ট্রাম্প-হিলারির বিতর্কের পর উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীদের লড়াই নেহাতই তৃতীয়-স্থান নির্ধারক ম্যাচের মতো
গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কের হ্যাম্পস্টিডে এবছরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রথম বিতর্কসভায় রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ডেমোক্র্যাট প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে বিশেষ কিছু সুবিধা করতে পারেননি। ধনকুবের ওই ব্যবসায়ীর পারফর্ম্যান্স হতাশ হন তাঁর পার্টির সদস্যরাও।
এক সপ্তাহ পর অবশ্য সেই পার্টির মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটালেন মাইক পেন্স -- যিনি এবারের নির্বাচনে ট্রাম্পের সহযোদ্ধা; অর্থাৎ রিপাবলিকানদের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। ভার্জিনিয়া প্রদেশের ফার্মভিলের লংউড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেমোক্র্যাট প্রতিপক্ষ টিম কেইনকে গত মঙ্গলবার (অক্টোবর ৪) অনুষ্ঠিত হওয়া বিতর্কসভায় সামান্য কিছু শতাংশের তফাতে হারালেন তিনি। সিএনএন এবং ওআরসি দ্বারা আয়োজিত ইনস্ট্যান্ট পোল অনুযায়ী পেন্স পান ৪৮ শতাংশ দর্শকের সমর্থন। কেইনের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ৪২ শতাংশ।
এবছরের নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প এবং হিলারির তুমুল দ্বৈরথে পেন্স এবং কেইনের মতো দু'জন অখ্যাত রাজনীতিকের দিকে যে সেরকম নজর থাকবে না তা স্বাভাবিক। তবু তার মধ্যেও এদিনের বিতর্কসভায় পেন্স যেভাবে নজর কাড়েন তাতে 'ট্রাম্প'ময় যুগে রিপাবলিকান একটু হলেও ভরসা যোগায়। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দর্শকের মতে পেন্স তাঁদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন ওই বিতর্কে। কেইনের ক্ষেত্রে ৪৩ শতাংশের ধারণা যে তিনি তাঁর প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ।
পেন্স-কেইন বিতর্কের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন অবশ্যই ট্রাম্প এবং হিলারি। দুই উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীই নিজের নিজের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন। তবে, এব্যাপারে পেন্স বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি।
যেখানে ৫৮ শতাংশও দর্শক মনে করেছেন কেইন হিলারির রক্ষণ বেশি ভালো সামলেছেন, মাত্র ৩৫ শতাংশ মনে করেন যে পেন্স তা পেরেছেন ট্রাম্পের ক্ষেত্রে। রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ট্রাম্পের বিতর্কের যা বহর, তাতে পেন্স-এর আর কীই বা করার থাকতে পারে?
তবে মঙ্গলবারের বিতর্কের পর ট্রাম্পের ভাগ্য যে একেবারেই ফেরেনি, তা বলা চলে না। সিএনএন জানাচ্ছে, ট্রাম্প-ক্লিন্টন বিতর্কের পর যেখানে মাত্র ১৮ শতাংশ বলেন ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেবেন, পেন্স-কেইন বিতর্কের পর সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ শতাংশে।
অন্যদিকে, ক্লিন্টনের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ৩৪ থেকে কমে দাঁড়ায় ১৮ শতাংশে। তিপ্পান্ন শতাংশ মানুষ অবশ্য জানিয়েছেন যে তাঁদের সিদ্ধান্তে মঙ্গলবারের বিতর্ক কোনওই প্রভাব ফেলবে না।
যদি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিতে হয়, তাহলে কে বেশি এগিয়ে থাকবেন? পেন্স না ট্রাম্প? এব্যাপারে রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ৭৭ শতাংশ সমর্থন পেতে হারিয়ে দেন তাঁর ডেমোক্র্যাট প্রতিপক্ষকে (৭০ শতাংশ)।
তবে যতই যাই হোক, এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনই অনেক বেশি চিত্তাকর্ষক; উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীদের নিয়ে কারও বিশেষ আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না। আগামী ৮ই নভেম্বরের মহা সমরে ট্রাম্প না হিলারি -- কে শেষ হাসি হাসবেন, সেটাই এখন প্রধান আলোচনার বিষয়। পেন্স আর কেইনের লড়াই নেহাতই খেলায় তৃতীয় স্থান-নির্ধারক লড়াইয়ের মতো। ফাইনাল দেখার পর আর সে খেলা কেই বা দেখতে চাইবে?