For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

মাদার টেরেসার 'অ্যাগনেস' থেকে 'সন্ত' হওয়ার কাহিনি জেনে নিন একনজরে

  • By Oneindia Bengali Digital Desk
  • |
Google Oneindia Bengali News

নিজের জীবন কাহিনি ও সেবাধর্ম দিয়ে আজন্ম উচ্চ-নীচ সকলকে আপন করে নিয়েছিলেন মাদার টেরেসা। গরিব-আর্ত, সর্বহারাদের সেবায় নিজেকে শেষদিন পর্যন্ত নিয়োজিত করেছিলেন তিনি। মাদার ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বরের দূত। যাদের সমাজে কোনও স্থান ছিল না, তাঁদের সযত্নে নিজের কোলে আশ্রয় দিয়েছিলেন আলবেনিয়া থেকে ভারতে আসা এক সন্ন্যাসিনী। ['বিটিফিকেশন' থেকে 'ক্যানোনাইজেশন', সন্ত হতে যে পথ পেরলেন মাদার টেরেসা]

নিজের ছোটবেলা থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, সন্ন্যাস নিয়ে গরিব-আর্তদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন। আর সেটা ভেবেই সুদূর আলবেনিয়া ছেড়ে সেবার টানে ভারতে এসে পৌঁছন তিনি। আর এই রাজ্যকে, এই শহরকে ভালোবেসে এখানেই আমৃত্যু থেকে গিয়ে সারা বিশ্বের কাছে কলকাতাকে উপরে তুলে ধরেছিলেন তিনি।

মাদার দুঃখ জয় করে সর্বহারাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন। নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছিলেন বঞ্চিত-নিপীড়িতদের। এহেন মাদার কীভাবে অ্যাগনেস থেকে হয়ে উঠলেন 'সন্ত' তা জেনে নিন একনজরে।

মাদারের জন্ম

মাদারের জন্ম

১৯১০ সালে আলবেনিয়ার স্কোপজে শহরে জন্মগ্রহণ করেন মাদার টেরেসা। বর্তমানে এটি ম্যাসেডোনিয়া রিপাবলিকের অন্তর্গত। সেইসময়ে এটি ছিল ওটোম্যান সাম্রাজ্যের অধীন। জন্মের সময়ে তাঁর নাম ছিল অ্যাগনেস। মাত্র ৮ বছর বয়সে তিনি তাঁর বাবাকে হারান।

ছোট্ট বয়লেই সন্ন্যাসিনী হওয়ার সিদ্ধান্ত

ছোট্ট বয়লেই সন্ন্যাসিনী হওয়ার সিদ্ধান্ত

ছোট্ট অ্যাগনেস অল্পবয়স থেকেই সন্ন্যাসিনীদের জীবন-কাহিনি শুনে বড় হচ্ছিল। বাংলায় কীভাবে গরিব-গুর্বোদের সেবা করা হয়, আর্তদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জীবনযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করা হয় তা তিনি জেনেছিলেন। ফলে মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন সন্ন্যাসিনী হয়েই আর্তের সেবা করবেন তিনি।

আর্তের টানে গৃহত্যাগ

আর্তের টানে গৃহত্যাগ

এরপরে ১৯২৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করেন তিনি। যোগ দেন আয়ারল্যান্ডের লরেটো সন্ন্যাসিনীদের সংস্থায়। সেখানে ইংরেজির মাধ্যমে ভারতের শিশু-আর্তদের শিক্ষিত করা হতো। অ্যাগনেস ইংরেজি জানতেন না। তাই ইংরেজি শিখতেই তিনি সেখানে ভর্তি হন।

ভারতে পদার্পণ

ভারতে পদার্পণ

এরপরে ১৯২৯ সালে ভারতের মাটিতে পা রাখেন মাদার। এবং দার্জিলিংয়ে কাজ শুরু করেন। সেখানেই তিনি বাংলা শেখেন এবং সেন্ট টেরেসা কনভেন্ট স্কুলে পড়াতে শুরু করেন।

স্কুলে পড়ানো শুরু

স্কুলে পড়ানো শুরু

১৯৩১ সালে সন্ন্যাসিনী হিসাবে নিজের প্রথম পদক্ষেপ করেন। এরপরে এসে তিনি কলকাতার এন্টালিতে লরেটো কনভেন্ট স্কুলে পড়ান এবং ১৯৪৪ সালে তিনি তার প্রধানশিক্ষিকা নির্বাচিত হন।

আর্তের সেবা চালু

আর্তের সেবা চালু

পড়ানোর ফাঁকেই সিস্টার অ্যাগনেস আর্তদের সেবা চালিয়ে যেতে থাকেন। কলকাতা ও আশপাশের দরিদ্র, অনাথ শিশুদের তিনি কাছে টেনে নেন। ১৯৪৩ সালে কলকাতায় দুর্ভিক্ষের সময়ে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এরপরে ১৯৪৬ সালেও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় শহর কলকাতা ক্ষতবিক্ষত হয়।

সিস্টার টেরেসা হয়ে ওঠেন মাদার

সিস্টার টেরেসা হয়ে ওঠেন মাদার

এরপরই ১৯৪৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর দার্জিলিং থেকে কলকাতা ফেরার পথে নিজের অন্তরের ডাক শুনতে পান টেরেসা। তখনই ঠিক করেন, একেবারে সব ছেড়ে গরিব আর্তদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন। আর এভাবেই সিস্টার টেরেসা হয়ে ওঠেন 'মাদার টেরেসা'।

ভারতের নাগরিকত্ব

ভারতের নাগরিকত্ব

১৯৪৮ সালে লরেটো স্কুলের কনভেন্ট বেশভূষা ছেড়ে নীল পাড় সাদা শাড়িতে নিজেকে বদলে ফেলেন মাদার। ভারতের নাগরিকত্বও গ্রহণ করেন তিনি।

মাদারের প্রথম জীবনের মানসিকতা

মাদারের প্রথম জীবনের মানসিকতা

মাদার একজায়গায় বলেছেন, কীভাবে জীবনের প্রথমদিকে তাঁর কোনও কাজ ছিল না। প্রায় দোরে দোরে খাবার ও আশ্রয়স্থল ভিক্ষা করে বেড়িয়েছেন তিনি। একাকী নিঃসঙ্গ অ্যাগনেসের মাঝে মনে হয়েছিল, সব ছেড়ে আগের স্বস্তির জীবনেই তিনি ফিরে যাবেন কিনা।

মিশনারিজ অব চ্যারিটি স্থাপন

মিশনারিজ অব চ্যারিটি স্থাপন

১৯৫০ সালের ৭ অক্টোবর ভ্যাটিকানের অনুমতি নিয়ে মিশনারিজ অব চ্যারিটি স্থাপন করেন মাদার। ক্ষুধার্ত, নগ্ন, গৃহহীন, আর্ত, নিপীড়িত, সর্বহারা, সমাজবর্জিত মানুষের পাশে তিনি দাঁড়ান পরম মমতাময় স্নেহ নিয়ে।

মিশনারিজের পথ চলা

মিশনারিজের পথ চলা

কলকাতায় মাত্র ১৩ জন সিস্টার নিয়ে যে মিশনারিজ পথ চলা শুরু করেছিল, আজ সেটিই বিশ্বের ১৩৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সিস্টারের সংখ্যাও সাড়ে ৪ হাজারের বেশি।

আলবেনিয়া যাত্রা

আলবেনিয়া যাত্রা

১৯২৮ সালে দেশ ছাড়ার পরে ১৯৯১ সালে প্রথমবার আলবেনিয়ায় যান মাদার। সেখানে তিরানা শহরে তিনি নিজের হাতে মিশনারিজ অব চ্যারিটির স্থাপনা করেন।

মাদারের ভাষা দক্ষতা

মাদারের ভাষা দক্ষতা

মোট পাঁচটি ভাষায় দক্ষ ছিলেন মাদার। তিনি সমান দক্ষতার সঙ্গে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, আলবেনিয়ান ও সার্বিয়ান ভাষায় বলতে পারতেন।

রোগগ্রস্ত মাদার

রোগগ্রস্ত মাদার

১৯৮৩ সালে রোম সফরের পোপ জন পল দ্বিতীয়র সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময়ে প্রথমবার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা শুরু হয় মাদারের। সেবছরই হৃদরোগের স্বীকার হন এবং হার্ট অ্যাটাক হয় মাদারের। তার ৬ বছর পরে ১৯৮৯ সালেও ফের একবার হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন তিনি। সেইসময়ে তাঁর পেসমেকারও বসাতে হয়।

মাদারকেই প্রধান হিসাবে রাখা

মাদারকেই প্রধান হিসাবে রাখা

১৯৯১ সালে মেক্সিকো সফরের সময়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন মাদার। ফের হার্টের সমস্যা শুরু হয়। তখন তিনি মিশনারিজ অব চ্যারিটির প্রধানের পদ থেকে সরে যেতে চেয়েছিলেন। তবে সকলে মিলে গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে ঠিক করেন, মাদারকেই এই পদে থাকতে হবে।

ফের হার্টের সমস্যা

ফের হার্টের সমস্যা

১৯৯৬ সালের এপ্রিলে পড়ে গিয়ে ঘাড়ের হাড় ভেঙে ফেলেন মাদার। সেইবছরের অগাস্টেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এবং আরও জোরালোভাবে চেপে বসে হার্টের সমস্যা। হার্টের সার্জারি করতে হয় তাঁর।

মাদারের প্রয়াণ

মাদারের প্রয়াণ

১৯৯৭ সালের ১৩ মার্চ মিশনারিজ অব চ্যারিটির প্রধানের পদ থেকে স্বেচ্ছ্বায় সরে দাঁড়ান মাদার। অসুস্থতা তাঁকে ততদিনে একেবারে গ্রাস করে ফেলেছিল। বেশ কিছুদিন রোগভোগের পরে মাদার দেহত্য়াগ করেন ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।

মাদারকে সম্মান

মাদারকে সম্মান

১৯৪৮ সালে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার পরে ১৯৬২ সালে পদ্মশ্রী এবং র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার সম্মান পান তিনি। ১৯৭৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান এবং ১৯৮০ সালে ভারত সরকার দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান 'ভারতরত্ন' সম্মানে ভূষিত করে।

মাদারকে বিটিফাই

মাদারকে বিটিফাই

মাদারের মৃত্যু হল ১৯৯৭ সালে। এরপরে ২০০২ সালে তাঁর প্রথম মিরাক্যালটি সামনে আসে। জানা যায়, ১৯৭৮ সালে অলৌকিকভাবে তিনি মনিকা বেসরা নামে এক তপশিলি মহিলার পেটের টিউমার সারিয়ে তোলেন। এরপরই ২০০৩ সালে মাদারকে বিটিফাই করে ভ্যাটিকান সিটি।

সেইন্টহুড দেওয়ার ঘোষণা

সেইন্টহুড দেওয়ার ঘোষণা

বিটিফিকেশন হল সেইন্টহুডের প্রথম পর্যায়। এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় অলৌকিক ক্রিয়াটি সামনে আসে। জানা যায়, ব্রাজিলের এক বাসিন্দার মস্তিষ্কে টিউমার হয়েছিল। মাদারের সাহায্যে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এটি জানার পরই ভ্যাটিকান সিটি মাদারকে সেইন্টহুড দেওয়ার ঘোষণা করে।

English summary
Saint Mother Teresa : Her life and work in Kolkata
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X