাদা দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা তৈরি করেন।

উত্তরাধিকারের প্রশ্নের জবাব পাওয়া সহজ নয়

আর বর্তমানে তামিলনাড়ুতে জয়ললিতা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পরে প্রশ্ন উঠছে : বর্ষীয়ান এই নেত্রীর পর কে দলের হাল ধরবেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শারীরিকভাবে এখনও যথেষ্ট সুস্থ থাকলেও আর সবার মতো তাঁরও বয়স বাড়ছে। আর উত্তরাধিকারের প্রশ্ন তাঁর দলকেও একদিন ভাবাবে বলে অনেকের ধারণা। যদিও মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ভবিষ্যৎ তৃণমূল নেতা হিসেবে দেখছে অনেক মহল, কিনতু উত্তরাধিকারের প্রশ্নের জবাব রাজনৈতিকভাবে সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠা খুব একটা সহজ ব্যাপার যে নয় তার প্রমাণ চারপাশে ভুরিভুরি রয়েছে।

ওড়িশায় নবীন পট্টনায়ক, উত্তরপ্রদেশেরই আরেক বড় দল বহুজন সমাজ পার্টি বা বসপা-র নেত্রী মায়াবতী, বিহারে জেডিইউ এবং আরজেডি, দক্ষিণ ভারতে ডিএমকে, টিআরএস, জম্মু কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিডিপি ইত্যাদি প্রচুর উদাহরণ দেওয়া যায় রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে।

এই সমস্ত দলেই রয়েছে একজন একনায়ক বা একনায়িকা কিন্তু তার পরে আর কোনও মুখ নেই যা সর্বস্তরে পরিচিত। আর তাই বর্তমান নেতৃত্ব সরে গেলে দলের হাল কে সামলাবে সে নিয়ে অনিশ্চয়তার অন্ত নেই।

বিজেপির এই সমস্যা অতটা প্রকট নয়

বিজেপির এই সমস্যা নেই কারণ ওই দলটির কাজকর্ম ক্যাডারভিত্তিক, বামেদের মতোই। কিন্তু বর্তমান সময়ে বামেরা আদর্শগত এবং সাংগঠনিক কারণে অনেকটাই পিছিয়ে পড়লেও বিজেপি তার রাজনৈতিক কেরিয়ারের মধ্যগগনে।

উত্তরাধিকারের প্রশ্ন যে বিজেপিকে ভাবায় না তা নয় (বাজপেয়ী-আদবানির পরে নরেন্দ্র মোদীর উত্থান যে খুব মসৃণ হয়েছিল, তা নয়) কিন্তু পরিবারতন্ত্রের ছায়া না থাকাতে দলটিতে ক্ষমতার সংঘাতের সমাধান খোঁজা হয় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে, ব্যক্তির একপেশে সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে নয়।

শীর্ষ নেতারা অমর নন যেহেতু, তাই তাঁদের ভাবার প্রয়োজন

তাই ধর্মনিরপেক্ষ জোটের কথা আপাতত শিকেয় তুলে এই আঞ্চলিক দলগুলির নেতৃত্বের ভাবা উচিত উত্তরাধিকারের প্রশ্ন নিয়ে ভাবা যাতে তাঁদের পরবর্তী সময়ে তাঁদের অনেক কষ্ট করে তৈরি দলটিই যেন গৃহযুদ্ধে ছারখার না হয়ে যায়।

জওহরলাল নেহরুর জীবদ্দশায় "তাঁর পর কে?" প্রশ্ন উঠেছিল অনেকবারই এবং তাঁর মৃত্যুর পরেও আমরা লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মতো যোগ্য উত্তরসূরি পেয়েছিলাম। যদিও শাস্ত্রী বেশিদিন বাঁচেননি এবং ক্ষমতা ফিরে যায় নেহরু-গান্ধী পরিবারের হাতেই, কিন্তু সেই পরিবারটির রাজনীতিও আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। একের পর এক নির্বাচনে হেরেও পরিবারতন্ত্রের মন্দচক্র থেকে বেরোতে পারছে না।

আঞ্চলিক নেতারা যদি এই মুহূর্তে এই বিষয়টি নিয়ে না ভাবনাচিন্তা করেন, তবে তাঁদের সমর্থকদের ঘোর দুর্দিন আসন্ন।

English summary
Samajwadi Party's internal crisis a warning for India's all one-man political parties
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X